মুর্শিদাবাদ জেলার সেরা ৫৫ টি দর্শনীয় স্থান। Mursidabad district best 50 tourist spots.

 ভ্রমণ পিপাসু :- ভ্রমণ পিপাসুর জেলা সিরিজে আজ থাকছে নবাবের জেলা হিসেবে পরিচিত ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ জেলা, আজ এই ব্লগে মুর্শিদাবাদ জেলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রায় সমস্ত অজানা এবং পরিচিত দর্শনীয় স্থান গুলো তুলে ধরবো। 




ঐতিহাসিক জেলা মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন। বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির ও জমিদারবাড়ি, মুর্শিদাবাদ জেলার প্রায় প্রতিটা ব্লকেই যদি আপনি যান তাহলে প্রায় প্রতিটা জায়গায় একটি করে জমিদারবাড়ি খুঁজে পাবেনই, এতো গুলো জমিদারবাড়ি কিন্তু খুব কম জেলায় দেখতে পাবেন, সেই সূত্রে মুর্শিদাবাদকে ল্যান্ড অফ জমিনদারস্ ও বলা যেতে পারে, যাই হোক এই পোস্টে আমি মুর্শিদাবাদ জেলার সেরা ৫৫ টি জায়গাকে তুলে ধরার চেষ্টা করবো, তার সাথে সাথে জায়গাটি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং জায়গাটিতে আপনি কেমন করে যাবেন সেব্যাপারে একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো, আসুন এক এক শুরু করা যাক।

মুর্শিদাবাদ/লালবাগ সার্কিট 

১. হাজারদুয়ারী প্যালেস :- মুর্শিদাবাদ জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রসিদ্ধ ট্যুরিস্ট স্পট হল এই হাজারদুয়ারী। সকলেরই কাছে খুবই পরিচিত এই জায়গাটিতে যাননি বা জায়গাটি সম্পর্কে জানেন না, এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই মুস্কিল।


এই হাজারদুয়ারী প্যালেসের ইতিহাস যদি ঘাটা যায় তাহলে দেখা যাবে এই প্যালেসটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নবাব হুমায়ুনজা। এটি তৈরি করতে প্রায় ৮ বছর (1829-1837) সময় লাগে। মোট খরচ হয় ১৭ লক্ষ টাকা। এখানে ১০০০ টা দরজার মধ্যে ৯০০টি আসল ও ১০০ টি নকল। বর্তমানে এটি একটি সুন্দর মিউজিয়াম যেখানে তৎকালীন বহু জিনিস যেমন নবাব এর ব্যবহার এর জিনিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছবি, আসবাবপত্র ও যুদ্ধের অস্ত্র রাখা আছে। প্রবেশমুল্য ২০ টাকা, ভেতরে মোবাইল বা ক্যামেরার একদমই অনুমতি নেই।

২. নিজমত ইমামবাড়া :- হাজার দুয়ারী প্যালেসের ঠিক সামনেই আছে ইমামবাড়াটি। অবশ্য এখানে প্রবেশের অধিকার নেই, আপনি চাইলে বাইরে থেকেই দেখে নিতে পারেন এই ৩০০ ফিট উচু এই ইমামবাড়াটিকে, আর এই দূরত্বের মধ্যেই আছে ঘড়ি বাড়ি ও কামান। একমাত্র মহরমের সময়ে এটিকে খুলে দেওয়া হয় তখন এখানে বিরাট এক মেলা ও বসে।


৩. জাফরগঞ্জ সিমেট্রি :- মীরজাফরের সময়ে তৈরি এই জাফরগঞ্জ সিমেট্রি যা ৩.৫১ একর এলাকা নিয়ে তৈরি। এই সিমেট্রি তে মীরজাফর থেকে নাজাফি বংশের সদস্যদের কবর আছে।


৪. আজিমুসান সমাধি :- আজিমুসান হলেন নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর মেয়ে এবং বাংলার দ্বিতীয় নবাব সুজাউদ্দিনের স্ত্রী। ১৭৩৪ খ্রিস্টাব্দে তাকে এখানে সমাধিস্থ করা হয়, এটিও মুর্শিদাবাদের প্রমুখ একটা দর্শনীয় স্থান।

৫. ফৌতি মসজিদ :- মুর্শিদাবাদের কাটরা মসজিদ থেকে কিছুটা পশ্চিমে এই জেলার আরো এক অসাধারন মসজিদ হল ফৌতি মসজিদ। নবাব সরফরাজ খান ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে এই মসজিদের নির্মান করান।


৬. মতিঝিল :- মুর্শিদাবাদ জেলার আরো একটি প্রসিদ্ধ দর্শনীয় স্থান হল মতিঝিল। যাকে কোম্পানির লেক হিসেবে ও ডাকা হয়। অশ্বক্ষুরাকৃতির এই লেকটি তৈরি করেন আলীর্বদী খাঁ এর জামাই নওয়াজিস মহম্মদ খাঁ। এটি একাধারে তার ও তার স্ত্রী ঘসটি বেগমের বাসস্থানও ছিল। বর্তমানে এখানে সুন্দর একটা পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।


 

৭. ওয়াসিফ মনজিল :- হাজারদুয়ারী দক্ষিণ গেটের একদম পাশে নবাব ওয়াসিফ আলী মির্জা দ্বারা এটির নির্মাণ করা হয়। একাধারে এটি ছিল তার বাসস্থান। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের ওয়াসিফ মনজিল এর যথেষ্ট ক্ষতি হয়, এবং পরবর্তীকালে এর সংস্কার ও করা হয়।


৮. খোসবাগ :- খোসবাগ হল আরো সমাধিস্থল এখানে সিরাজদ্দৌলা থেকে শুরু করে তার স্ত্রী, মা এবং আলীর্বদী খাঁ পরিবারে সমাধি আছে। জাফরগঞ্জে যেমন মীরজাফর থেকে শুরু করে নাজাফি বংশের সদস্যদের কবর আছে ঠিক তেমনি এই খোসবাগে আফসার বংশের সমস্ত সদস্যদের সমাধি আছে।


৯. কাঠগোলা বাগানবাড়ি :- মুর্শিদাবাদের সবথেকে জনপ্রিয় দ্রষ্টব্য হাজারদুয়ারি প্রাসাদ থেকে ৪ কিলোমিটার উত্তরে আছে কাঠগোলা বাগানবাড়ি। কাঠগোলা প্রাসাদ কাঠগোলা বাগানের চারতলা বিশিষ্ট একটি প্রাসাদ। এটি পেইন্টিং, আয়না এবং আসবাবপত্র সহ একটি অলঙ্কৃত সম্মুখভাগ রয়েছে। এর সামনে একটি পুকুর ও রয়েছে।


এই জায়গাটি কিনে বাগানবাড়ি তৈরি করিয়েছিলেন জিয়াগঞ্জের রাজা লক্ষ্মীপৎ সিং দুগর। লক্ষ্মীপৎ, জগপৎ, মহীপৎ এবং ধনপৎ - এই চার ভাই এখানে থাকতেন। এই বাগান বাড়ির জৈন মন্দিরটি কাঠগোলা বাগানবাড়ির অন্যতম প্রধান দ্রষ্টব্য।বাগানের ভিতর একটি সুড়ঙ্গপথ আছে, যা ভাগীরথীর সঙ্গে যুক্ত। শোনা যায় এই বাগানবাড়িতে এক গোপন সুরঙ্গপথ আছে, এই গোপন পথে জগৎশেঠদের বাড়ি যাওয়া যেত বলে শোনা যায়। 

১০. জগৎ শেঠের বাড়ি :- জগৎ শেঠ ছিলেন এক বাঙালি জৈন ব্যাংকিং পরিবার এবং এটি ছিল পরিবারের বড় ছেলের উপাধি। 

জগৎশেঠ’ একসময় বাংলার একটি মর্যাদাপূর্ণ পদবি ছিল। বিপুল ধন-সম্পদশালীরাই এ পদবি পেতেন। জগৎশেঠ কোনো ব্যক্তির নাম মনে হলেও আসলে এটি একটি পদবি। জগৎশেঠের পারিবারিক ইতিহাস অনেক আগের। জগৎশেঠ পরিবার ভারতবর্ষে অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত ও মর্যাদাসম্পন্ন এক পরিবার হিসেবে পরিচিত ছিল। আলীবর্দীর সময়ে মাহতাব চাঁদ নামের এক বিশেষ ক্ষমতাধর ব্যক্তি এই উপাধি লাভ করেন। ইতিহাসে তিনি জগৎশেঠ নামেই পরিচিত। এবং বাড়িটি জগৎ শেঠের বাড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। মানুষ করতো যে, জগৎশেঠদের মতো ধনী ভারতে দ্বিতীয়টি নেই। এই জনশ্রুতির কারণে বেশ কয়েকবার জগৎশেঠদের ধনভাণ্ডার লুট হয়।


১১. নমক হারাম দেওরি :- মুর্শিদাবাদের জাফরগঞ্জ সিমেট্রির ঠিক উল্টো দিকেই এই নমক হারাম দেওরি অবস্থিত। এটি মূলত নবাব মীরজাফরের বাসস্থান। মির্জাফর যখন নবাব সিরাজদ্দৌলার সেনাপতি ছিলেন তখন এই প্রাসাদে থাকতেন, সেই কারনেই এমন নামকরণ।


১২. নসিপুর রাজবাড়ি :- নসিপুর রাজবাড়ি দেবী সিং এর দরবার বা বাসস্থান ছিল। তিনি নবাবী আমলে ব্রিটিশদের কর আদায়কারী ছিলেন খুবই অত্যাচারী ছিলেন, তার অত্যাচারের কাহিনীর চিহ্ন এখনো এই রাজবাড়িতে দেখা যায়, বর্তমানে এটিকে একটি মিউজিয়ামে পরিণত করা দেওয়া হয়েছে।


১৩. নসিপুর আখড়া :- ১১৬৮ বঙ্গাব্দে স্বামী রামানুজের শিষ্য লছমন দাস ও মনসরাম দাস ধর্ম প্রচারের জন্য মুর্শিদাবাদে এসে নশিপুরে এক আখড়া স্থাপন করেন এবং পরবর্তীতে রথযাত্রার সূচনা করে। সেই প্রথা মেনে আজও আয়োজিত হচ্ছে প্রায় ২৫৩ বছরের প্রাচীন নশিপুর আখড়ার রথযাত্রা।

১৪. জাহানকোষা কামান :- জাহানকোষা হল  মুর্শিদাবাদের কাটরা মসজিদের দক্ষিণ-পূর্বে তোপখানায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক কামান। মধ্যযুগীয় বাংলার নবাবী আমলের যুদ্ধাস্ত্রের এটি একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। 'জাহান কোষা' শব্দের অর্থ হল 'পৃথিবীর ধ্বংসকারী'। কামানটির দৈর্ঘ্য ১৭ ফুট ৬ ইঞ্চি, পরিধি ৫ ফুট, ওজন ২১২ মণ; কামান বিস্ফোরণের জন্য ২৮ সের (১৭ কিলো) বারুদের প্রয়োজন হয়।


১৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে দিল্লির বাদশাহ শাহজাহানের রাজত্বকালে ইসলাম খাঁর সময়ে জাহাঙ্গীরনগরে দারোগা শের মহম্মদ ও হরবল্লভ দাস উভয়ের তত্ত্বাবধানে মিস্ত্রি জনার্দন কর্মকার জাহানকোষা কামানটি নির্মাণ করেন। নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ ঢাকা থেকে রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত করবার সময় ওই কামানটি এখানে নিয়ে আসেন। 

১৫. মদিনা মসজিদ:- মদিনা মসজিদ হল মুর্শিদাবাদের নিজামত দুর্গের প্রাঙ্গণের একটি মসজিদ। দুর্গের প্রাঙ্গণে দুটি মদীনা মসজিদ রয়েছে, পুরানোটি নবাব সিরাজ উদ-দৌলা ১৮ শতকে এবং নতুনটি নবাব মনসুর আলী খান ১৮৪৬ সালে নির্মাণ করেছিলেন। 

১৫. মুর্শিদকুলি খাঁর প্যালেস :- এই জায়গাটি সম্পর্কে অনেক পর্যটকই জানে না, বা জানলেও এখানে হাতে গুণা সামান্য পর্যটকই এখানে এসে থাকে, কিন্তু এই মুর্শিদাবাদ জেলা যার নামে, যিনি এই ঢাকা থেকে এই মুর্শিদাবাদকে বাংলার রাজধানীতে পরিণত করেছিলেন তার তৈরি প্যালেসে তো আপনাদের একবার তো যাওয়া উচিৎ। জায়গাটি আমি উল্লেখ করে দিচ্ছি মুর্শিদাবাদের লালবাগের শাহনগরে হাজারদুয়ারী মিউজিয়াম রোডে। 

১৬. বাচ্চাওয়ালী তোপ :- মুর্শিদাবাদের মদিনা মসজিদের পূর্বদিকে হাজারদুয়ারী এবং নিজামত্ ইমামবাড়ার মধ্যবর্তী স্থানে এই দুখন্ড এই কামানটি রাখা আছে।

শোনা যায় যে এই কামানটি মাত্র একবার নিক্ষেপ করা হয়েছিল এবং যখন এটি করা হয়েছিল তখন এটি প্রায় ১০ মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে একটি বিশাল বিস্ফোরক শব্দ তৈরি করেছিল। এই শব্দটি শহরের বেশিরভাগ গর্ভবতী মহিলাকে তাদের সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করেছিল। সেখান থেকেই এই কামানটির নাম বাচ্চাওয়ালি তোপে হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বাচ্চাওয়ালি মানে যিনি সন্তান জন্ম দেন আর তোপে মানে কামান। এইভাবে, বাচ্চাওয়ালি তোপে দুটি শব্দের সমষ্টি, যার মানে কামান যা শিশুর জন্ম দেয় ।


১৭. ক্লক টাওয়ার :- ব্রিটিশ আমলে কর্নেল ম্যাকলয়েড কর্তৃক নির্মিত এই ক্লক টাওয়ার মুর্শিদাবাদের বিগ ব্যান নামে পরিচিত। এর উচ্চতা এত বেশি যে নদীর ওপার থেকেও দৃশ্যমান এই টাওয়ার। 


১৮. কাটরা মসজিদ :- মুর্শিদাবাদ জেলার আরো জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান হল এই কাটরা মসজিদ। এটি ১৭২৩ এবং ১৭২৪ সালের মধ্যে নির্মিত হয়। এখানে নবাব মুর্শিদ কুলি খা এর সমাধি রয়েছে। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের বৃহত্তম কাফেলা কেন্দ্রের একটি। নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে বাংলার রাজধানী স্থানান্তরিত করলে তখন এই মসজিদটি নির্মিত হয়। এই মসজিদটির সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হল দুই কোনার উঁচু দুটি টাওয়ার, যেগুলোতে বন্দুক স্থাপনের জন্য ছিদ্র রয়েছে।



আজিমগঞ্জ সার্কিট :- মুর্শিদাবাদ জেলার ভাগীরথীর নদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত প্রাচীন শহর আজিমগঞ্জ। এই আজিমগঞ্জের বড়নগরে আছে বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির, এই মন্দিরগুলো বাংলাদেশের নাটোরের রানী ভবানীর প্রতিষ্ঠিত। তিনি আজিমগঞ্জের এই বড়নগরকে দ্বিতীয় বারানসী হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন সেই কারণে এখানে অনেকগুলো মন্দির গড়ে তুলেছিলেন, কিন্তু ভাগীরথীর জলে তলিয়ে গিয়েছে বেশিরভাগ মন্দির, এখানে তার একটি জমিদারবাড়ি ও আছে এখন প্রায় কয়েকটি মন্দির এখনো টিকে আছে সেই মন্দির গুলোই এক এক তুলে ধরছি এই পয়েন্টে।

১. চারবাংলা মন্দির :- আজিমগঞ্জের বড়নগরে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মন্দির হল এই চারবাংলা মন্দির, নাটোরের রানী ভবানীর উদ্যোগে এই মন্দিরের নির্মাণ হয়। ভাগীরথী নদীর একদম ধারে অবস্থিত এই মন্দির চারটি মন্দিরের সমষ্টি সেই কারণেই এর নাম চারবাংলা। মন্দিরগুলো মুলত শিবমন্দির, মন্দিরের গায়ে সূক্ষ্য টেরাকোটার কারুকাজ লক্ষ্য করা যায়।


২. ভবানীশ্বর মন্দির :- রানী ভবানীর নামে নামাঙ্কিত ও একটি শিব মন্দির। চার বাংলা মন্দির থেকে সামান্য দূরেই এই মন্দিরটি অবস্থিত মন্দিরে আটটি তোরন আছে যেটা দিয়ে আপনি মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন। 


৩. রাজ রাজেশ্বরী মন্দির :- ভবানীশ্বর মন্দিরের কিছু দূরে উল্টো দিকেই আছে রাজ রাজেশ্বরী মন্দির। 1757 সালে পলাশীর যুদ্ধের কিছুদিন আগেই এই মন্দিরটি তৈরী করা হয়েছিলো রানী ভবানী দ্বারা। এই মন্দিরের ভেতরে আছে ৩০০ বছরের নিম কাঠের তৈরি মদনমোহনের মন্দির এছাড়াও আরো বিগ্রহ বিদ্যমান।


৪. জোড়া শিব মন্দির :- রাজ রাজেশ্বরী মন্দিরের ঠিক পাশেই আছে এই জোড়া শিবমন্দির দুটি, কিন্তু মন্দির দুটোর অবস্থা খুবই সঙ্গিন। 


৫. গঙ্গেশ্বর মন্দির :- জোড়া শিব দেখে সামনে আরো কিছু দূর গেলেই আরো একটি মন্দির দেখতে পাবেন যেটি গঙ্গেশ্বর মন্দির হিসেবে পরিচিত কিন্তু কেউ কেউ একে জোড় বাংলা মন্দির হিসেবেও চেনে কারণ এই মন্দিরটি বাংলার জোড় বাংলা স্টাইলে নির্মিত। এই মন্দিরের গায়েও টেরাকোটার নিখুঁত কাজ দেখা যায়। 


৫. রানী ভবানীর রাজবাড়ি :-


রানী ভবানী তার জীবনের অনেকটা সময় এই বড়নগরে কাটিয়েছিলেন সেই কারণে এখানেও তিনি একটি রাজবাড়ি নির্মাণ করেছিলেন যেখানে এখনো রানী ভবানীর বংশেধরেরা বসবাস করছে।

৬. পঞ্চমুখী শিবমন্দির :- আজিমগঞ্জের বড়নগরের আরো একটি শিবমন্দির হল পঞ্চমুখী শিবমন্দির, যেটি বড়নগরের একদম গঙ্গার ধারে অবস্থিত। সুপ্রাচীন এই মন্দিরের মহাদেবের পঞ্চমুখী শিবলিঙ্গ বিরাজমান। মন্দিরটি দো-চালা বিশিষ্ট এবং মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজ লক্ষ্য করা যায়



৭ .পার্শ্বনাথ মন্দির :- আজিমগঞ্জের আরো একটি দারুণ মন্দির আছে যা আপনারা চাইলে দেখে আসতে পারেন। সেটি হল পার্শ্বনাথ মন্দির বা রামবাগ তীর্থ, আজিমগঞ্জের নেতাজি মোড় থেকে কিছুটা দূরেই অবস্থিত, নতুন মন্দিরের নির্মাণ কাজ চলছে বাইরের শিল্পীদের দ্বারা কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো Complete হয়ে যাবে।


৮.বড়ি কোঠি :- গোটা আজিমগঞ্জ শহর জুড়েই প্রচুর পুরোনো বাড়ি দেখতে পাবেন সেরকমই একটি পুরনো জমিদারবাড়ি হল বড়ি কোঠি যা এখন সংস্কার করে বিলাসবহুল হোটেলে রূপান্তরিত করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বিলাসবহুল হোটেল বলতে পারেন এই বড়ি কোঠিকে। ভেতরে ঢুকতে পারবেন একমাত্র বুকিং থাকলেই, ভেতরটা ভীষন সুন্দর আপনি চাইলে উনাদের ওয়েবসাইট গিয়ে বুকিং করে নিতে পারেন।


৯. হীরাঝিল প্রাসাদ :- নবাব সিরাজদ্দৌলার প্রাসাদ যা ভাগীরথী নদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত ছিল, কিন্তু তার বেশিরভাগটাই নদীর জলে তলিয়ে গেছে কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে যা এখন জঙ্গল ঝোপঝাড়ে ঢাকা ছিল, এখানে দেখার মত এখন তেমন কিছুই পাবেন না, কিন্তু বর্তমানে জঙ্গল কেটে জায়গাটিকে অনেকটা পরিষ্কার করা হয়েছে যাতে গিয়ে দেখতে আসতে পারেন। আজিমগঞ্জ থেকে টোটো রিজার্ভ করে এখানে চলে আসতে পারেন ।


১০. ডাহাপাড়া ধাম :- মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জ থেকে কিছুটা দূরে ভাগীরথী নদীর পশ্চিম পাড়ে ডাহাপাড়া ধাম বা ডাহাপাড়া আশ্রম অবস্থিত যা জগৎ বন্ধু ধাম নামেও পরিচিত। প্রভু জগৎ বন্ধু এই আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা। প্রভু জগৎ বন্ধু শিষ্যদের যাদের মহানাম সম্প্রদায় বলে তাদের দ্বারা এই আশ্রম এখন রক্ষণাবেক্ষণ হয়, আশ্রমে আসলে দেখতে পাবেন কতটা বড় ও কতটা দারুণ এই আশ্রম। ট্রেনে আসলে কাটোয়ার - আজিমগঞ্জ লাইনের ডাহাপাড়া ধাম স্টেশনে নেমে এখানে চলে আসতে পারবেন ।

 


১১. কিরিটেশ্বরী মন্দির :- মুর্শিদাবাদ জেলার একমাত্র সতীপিঠ প্রায় ১০০০ বছরের পুরোনো কিরিটেশ্বরী মন্দির। প্রকৃত মন্দিরটি ১৪০৫ সালে ধংস করা হয়েছিলো, তারপর ঊনবিংশ শতকে আবার লালগোলার রাজা দর্পনারায়ণের দ্বারা পুর্ননির্মান করা হয়। এই মন্দিরটি অবস্থিত মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম ব্লকের অন্তর্গত পাঁচগ্রাম-নবগ্রাম-লালগোলা সড়কের ধারে কিরিটকোনা গ্রামে। এই মন্দিরের দেবীর মুকুট পতিত হয়েছিলো। এই মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন মা বিমলা।


এখানে আসার জন্য আপনাকে বহরমপুরে আসতে হবে। তাছাড়া আপনি অন্য জায়গা থেকেও আসতে পারেন ।বহরমপুর শহর থেকে এর মন্দিরের দূরত্ব মাত্র ১৮ কি.মি। বহরমপুরের খাগরাঘাট রোড স্টেশন থেকে কাটোয়া -আজিমগঞ্জ লাইনের ট্রেন ধরে ডাহাপাড়া ধাম স্টেশনে, এখান থেকে এই মন্দিরের দুরত্ব মাত্র ৩ কি.মি। আপনারা কলকাতা থেকে আসতে চাইলে হাওড়া - কাটোয়া লোকাল ধরে কাটোয়া স্টেশন, তারপর কাটোয়া-আজিমগঞ্জ লোকাল ধরে ডাহাপাড়া ধাম স্টেশন, তারপর টোটো ধরে এই মন্দিরে।

১২. কিরিটেশ্বরী গুপ্ত মন্দির :- কিরিটেশ্বরী মন্দির থেকে পায়ে হেঁটে কিছুটা দূরে অবস্থিত কিরিটেশ্বরী গুপ্ত মন্দির। অনেকে বলে থাকেন এটিই মূল কিরিটেশ্বরী মন্দির। কিরিটেশ্বরী মন্দিরের মূল বিগ্রহটিকে সারাবছর এই মন্দিরেই রাখা হয়, কেবলমাত্র বাৎসরিক পুজোর সময়ে এই মন্দিরে নিয়ে আসা হয় তখন সবাই দর্শন করতে পারেন।

জিয়াগঞ্জ :- মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জ শহরের জমজ শহর বলতে পারেন এই জিয়াগঞ্জকে। গঙ্গা বা ভাগীরথীর নদীর দুসাইডে শহরদুটি অবস্থিত, যা জিয়াগঞ্জ- আজিমগঞ্জ পুরসভার অন্তর্ভুক্ত। এই জিয়াগঞ্জে খুব একটা দর্শনীয় স্থান নেই তবে যে কটা আছে সেগুলো তুলে ধরছি...

১ রায়বাহাদুর জমিদার বাড়ি :- জিয়াগঞ্জের হাটের মাঠের পাশে অবস্থিত রায়বাহাদুর জমিদার বাড়ি। জমিদার সুরেন্দ্রলাল সিংহের বাড়ি, তিনিই এই বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে এর সংস্কার ও করা হয়েছে।


২.মুর্শিদাবাদ জেলা সংগ্রহালয় :- ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ জেলার জেলা সংগ্রহালয় টি এই জিয়াগঞ্জেই অবস্থিত, অবশ্যই জিয়াগঞ্জে আসলে এই সংগ্রহালয়টি ভিজিট করে যাবেন।


৩. দাদাস্থান মন্দির :- ২৫০ বছরের পুরনো এই দাদাস্থান মন্দির আদতে একটি জৈন মন্দির। অনেকটা বিরাট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই মন্দির, দেখতেও দারুণ।


৪. এছাড়াও এখানে আসলে দেখে নিতে পারেন জিয়াগঞ্জ সদর ঘাট, আর একটা জায়গা সেটা হলো অরিজিৎ সিং এর বাড়ি।

ফারাক্কা ট্যুর :- মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা এক চিরপরিচিত নাম যা বিখ্যাত ফারাক্কা ব্যারেজের জন্য। ফারাক্কাতে ফারাক্কা ব্যারেজ ছাড়াও দেখার মত আরো কিছুই আছে এই পয়েন্টে সেটাই এক এক তুলে ধরবো -

১. ফারাক্কা ব্যারেজ :- ফারাক্কা ব্যারেজ গঙ্গা নদীর উপর অবস্থিত একটি ব্যারেজ, এই ব্যারেজ উত্তর বঙ্গের সাথে দক্ষিনবঙ্গের যোগাযোগ রক্ষাকারী। ১৯৬১ সালে এই বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ১৯৭৫ সালে। সেই বছর ২১ এপ্রিল থেকে বাঁধ চালু হয়। ফারাক্কা বাঁধ ২,২৪০ মিটার (৭,৩৫০ ফু) লম্বা যেটা প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে সোভিয়েত রাশিয়ার সহায়তায় বানানো হয়েছিল। কলকাতা বন্দর সহ হুগলি নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি করা ছিল এই প্রকল্পের লক্ষ্য।


২. ফারাক্কার গঙ্গার চর :- ফারাক্কার এই জায়গাটি সম্পর্কে আমরা অনেকেই প্রায় জানি না। কিন্তু এই জায়গাটি ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে কয়েক কি.মি দূরে একদম মাঝ গঙ্গায় অবস্থিত, আমি গত বছর এই জায়গাটি থেকে ঘুরে আসছি, এখানে যাওয়ার জন্য ফারাক্কার অপরদিকে মালদার ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করে এখানে পৌঁছতে হবে, এটা নিয়ে আমার একটা ভিডিও আছে দেখে নিতে পারেন।




৩. ফারাক্কা ফিডার ক্যানেল :- গঙ্গা নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি ও কলকাতা বন্দর কে রক্ষা করার জন্য এই ফারাক্কা প্রজেক্টের ভিতরে একটি ফিডার ক্যানেল নির্মিত হয় যার মাধ্যমে গঙ্গার নদীর জল এই ক্যানেলের মাধ্যমে সোজা চলে যাচ্ছে ভাগীরথী ও হুগলি নদীতে। ফারাক্কাতে আসলে এই জায়গাটি দেখতে মিস করবেন না।


৪. গাঁধী ঘাট :- ফারাক্কার আরো একটি সুন্দর জায়গা হলো ফারাক্কার গান্ধী ঘাট। সবুজে মোড়া অনেক গাছপালা, আর বসার জায়গা মিলিয়ে এক দারুণ জায়গা।


৫. ফারাক্কা বড় কালি :- ফারাক্কা NTPC মোড়ের একদম কাছে জাতীয় সড়কের ধারে ফারাক্কা বড় কালি মন্দিরটি অবস্থিত, এখন বর্তমানে কালি মায়ের যে বৃহৎ মূর্তিটি দেখতে পাবেন সেটা কিন্তু পাথরের তৈরি, পূর্বে মাটির মূর্তি গড়ে পূজা হতো, এখন পাথরের মূর্তিতে পূজা হয় কালি পুজোর সময়ে।

৬. ইলিশ প্রজনন কেন্দ্র :- ফারাক্কায় বেড়াতে আসলে একটা জিনিস অবশ্যই দেখতে ভুলবেন না, সেটা হলো ইলিশ প্রজনন কেন্দ্র, যেখানে গঙ্গা নদীতে ইলিশ মাছের বৃদ্ধির জন্য এই কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে, যেটা একেবারে গাঁধী ঘাটের ঠিক পাশেই অবস্থিত।


মুর্শিদাবাদের জমিদারবাড়ি :- 

১. ধুলিয়ান জমিদারবাড়ি :- মুর্শিদাবাদের জমিদারবাড়ি নিয়ে আলোচনাটা শুরু করা যাক একদম মুর্শিদাবাদের উত্তর থেকে। মুর্শিদাবাদের উত্তরে অবস্থিত ধুলিয়ান যা শামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত, একদম গঙ্গা নদীর তীরবর্তী একটি শহর, নদীর ওপর দিকেই আছে মালদা।ধুলিয়ানের পর থেকেই গঙ্গা নদী দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে একটি পদ্মা নামে বাংলাদেশে গিয়েছে অপরটি ভাগীরথী নামে আমাদের রাজ্যের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই গঙ্গাঘাটের ঠিক কিছুটা দূরেই কাঞ্চনতলা এলাকায় এই জমিদারবাড়ি গড়ে তোলা হয়েছিলো। প্রাচীনকালে এখানে অনেক কাঞ্চন গাছের অধিক্য থাকায় এই জায়গাটির নাম কাঞ্চনতলা হয়ে যায়।প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরোনো এই জমিদারবাড়ি এখনো তার অতীত ঐতিহ্য ও যৌবন ধরে রেখেছে ধুলিয়ান জমিদারবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জমিদার জগৎবন্ধু রায়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জের মানুষ।


২. নিমতিতা জমিদারবাড়ি :- ধুলিয়ান থেকে কিছুটা দক্ষিণে গেলেই পড়বে নিমতিতা গ্রাম, যা মুর্শিদাবাদের সুতি থানার অন্তর্গত। এই নিমতিতাতেই একদম পদ্মা নদীর ধারে গড়ে হয়েছিলো প্রাচীন নিমতিতা জমিদারবাড়ি। যে জমিদারবাড়িতে শুটিং হয়েছিলো সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত সিনেমা "জলসাঘর" তার সাথে সাথে এখানে "দেবী" এবং "তিনকন্যা"সিনেমার ও শুটিং হয়েছিলো। কিন্তু সকলে জলসাঘর সিনেমার কথাটিই জানে, কিন্তু এছাড়াও আরো দুটি সিনেমার শুটিং হয়েছিলো, সেই উদ্দেশ্যে সত্যজিৎ রায় এই বাড়িতে বহুবার ভিজিট করেছিলেন, একবার নজরুল ইসলাম ও এসেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এই জমিদারবাড়ি অবস্থা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সরকারি উদ্যোগের অভাব এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অনীহা এবং অবহেলায় এখন এই জমিদারবাড়ি ধংসের অপেক্ষায় দিন গুণছে।


৩. লালগোলা রাজবাড়ি :- মুর্শিদাবাদের পদ্মা নদীর বাংলাদেশ বর্ডার সংলগ্ন একটি গ্রাম লালগোলা। নদীর অপরদিকেই আছে বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা। লালগোলা শিয়ালদহ লাইনের লাস্ট স্টেশন। তাই এখানে আসার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্ত সুবিধা আছে। এই লালগোলাতেই গড়ে তোলা হয়েছিলো একটি রাজবাড়ি। অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এই রাজবাড়ি বা জমিদারবাড়ির সূচনা করেন দলেল রায় ও রাজনাথ রায় নামে দুই ভাই, এদের নীল এবং রেশমের ব্যাবসা ছিল, পরবর্তীতে তারা জমিদারি লাভ করে এবং এই জমিদারির সূচনা করে। এই রাজবাড়ি বর্তমানে একটি মুক্ত সংশোধোনাগারে পরিণত করা হয়েছে। এটাই আমাদের রাজ্যের প্রথম মুক্ত সংশোধোনাগার। 


৪. কান্দি রাজবাড়ি :- মুর্শিদাবাদ জেলাকে দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে ভাগীরথী নদী। এই ভাগীরথী নদীর পশ্চিমপার রাড়বঙ্গের অংশ। মুর্শিদাবাদ জেলার এই অংশের ভূপ্রকৃতি ও আবহাওয়া খুবই শুষ্ক যা পূর্ব পারের থেকে একদমই আলাদা। এই অংশের মধ্যে পড়ছে কান্দি মহকুমা, যার কেন্দ্রবিন্দু কানা ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে অবস্থিত কান্দি শহর। এই কান্দি শহরেই অবস্থিত প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো কান্দি রাজবাড়ি । এই রাজ পরিবার বাংলার মহাজাগরন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলো তার সাথে এই রাজ পরিবার থেকে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিরা বেরিয়েছিলেন যাদের আমরা চিনি। এই জমিদার বাড়িতে এখনো জমিদারবাড়ির বংশধরেরা বসবাস করছে, এখানে ছবি তোলা এবং ভিডিওগ্রাফি করার অনুমতি আছে চাইলে একদিনের জন্য এই কান্দি থেকে এসে ঘুরে যেতে পারেন, কান্দি রাজবাড়ি ছাড়াও কিছু সুন্দর সুন্দর অসাধারন মন্দির ও সাথে সাথে দর্শন করে নিতে পারবেন।


৫. পাঁচথুপি :- মুর্শিদাবাদ মানে শুধু নবাবি বা ব্রিটিশ ইতিহাস না। মুর্শিদাবাদের সাথে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন রাজা, জমিদার, জমিদারবাড়ির অজানা ইতিহাস। মুর্শিদাবাদের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এরকমই কিছু অজানা কাহিনী। সেরকমই একটি জায়গা হলো মুর্শিদাবাদের বড়য়াঁ ব্লকের অন্তর্গত একটি সমৃদ্ধ জনপদ পাঁচথুপি। এই পাঁচথুপি নামের পেছনেও আছে আরো একটি ইতিহাস। পাল আমলে এখানেই পাঁচটি বৌদ্ধ স্তূপের অস্তিত্ব ছিল, সেই থেকেই এই গ্রামে নাম পঞ্চথুপি এবং বর্তমানে পাঁচথুপি এসেছে। এখানে আছে একটি জমিদারবাড়ি যার আবার তিনটি ভাগ, বড়, মধ্যম, নতরফ এবং কিছু মন্দির। এই পাঁচথুপি নিয়ে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি গল্প আছে যার নাম" সপ্তর্ষি আর হারানো বিকেল"। সানডে সাসপেনসে ও এই গল্পটি আপনারা পেয়ে যাবেন।

৬. বেলডাঙার মোল্লা বাড়ি :- মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থানার অন্তর্গত মির্জাপুর গ্রাম। এই গ্রামেই অবস্থিত মোল্ল জমিদারবাড়ি। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কেরামত মোল্লার বড় ছেলে শাহজাদ মোল্লা। কেরামত মোল্লার তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলেই সবচেয়ে বেশি সাহসী ও পারদর্শী ছিলেন। তারা কিন্তু বেলডাঙার আদি বসবাস কারি ছিলেন না। 

ব্রিটিশ আমল থেকেই শাহজাদ মোল্লার উত্থান শুরু হয়। তার প্রধান ব্যবসা ছিল রেশমের। এর রেশমের ব্যাবসা করে তিনি যথেষ্ট ধনশালী হয়ে ওঠেন এবং জমিদারির পত্তন করেন। এই মির্জাপুর গ্রামেই তিনি এক বিশাল জমিদারবাড়ি গড়ে তোলেন, যার বর্তমান অবস্থা খুবই ভগ্নপ্রায়। পরিবারের সদস্যরাও অনেকে এখন এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। জমিদার শাহজাদ মোল্লা খুবই দানশীল ও প্রজা বাৎসল ব্যক্তি ছিলেন। আপদে বিপদে তিনি সবসময় প্রজাদের সহায়তায় এগিয়ে আসতেন। এই পরিবারের জমিতেই গড়ে ওঠে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, তার মধ্যে প্রাইমারী স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, মাদ্রাসা, মসজিদ প্রভৃতি, এরকম বহু জায়গা বর্তমানে দখল ও হয়ে গেছে।

৭. সোনারুন্দি জমিদারবাড়ি :- মুর্শিদাবাদের আজানা অচেনা জমিদারবাড়ি খোঁজে এবার আমরা যাবো জেলার সর্ব দক্ষিণে সোনারুন্দি গ্রামে আরো একটি জমিদারবাড়ির খোঁজে। এই জমিদারবাড়িকে সোনারুন্দি বনওয়ারীবাদী হয়ে থাকে। বনওয়ারী কথাটি এসেছে তাদের কুলদেবতা থেকে। এই জমিদারবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জমিদার নিত্যানন্দ দালাল। নিত্যানন্দ দালানের বাবার নাম ছিল জগমোহন দালাল।


জমিদার নিত্যানন্দ দালাল আরবী ফার্সি ভাষায় খুবই পারদর্শী ছিলেন সেই জন্য দিল্লির সুলতান দ্বিতীয় শাহ আলমের খুবই প্রিয় পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। এবং দিল্লির দরবারে উচ্চপদও পেয়েছিলেন। কালক্রমে মারাঠা আক্রমনের জন্য শাহ আলম কিছুদিন কাটোয়াতে অবস্থান করছিলেন। সেই সময় এই এলাকা বর্ধমানের রাজার অধিকারে ছিল, শাহ আলম বর্ধমানের রাজার সাথে কথা বলে এই জমিদারি নিত্যানন্দ দালাল কেদেন এই ভাবেই সোনারুন্দি বনওয়ারীবাদী জমিদারবাড়ির পত্তন হয়। অনেকটা এলাকা নিয়ে এই জমিদারবাড়ি। ভিতরে রাধা কৃষ্ণের মন্দিরও আছে। পাশেই একটি স্কুলে আছে বনওয়ারী নামে। যা রাজ পরিবারের জমিতেই তৈরি করা হয়েছে। জমিদার বাড়ির গেট থেকে শুরু অনেকটার অবস্থাই বর্তমানে ভঙ্গুর।

৮. কাশিমবাজার বড় রাজবাড়ি :- মুর্শিদাবাদ গোটা বাংলা, বিহার ওড়িশার রাজধানী হওয়ার আগে থেকেই কাশিমবাজার ছিল বড়ো ব্যবসায়িক কেন্দ্র। বাব্যসা বানিজ্যের জন্য বিভিন্ন বনিক নাবিকরা এই কাশিমবাজারে আসতো, তাই প্রাচীনকাল থেকেই এই কাশিমবাজার একটি সমৃদ্ধ এলাকা ছিল। পরবর্তীতে বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত হলে এই কাশিমবাজারের গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পায়। এই কাশিমবাজারের শ্রীপুর এলাকায় কৃষ্ণকান্ত নন্দী ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে একটি রাজবাড়ি নির্মাণ করেন যাকে স্থানীয়রা কাশিমবাজার বড় রাজবাড়ি বা শ্রীপুর রাজবাড়ি হিসাবেও ডেকে থাকে। কাশিমবাজার নামের উৎপত্তির পেছনে বিভিন্ন মতামত আছে, তবে সংখ্যা গরিষ্ঠের মত অনুযায়ী তখনকার সুবা বাংলার প্রধান কাশিম খাঁ থেকেই এই নামটি এসেছে, তিনি সম্রাট শাহজাহানের নির্দেশে পর্তুগীজ দলদস্যুদের দমন করেছিলেন।


কৃষ্ণকান্ত নন্দী ইতিহাসে কান্তমুদি নামেও পরিচিত ছিলেন, কৃষ্ণকান্ত নন্দীর পিতার একটি মুদির দোকান ছিলো একদম ব্রিটিশ কুঠির সামনে। নবাব সিরাজ যখন কাশিমবাজারের ইংরেজ কুঠি আক্রমণ করেছিলো তখন এই কৃষ্ণকান্ত নন্দী হেস্টিংস আশ্রয় দিয়েছিলো এবং এবং তাকে কলকাতা পালিয়ে যেতে সাহায্যও করেছিলো। পরিবর্তীতে হেস্টিংস যখন বাংলার গভর্নর হোন তখন হেস্টিংস কথা মত দিল্লির সম্রাট কান্তবাবুর পুত্র লোকনাথ রায় বাহাদুরকে জমিদারির বন্দোবস্ত দেন এভাবেই এই জমিদারির সূত্রপাত হয়।

৯. কাশিমবাজার ছোটো রাজবাড়ি :- কাশিমবাজার বড় রাজবাড়ির পাশেই আছে আরো একটি রাজবাড়ি যাকে স্থানীয়রা কাশিমবাজার ছোটো রাজবাড়ি হিসেবে অভিহিত করে থাকে। আলিবর্দি খার আমলে এই রাজবাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন দীনবন্ধু রায় ১৭৩৫ খ্রিস্টাব্দে। তাদের প্রকৃত উপাধি ছিল চট্টোপাধ্যায় কিন্তু এই রায় উপাধি টা তাদের পাওনা। দীনবন্ধু রায়ের পর কমলা রঞ্জন রায় এবং তার ছেলে প্রশান্ত রায় বর্তমানে জীবিত আছেন। 


এই রাজবাড়িটি বর্তমানে খুবই ভালো অবস্থায় আছে সেটা আপনার দেখলেই বুঝতে পারবেন, তার কারণ ই হলো এই বাড়িটিকে বর্তমানে একটি হেরিটেজ হোটেলে রূপান্তরিত করে দেওয়া হয়েছে। তাই একমাত্র বুকিং থাকলেই আপনি ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন তাছাড়া কোনো পারমিশন নেই। আপনি অনলাইন সাইটে গুলো থেকে এখানে বুকিং করতে পারবেন। এখানে আসার ব্যাপারটা আমি আগের পয়েন্টেই বলেছি দেখে নেবেন।


১০. সালারের চৌধুরী জমিদারবাড়ি :- মুর্শিদাবাদের দক্ষিণে কান্দি মহকুমার অন্তর্গত সালার। এই সালার নামটি এসেছে আরবি বা ফার্সি শব্দ থেকে। সালার শব্দের অর্থ সেনাপতি বা প্রধান। এই সালারেই আছে প্রভাবশালী চৌধুরী পরিবার ও তাদের একটি পুরনো জমিদারবাড়ি। এই চৌধুরী বাড়ির একজন বংশধর এখনো জীবিত আছে যিনি এখনো এই বাড়িতেই বসবাস করছেন।

এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এনায়েতুল্লা। এই এলাকা পূর্বে রানী ভবানীর অধিকারের ছিল রানী ভাবানীই এই এলাকা এনায়েতুল্লার হাতে দিয়েছিলেন, যার ফলেই এই জমিদারির যাত্রাপথ শুরু হয়। এনায়েতুল্লার সাথে ব্রিটিশদের বিরোধও যার জন্য ব্রিটিশরা এনায়েতুল্লা কে কামানের সামনে বেঁধে তাকে হত্যা করেন।

১১. তালিবপুর জমিদারবাড়ি :- এখন যে জমিদারবাড়ি টির কথা এখন আপনাদের বলবো সেটা সমন্ধে হয়তো অনেকেই জানেন না, হ্যাঁ ছোট্ট একটি গ্রাম তালিবপুর সেই গ্রামেই আছে বিরাট এক জমিদারবাড়ি, যা মুর্শিদাবাদের সালারের খুব কাছেই অবস্থিত। ষোড়শ শতকে মৌলানা ফুসি মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর প্রতিনিধি হিসেবে এই গ্রামে বসবাস শুরু করেন তার হাত দিয়েই এই জমিদারির সূত্রপাত হয় তারপর তার ছেলে দীন মহম্মদ এবং তার ছেলে পীর মহম্মদ এই বংশের নামকে আরো এগিয়ে নিয়ে যান তারা বিভিন্ন জনহিতকর কাজের সাথেও যুক্ত ছিলেন।

১২. ভগীরথপুর জমিদারবাড়ি :- শোনা যায় মুঘল আমলে বানিজ্যিক সূত্রে ভগীরথ শাহু নামক বণিক ওই স্থানে আসেন, এবং মনোরম পরিবেশ তাকে আকর্ষিত করে। ফলে তিনি সেখানেই থেকে যান। যার জন্য এই গ্রামের নাম হয় ভগীরথ পুর । তথ্য সূত্র অনুসারে ১১৬৮বঙ্গাব্দের ১৭ ই ফাল্গুন বাড়ি নির্মাণ শেষ হয় । জমিদারবাড়িটি এখনো এখানে আছে কিন্তু বর্তমানে জমিদার বংশের কেউ নেই। শোনা যায় তারা নাকি সবাই এই স্থান ছেড়ে চলে গেছেন।

১৩. জজান জমিদারবাড়ি :- গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর বাংলায় সেইসময় আদিশূরের রাজত্ব চলছিলো, সেই আদিশূরের রাজসভার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন সোম ঘোষ। তিনিই তার রাজধানী হিসেবে জজান কে বেছে নেন এইভাবেই জজানের উত্থান ঘটে। প্রাচীনকালে এই জজান একটি সমৃদ্ধ নগরী ছিল। যা মুর্শিদাবাদের কান্দি শহর থেকে মাত্র ৭ কিমি দূরে অবস্থিত।

১৪. ভাবতা জমিদারবাড়ি :- মুর্শিদাবাদের জেলা সদর বহরমপুর থেকে প্রায় ১৫ কি.মি দূরে বেলডাঙা ব্লকে অন্তর্গত এই ভাবতা গ্রাম। এই ভাবতা গ্রামেই আছে ভাবতা জমিদারবাড়ি। এই জমিদারবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন হাজী আব্দুল আজিজ।


হাজী আব্দুল আজিজ মুর্শিদাবাদের একজন স্বনামধন্য ব্যাবসায়ী ছিলেন তার সাথে সাথে তিনি বহু জনহিতকর কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি তার পরিবার রেশমের ব্যবসার সাথে যুক্ত ছিলেন, ব্যবসা থেকে অনেক অর্থ উপার্জনের পর তিনি এই জমিদার শুরু করেন। এই ভাবতা গ্রামে আসলে এই জমিদারবাড়ি এখনো দেখতে পাবেন।

১৫. কুঞ্জুঘাটা জমিদারবাড়ি :- বহরমপুর শহরের একদম উত্তরপ্রান্তে কুঞ্জুঘাটাতে ভাগীরথী নদীর তীরে মহারাজা নন্দকুমারের এক সুবিশাল রাজবাড়ি ছিলো। কালের কড়াল গ্রাসে যার অল্প কিছুই এখন অবশিষ্ট আছে। এটি কুঞ্জুঘাটা রাজবাড়ি নামেই খ্যাত। 

মহারাজা নন্দকুমারের আদি বাসস্থান বীরভূম জেলাতে, মির্জাফরের সময়ে তিনি তার দেওয়ান পদে নিযুক্ত হন। পরিবর্তীতে তিনি রাজা উপাধিও লাভ করেন। সেইজন্য মুর্শিদাবাদে ভাগীরথীর পাশে তিনি এই রাজবাড়ি নির্মাণ করেন ।এখানে আসতে চাইলে কুঞ্জুঘাটা ঘাটের কাছে এসে যে কাউকে বললেই দেখিয়ে দেবে।


Miseleneous places... 


১. গোবরহাটির বৃন্দাবন মন্দির :- কর্ণসুবর্ণ থেকে গোকর্ন যাগোবরহাটিরওয়ার পথেই পড়বে প্রাচীন গোবরহাটি গ্রাম, এই গ্রামে অনেকে গুলো মন্দির থাকলেও সবচেয়ে প্রসিদ্ধ o প্রাচীন মন্দির হল বৃন্দাবন মন্দির।

মন্দিরটি প্রায় ৩২৮ বছরের পুরনো। মন্দিরটি পঞ্চরত্ন শৈলীতে নির্মিত এবং টেরাকোটার কাজ সজ্জিত। এটি পঞ্চরত্ন মন্দির। কেঁদুলির জয়দেব মন্দিরের সঙ্গে এই মন্দিরের যেন চেহারার মিল আছে।


২. ভট্টবাটির প্রাচীন মন্দির :- মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুর থেকে কিছু দূরেই অবস্থিত ভট্টবাটি গ্রাম, এই গ্রামের খুবই একটি শিব মন্দির অবস্থিত, যা রত্নেশ্বর শিবমন্দির নামে পরিচিত।

এই ভট্টবাটি নামের উৎপত্তি হয়েছে ভট্ট ব্রাহ্মনদের থেকে। নবাব আলীর্বদী খাঁ এর সময়ে দক্ষিণ ভারতের কর্নাটক থেকে প্রায় ১২০০ ভট্ট ব্রাহ্মনরা নবগ্রাম ব্লকের এই গ্রামে এসে বসবাস শুরু করে, তাদের নামেই গ্রামের এই নামকরণ হয়। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা কে সেটা সঠিকভাবে না বলা গেলেও অষ্টাদশ শতকে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো। এই মন্দিরটি ও টেরাকোটার কাজে সজ্জিত।


৩. কর্ণসুবর্ণ :- কর্ণসুবর্ণ বা কানশোনা যার নাম আমরা ইতিহাস বইতে প্রায় সকলেই পড়েছি যার অবস্থান মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুর থেকে প্রায় ১৫ কি.মি দূরে অবস্থিত। কর্ণসুবর্ণ হল প্রাচীন বাংলার প্রথম স্বাধীন হিন্দু রাজা শশাঙ্কের রাজধানী, যাকে স্থানীয় লোকেরা রাজবাড়ি ঢিপি বলে থাকে। কিন্তু সরকারি উদাসীনতায় তা এখন খেলার মাঠ, আড্ডার জায়গায় পরিণতি হয়েছে। এখন বর্তমানে প্রাচীন রাজবাড়ির কিছু ধ্বংসাবশেষ এবং একটি কুয়ো অবশিষ্ট আছে, চারদিকে প্রাচীর ও দেওয়া আছে কিন্তু সংরক্ষণ নেই। আপনি কর্ণসুবর্ণ স্টেশনে নেমেও টোটো ভাড়া করে কয়েক কি.মি দূরে স্থিত এই জায়গাটিতে আসতে পারেন অথবা বহরমপুর থেকেও এখানে চলে আসতে পারেন।


৪. কাশিমবাজার :- মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের কাশিমবাজার খুবই পুরোনো শহর। প্রাচীনকালে বিভিন্ন বিদেশী বনিকরা এই কাশিমবাজারে এসেই তাদের কুঠি নির্মাণ করছিলো। কারণ সেই সময়ে কাশিমবাজার ব্যবসা বাণিজ্যের দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল, এবং কলকাতা থেকে ভাগীরথী নদী দ্বারা এই কাশিমবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো ছিল।

এখানে দেখার মত যে জায়গা গুলো আছে সেগুলো হলো - 

১. কাশিমবাজার কুঠি ।

২. ডাচ সিমেট্রি ।

৩. কাশিমবাজার বড় রাজবাড়ি।

৪. কাশিমবাজার ছোটো রাজবাড়ি ।



Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন