বাঁকুড়া জেলার সেরা ২৫ টি দর্শনীয় স্থান
ভ্রমণ পিপাসু :- ভ্রমণ পিপাসুর জেলা সিরিজে আজকে তুলে ধরবো দক্ষিণ বঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে অন্যতম জেলা বাঁকুড়া জেলা নিয়ে। বাঁকুড়া জেলার ট্যুরিস্ট স্পটের কথা বলতে গেলেই সবার প্রথমে দুটি জায়গায় কথা মাথায় আছে, এক বিষ্ণুপুর এবং মুকুটমনিপুর। কিন্তু এত বড় জেলা এই বাঁকুড়া জেলার এই দুটি জায়গা বাদেও আরো সুন্দর সুন্দর অনেক জায়গা আছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না, এই ব্লগে আমি এই বাঁকুড়া জেলার সেরা ২০ টি বাঁধাধরা এবং অজানা এবং অফবিট, জেলার প্রায় সবকটি জায়গায় তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
এই পোস্টে শুধু জায়গা গুলো সম্পর্কে ধারনা দেওয়া ছাড়াও এই স্পট গুলো সম্পর্কে সমস্ত খুঁটিনাটি তুলে ধরা হবে যাতে কোনভাবেই আপনাদের এই জায়গা গুলোতে ঘুরতে যেতে অসুবিধার সম্মুখীন না হোন। আর আমার এই ওয়েবসাইটে এই বাঁকুড়া জেলা বাদেও আমাদের রাজ্যের প্রায় সমস্ত জেলার ভ্রমণস্থল গুলোকে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলো আপনারা চাইলেই দেখে নিতে পারেন...
চলুন তাহলে এক এক দেখে নি এ জেলার সেরা ২৫ টি দর্শনীয় স্থানকে। বাঁকুড়া জেলার অন্তর্গত দর্শনীয় স্থান গুলোকে আমরা যদি কয়েকটি সার্কিটে ভাগ করে নি, তাহলে আপনাদের বোঝার ক্ষেত্রে এবং ভ্রমন করার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সুবিধাজনক হবে প্রথমেই আমরা আলোচনা করবো বাঁকুড়ার গর্ব মুকুটমনিপুর নিয়ে।
১. মুকুটমনিপুর সার্কিট :- বাঁকুড়া জেলার খাতরা ব্লকের অন্তর্গত মুকুটমনিপুর, যা দুটি নদী কংশাবতী এবং কুমারী নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। এই মুকুটমনিপুরকে কেন্দ্র বেশ কিছু পর্যটনস্থল গড়ে উঠছে...
১. মুকুটমনিপুর ড্যাম :- এই মুকুটমনিপুর সার্কিটের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং আকর্ষনীয় স্পট হল এই মুকুটমনিপুর ড্যাম। বাঁকুড়ার রানী হিসেবে খ্যাত এই ড্যামটি মাটির তৈরি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ড্যাম। নীল জলের নির্মল প্রকৃতি,সবুজ বন, মুকুটের মত পাহাড়ি টিলা এবং নানারকম দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যে শোভিত এই মুকুটমণিপুর। এখানে আসলে একদিকে যেমন আপনারা দারুণ দারুণ ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি করতে পারবেন তেমনি জঙ্গলমহলের আদিবাসী সংস্কৃতিকে সামনে থেকে অনুভব করতে পারবেন। আর এখানে থাকার এখন আর কোনো অভাব নেই, বিভিন্ন ধরণের ছোটো বড় সরকারি, বেসরকারি হোটেল, রিসর্ট পেয়ে যাবেন তাই এইদিক থেকে কোনও অসুবিধে নেই। এখানে আসতে হলে আপনি ট্রেন বা বাসে বাঁকুড়া বা দুর্গাপুর পৌঁছে তারপর গাড়ি ভাড়া করে অথবা বাঁকুড়া থেকে বাসেও এখানে চলে আসতে পারেন। আর তাছাড়া মেদিনীপুর বা বিষ্ণুপুর থেকেও বাইরোড এখানে চলে আসতে পারেন।
২. মুসাফিরানা ভিউপয়েন্ট :- আপনি কি কখনও চাঁদকে পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছেন? মনোমুগ্ধকর মুনরাইজের সাক্ষী হতে হলে আপনাকে আসতেই হবে মুসাফিরানার ভিউ পয়েন্টে।এখান থেকে জমকালো সবুজ এবং করুণ জলের অপার সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে এবং আপনি এখান থেকে আপনার ক্যামেরার শাটারটি ক্লিক করাতে বাধ্য করবে। এর সাথে পূর্ণিমার রাতে নীল বিস্তীর্ণ জলছবি থেকে পূর্ণ চাঁদ উঠছে এবং জলের উপরে ঝলমল করছে যা দেখে মনে হবে আপনি সত্যি যেনো স্বর্গে আছেন।
৩. অম্বিকা মন্দির :- মুকুটমনিপুর ড্যাম থেকে প্রায় ৩ - ৪ কি.মি দূরে অবস্থিত অম্বিকাপুর গ্রামের মা অম্বিকা মন্দির। মন্দিরটিতে ৭০০ বছর ধরে দেবী দুর্গাকে মা অম্বিকা হিসাবে পূজা করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজনের মতে মা অম্বিকা মা খুবই জাগ্রত। শহরের কোলাহল থেকে ঘুরে একদম গ্রাম্য পরিবেশে মা দুর্গার পূজা উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে আসতেই হবে এই গ্রামে।
৪. পরেশনাথ শিব মন্দির :- স্থানীয় মানুষদের কাছে খুবই পবিত্র এই পরেশনাথ শিব মন্দির, আপনি যদি মুকুটমনিপুর বেড়াতে আসেন তাহলে এই মন্দিরটি থেকেও ঘুরে যেতে পারেন। এই মুকুটমনিপুর বাঁধটি নির্মাণের সময়ে মাটি খননের সময়ে মন্দিরের মূল বিগ্রহটি পাওয়া গিয়েছিলো। এটি আসলে একটি জৈনদের মূর্তি, এখানে আসে পাশে এরকম অনেক জৈন মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু হিন্দুরা শ্রদ্ধাভরে এর পূজার্চনা করে থাকে। মহাশিব রাত্রি উপলক্ষে বড় উৎসবের আয়োজন করা হয়।
এছাড়াও এই সার্কিটে দেখার মত আরো দুটি আকর্ষনীয় জায়গা আছে একটি বনপুকুরিয়া হরিন পার্ক এবং দ্বিতীয়টি নোয়াডিহি সানসেট পয়েন্ট। মুকুটমনিপুর ঘোরার ক্ষেত্রে একদিন যথেষ্ঠ, আপনি চাইলে একদিনেই ঘুরে আবার ফিরে যেতে পারেন আবার একটা রাত এখানে থাকতে চাইলেও থাকতে পারেন।
২. ঝিলিমিলি সার্কিট : - বাঁকুড়া জেলার খাতরা মহকুমার অন্তর্গত রানীবাঁধ ব্লকের অন্তর্গত এই ঝিলিমিলি। মুকুটমণিপুর থেকে যার দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার, খাতড়া থেকে ৩০, বাঁকড়া থেকে ৭০ কিলোমিটার এবং রানিবাঁধ থেকে ১২। আপনি যদি বাঁকুড়ার দিক থেকে আসেন তাহলে রাণীবাঁধ হয়ে আপনাকে ঝিলিমিলি পৌঁছতে হবে, রানিবাঁধ থেকে ঝিলিমিলি যাওয়ার রাস্তাটি এবং তার দুপাশের অরন্য যথেষ্ট মনোমুগ্ধকর। আপনি মুকুটমনিপুর ঘুরে নিয়ে তারপর ঝিলিমিলি চলে আসতে পারেন। ঝিলিমিলি একদিন ঘোরার জন্য একদমই যথেষ্ট চাইলে আপনি একটা রাত এখানে কাটাতেই পারেন। এই ঝিলিমিলিকে কেন্দ্র করে এই সার্কিটে আরো কিছু দেখার জায়গা আছে...
১. ঝিলিমিলি বারো মাইল জঙ্গল :- ঝিলিমিলির সুতান জঙ্গল “বারো মাইল-এর জঙ্গল” নামেও পরিচিত। পুরো অরণ্য জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক ভিউপয়েন্ট, যেগুলো আপনাকে দাঁড়াতে বাধ্য করবে। শাল, মহুয়া, শিমুল প্রভৃতি গাছ দ্বারা আবৃত এই জঙ্গল বর্ষাকালে আরো মোহময়ী হয়ে ওঠে। এই বনের মধ্য দিয়ে কংসাবতী নদী প্রবাহিত। নদীর দুই তীর আদর্শ চড়ুইভাতি কেন্দ্র রূপে।ঝিলিমিলির ওয়াচ টাওয়ার থেকে আশেপাশের অঞ্চলের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। ঝিলিমিলি শান্ত নির্জন জায়গা বলে, শহরবাসীরা এখানে নির্জনতার সন্ধানে আসেন।
জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় এই অঞ্চলে টুসু পরব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে টুসুর পূজা করা হয়। মকর সংক্রান্তির দিন সাঁওতালদের মেলা হয়। ডিসেম্বর আসতে আসতে এই কারণে এখানে প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যায়, কিন্তু ভিড় থেকে বাঁচতে আপনি বর্ষাকালেও এখানে আসতে পারেন।
২.সুতান লেক :- ঝিলিমিলি রেঞ্জের মধ্যেই অবস্থিত এই সুতান হ্রদটি যা প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। আর এই লেকের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায় বর্ষাকালে। এখানে বসে দেখবেন পাকির কলকাকলিতে যেন পৌঁছে গিয়েছেন অন্য জগতে। এখানে আসলে নৃত্যরত ময়ুরের সাথেও আপনার দেখা হয়ে যেতে পারে।
৩. তালবেরিয়া বাঁধ :- এই তালবেরিয়া বাঁধটি রানীবাঁধ থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যা এই সার্কিটের আরো একটি প্রাকৃতিক পর্যটন গন্তব্যস্থল । সমস্ত রাস্তা গভীর বন এবং উপজাতি গ্রাম দ্বারা আচ্ছাদিত। দর্শকদের জন্য কিছু গুণমানের সময় ব্যয় করার এটি একটি মনোমুগ্ধকর জায়গা
৩. শুশুনিয়া :- বাঁকুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কি.মি দূরে বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া যাওয়ার পথে পড়বে এই শুশুনিয়া। এই শুশুনিয়া বিখ্যাত তার তার শুশুনিয়া পাহাড়ের জন্য। প্রায় ১২০০ ফিট উচু এই পাহাড় বিখ্যাত অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঘন সবুজ বনভূমি, লাল মাটি, পলাশ, ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং কিছু মন্দিরে জন্য। বিভিন্ন ধরনের বন্য জীবজন্তু, পাখিদের ও দেখা পাবেন, সেইজন্য ফটোগ্রাফির জন্য আদর্শ একটি জায়গা।
আর শুশুনিয়া পাহাড়েই আপনি গেলে দেখতে পাবেন আমাদের রাজ্যের প্রাচীনতম শিলালিপি, ঐতিহাসিকদের মতে চারশো শতকে রাজা চন্দ্রবর্মা এখানে একটি দুর্গ নির্মাণ করেন, যদিও দুর্গের কোনো চিহ্ন এখানে এখন না থাকলেও শিলালিপিটি এখন ও দেখতে পাবেন। এছাড়াও পাহাড়ের পাদদেশে দেখতে পাবেন নরসিংহের মন্দির।
৪. বিহারীনাথ :- বাঁকুড়া শহর থেকে প্রায় ৬০ কি.মি দূরে শালতোড়া ব্লকের অন্তর্গত এই বিহারীনাথ, যা প্রধানত বিখ্যাত বিহারীনাথ পাহাড় এবং বিহারীনাথ মন্দিরের জন্য। এই বিহারীনাথ পাহাড় বাঁকুড়া জেলার সর্বোচ্চ স্থান, উচ্চতা ১৪৮০ ফুট।
বিহারীনাথ পাহাড়ের পাদদেশ অংশটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ০.৫০ হেক্টর আয়তনের একটি ছোটো জলাধারকে কেন্দ্র করে এই পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। পাহাড়, ঘন জঙ্গল, জলাধার, ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় স্থান সব মিলে এক আদর্শ ভ্রমণস্থল এই বিহারীনাথ। এখানে বিহারীনাথ শিবমন্দির ছাড়াও একটি জৈন মন্দির প্রতিষ্ঠিত আছে। এছাড়াও বিহারীনাথ এলাকায় কিছু প্যালিওলিথিক প্রত্নসামগ্রী উদ্ধার হয়। তাই বাঁকুড়া ভ্রমনে আসলে এই বিহারীনাথকে কিন্তু কোনো মতেই বাদ দেওয়া চলবে না।
৫. বিষ্ণুপুর সার্কিট :- মন্দির নগরী হিসেবে পরিচিত বিষ্ণুপুর তথা গোটা রাজ্যের পর্যটকদের কাছে পরিচিত টেরাকোটার মন্দিরের জন্য। এই শহরে পোড়ামাটি বা টেরাকোটার প্রচুর মন্দির দেখতে পাবেন, যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এখনকার মল্ল রাজাদের দ্বারা। মল্ল রাজা জগৎ মল্লের রাজত্বকালে রাজধানী বিষ্ণুপুরে স্থানান্তরিত করা হয়, তারপর থেকে রাজা জগৎ মল্ল ও তার বংশধরেদের দ্বারা প্রচুর মন্দির গড়ে ওঠে বিষ্ণুপুর জুড়ে, সেসময় বাংলায় পাথরের যোগান কম থাকার জন্য নতুন এক শিল্পরীতি উদ্ভব হয় যাকে আমরা টেরাকোটা বলে থাকি। চলুন এবার বিষ্ণুপুরের মন্দির গুলো এক এক করে দেখে নি...
১. রাসমঞ্চ :- বিষ্ণুপুরের অন্যতম প্রাচীনতম পোড়া ইট দিয়ে তৈরী মন্দির এই রাস এক বিরাট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে রাজা বীর হাম্বির এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের ওপরিভাগ পীরামিডের স্ট্রাকচারে তৈরি, মন্দিরের ভেতরে তিনটি চক্রাকার গ্যালারী, প্রশান্ত স্তম্ভ এবং পোড়ামাটির পদ্ম দ্বারা রয়েছে অসংখ্য খিলান, এরকম ধরনের মন্দির কিন্তু একবারেই দেখা যায়না, এই রাসমঞ্চটি বিষ্ণুপুরের অন্যতম পরিচিত এবং জনপ্রিয় পর্যটনস্থল।
২. জোড়বাংলা মন্দির :- বিষ্ণুপুরের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবার কাছে খুবই পরিচিত এই জোর বাংলা মন্দির। জোড়বাংলা মন্দিরটি মল্ল রাজা রঘুনাথ সিংহ ১৬৫৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মন্দিরটি পশ্চিমবঙ্গের পোড়ামাটির শিল্পের অন্যতম ব্যতিক্রমী উদাহরণ এবং একটি অনন্য স্থাপত্য কাঠামোর মালিক। মন্দিরটির বিশেষ “দো-চালা” আকারের কারণে “জোড়বাংলা” নামকরণ করা হয়েছে। মন্দিরের গাত্রে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী, গল্প পোড়ামাটির ভাস্কর্য যা আপনাকে অবাক করে দেবে।
৩.মৃন্ময়ী মন্দির :- মৃন্ময়ী মন্দিরটি বিষ্ণুপুরের প্রাচীনতম মন্দির। রাজা জগৎ মল্ল ৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্থানীয় ইতিহাস অনুসারে, রাজা জগৎ মল্লের মা মৃন্ময়ী দেবী তাঁর স্বপ্নে রাজাকে মন্দির তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেই তিনি এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন দেবী দুর্গা এখানে মা মৃন্ময়ী হিসাবে পূজিত হন। দুর্গাপুজার সময়ে অনেক নিয়ম ও নিষ্ঠা সহকারে মায়ের পূজা হয়।
৪. শ্যাম রাই মন্দির :- শ্যাম রায়টি মন্দিরটি ১৬৪৩ সালে রাজা রঘুনাথ সিংহ নির্মান করেন। মন্দিরটি পাঁচটি চূড়ার মালিক হিসাবে “পাঁচ-চুড়া” মন্দির নামে পরিচিত। এই মন্দিরের গায়ে ও অসংখ্য সূক্ষ্য টেরাকোটার কাজ লক্ষ্য করা যায়।
৫. মদনমোহন মন্দির :- এই মন্দিরটি মল্ল রাজা দুর্জন সিংহ দেব ১৬৯৪ সালে ভগবান মদন মোহন-এর নামে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মদনমোহন অর্থাৎ এটি একটি ভগবান বিষ্ণুর মন্দির, এটিই একমাত্র বিষ্ণুপুরের মন্দির যেটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি একটি সক্রিয় মন্দির।
৬. গড়-দরজা :- বিষ্ণুপুরে দুর্গের দু’টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। স্থানীয় লোকেরা তাদেরকে ‘গড় দরজা’ বলে সম্বোধন করে। ‘মুরচা পাহাড়’ এর পাশে আপনি পাথরের তৈরি একটি ছোট ঢিবি দেখতে পাবেন। ছোট গেটটি অতিক্রম করার পরে একটি বিশাল গেট আসে যা ছিল বিষ্ণুপুর রাজত্বের প্রবেশদ্বার।
৭. লালজী মন্দির :- বিষ্ণুপুরের জোড় বাংলা মন্দিরের ঠিক পাশেই অবস্থিত এই লালজী মন্দিরটি। ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে মল্ল রাজা দ্বিতীয় বীর সিংহ একরত্ন শৈলীতে এই মন্দিরটি নির্মাণ করান। মন্দির টি রাধা কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে সমর্পিত ।
৮. কালাচাঁদ মন্দির :- বিষ্ণুপুরের রত্ন শৈলীর মন্দিরের মধ্যে অন্যতম এই কালাচাঁদ মন্দির। ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে ইট ও মাকড়া পাথর দিয়ে এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিলো মল্ল রাজা দ্বিতীয় বীর সিংহের আমলে।
৯. রাধেশ্যাম মন্দির :- রাধেশ্যাম মন্দিরটি ১৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দে মল্লরাজা চৈতন্য সিং মাকড়া পাথর দিয়ে এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। মন্দিরের শিখরটি গম্বুজকৃতি এবং বিষ্ণুপুরের অন্যান্য মন্দিরের তুলনায় ভিন্ন। মন্দিরের ভেতরে রাধা কৃষ্ণ, গৌড় নিতাই, এবং জগন্নাথ দেবের বিগ্রহ আছে।
১০. নন্দলাল মন্দির :- সপ্তদশ শতাব্দীর তৈরি ল্যাটেরাইট পাথরের তৈরি এই মন্দিরটি বাংলার চালা ছাদযুক্ত ও একটি শিখরযুক্ত । মন্দিরের গায়ে পৌরাণিক কাহিনী বর্ণনা রয়েছে।
১২ . রাধা মাধব মন্দির :- এই মন্দিরটি মাকরা পাথরের তৈরি এবং দক্ষিণমুখী ও একরত্ন শৈলীর মন্দির। এই মন্দিরটি ১৭৩৭ খ্রিস্টাব্দে মল্লরাজ কৃষ্ণ সিংহের পত্নী রানী চূড়ামনিদেবী নির্মাণ করেছিলেন । বর্গাকার ভিত্তিপিঠের উপরে মন্দিরের ঢালু ছাদের কেন্দ্রস্থলে একমাত্ৰ শিখরটি রয়েছে । মন্দিরের গায়ে রামায়ন , মহাভারত , পুরান বর্ণিত ভাস্কর্য দেখতে পাওয়া যায় । এই ভাস্কর্যগুলির গায়ে এখনো পঙ্খের প্রলেপ বিদ্যমান।
১৩. মদনগোপাল মন্দির :- মদনগোপাল মন্দিরটি মাকড়া পাথরের তৈরি বিষ্ণুপুরের একমাত্র পঞ্চরত্ন মন্দির । মন্দিরটি বাংলা চালার ছাদ ও পাঁচটি শিখর বিশিষ্ট। ১৬৬৫ খ্রীষ্টাব্দে মল্লরাজ বীর সিংহের স্ত্রী রানী শিরোমনি এই মন্দিরটির প্রতিষ্টাতা ।
১৪. মুরলীমোহন মন্দির :- মন্দিরটি দক্ষিণমুখী মাকড়া পাথরের তৈরী একরত্ন এই মন্দিরটি ১৬৬৫ খ্রীষ্টাব্দে মল্লরাজ বীর সিংহের পত্নী রানী শিরোমনি প্রতিষ্টা করেন । বর্গাকার ভিত্তির উপরে স্থাপিত মন্দিরটির ঢালু ছাদের উপরে একমাত্র শিখরটি অবস্থান ।
১৫. মল্লেশ্বর মন্দির :- এই মন্দিরটি মল্ল রাজাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একমাত্র শিবমন্দির । ১৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মল্লরাজ বীর সিংহ দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত । মাকড়া পাথরের তৈরি মন্দিরটি বিষ্ণুপুরের সব থেকে পুরাতন মন্দির । মন্দিরটির সামনে একটি বিশ্রামরত নন্দী মূর্তি বর্তমান।
১৬, রাধা বিনোদ মন্দির :- ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে মল্লরাজ রঘুনাথ সিংহের পত্নী এই আটচালা মন্দিরটি প্রতিষ্টা করেন । প্রায় বর্গাকৃতি ভিত্তির উপর অধিষ্ঠিত এই মন্দিরটি উপরিভাগ আটচালা কিন্তু মধ্য ও নিম্ন ভাগ চতুর্ভূজ হওয়ার দরুন এটিকে প্রথম নজরে চারচালা বলে ভুল হতে পারে ।
১৭, ষাঁড়েশ্বর এবং শৈলেশ্বর মন্দির :-এই দু’টি মন্দির মহাদেবকে উৎসর্গীকৃত এবং বিষ্ণুপুর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে দিহড় গ্রামে অবস্থিত। ষাঁড়েশ্বর মন্দিরের প্রবেশদ্বারে বসে একটি নন্দী ষাঁড় দেখতে পাবেন যেন এটি সুরক্ষা দিচ্ছে। ল্যাটারাইট পাথরের তৈরি এই মন্দিরগুলি ওড়িয়া দেউল শৈলীর স্থাপত্যের দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ।
১৮, দলমাদল কামান :- 3.8 মিটার লম্বা , 28.6 সেন্টিমিটার ব্যাস বিশিষ্ট লোহার তৈরি এই কামানটি মল্লরাজাদের সময়ের সবথেকে বড়ো কামান । প্রচলিত লৌকিক উপাখ্যান অনুযায়ী মল্লরাজ গোপাল সিংহের আমলে রাজপরিবার ও নগরের রক্ষাদেবতা। মদনমোহন স্বয়ং বর্গী সেনাপতি ভাস্কর রাওয়ের বিরুদ্ধে এই কামান ব্যাবহার করেছিলেন।
১৯. বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা :- বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর বাংলার শিল্প, সংস্কৃতি হেরিটেজের প্রধান কেন্দ্র এবং প্রাচীন শহর। মল্লভূম রাজাদের রাজধানী ছিল বাঁকুড়া জেলার এই শহর। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় গোটা বিষ্ণুপুর জুড়ে গড়ে প্রচুর টেরাকোটার মন্দির । ধীরে ধীরে এই বিষ্ণুপুর শহর টেরাকোটার প্রধান হাবে পরিণত হয়।
বিষ্ণুপুর থেকে মাত্র ১৩ কি.মি দূরে ছোট্টো এ 8 কটি গ্রাম পাঁচমুড়া যা টেরাকোটার সামগ্রী তৈরীর জন্য সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। গোটা বিষ্ণুপুর জুড়ে টেরাকোটার বিভিন্ন দ্রব্য তৈরি হলেও এই পাঁচমুড়া গ্রামের তৈরি পোড়া মাটির ঘোড়া সর্বাধিক প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। বাঁকুড়ার ঘোড়া হিসেবে এটি বেশি পরিচিত। এই নামে GI ট্যাগ ও পেয়েছে ২০১৮ সালে। এই বাঁকুড়া বিষ্ণুপুরের এই ঘোড়াটি বর্তমানে জাতীয় এবং রাজ্যের Handicrafts লোগো তে পরিনত হয়েছে। রাজ্য বা কেন্দ্রের Handicrafts দফতরের সরকারি সাইট থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গায় আপনি এই ঘোড়াটি কে দেখতে পাবেন। এক সময়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের আচার অনুষ্ঠানের অংশ এই ঘোড়াটি বর্তমানে সরাসরি দফতরে সাইট থেকে শুরু করে মানুষের ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সহায়তা করছে।
বিষ্ণুপুরে যদি আপনারা যদি ঘুরতে আসেন তাহলে এখানে দেখার মত প্রচুর টেরাকোটার মন্দির আপনারা পেয়ে যাবেন যা দেখে শেষ করতে পারবেন না, তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য মন্দিরের নাম আমি বলে দিচ্ছি অনেক হয়তো জানেন ও, শ্যামরাই মন্দির, রাসমঞ্চ, রাধেশ্যাম মন্দির, নন্দলাল মন্দির, জোড় বাংলা মন্দির, মদন মোহন মন্দির আরো অনেক, বিষ্ণুপুর ট্যুর নিয়ে আমি আলাদা একটা ব্লগ লেখার চেষ্টা করবো। আর হ্যাঁ বিষ্ণুপুরে আসলে টেরাকোটার বিভিন্ন সামগ্রী কিন্তু বাড়ি নিয়ে যেতে ভুলবেন না। বিভিন্ন মেলায় এইসব সামগ্রীর দাম কিন্তু অত্যধিক হয়।
২০. বালুচুরী শাড়ি :- ভারতে তাঁতের শাড়ির যদি নাম নেওয়া যায় সেই লিস্টে একদম প্রথমের দিকে থাকবে এই বালুচুরী শাড়ি। বালুচুরী শাড়িকে বলা হয় - "Most Loveliest and Most Charming of All Silk Of India" এই শাড়ির উৎপত্তি মুর্শিদাবাদে নবাবী আমলে হলেও এর বর্তমানে কেন্দ্র বীরভূমের বিষ্ণুপুর শহর।
প্রায় ৩৫০ বছর পূর্বে মুর্শিদাবাদের নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ তার রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করলে তিনি পূর্ব বঙ্গের ঢাকা থেকে কয়েকজন গুণী তাঁত শিল্পীকে মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসেন। তাঁত শিল্পকে উন্নত আর দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই মুর্শিদাবাদের ভাগীরথীর তীরে বালুচর নামক গ্রামে তাদের বসবাস স্থাপন করেন, সেই থেকেই এই শাড়ির নাম এসে বালুচুরী। পরবর্তীতে ভাগীরথীর বন্যাতে এই গ্রাম নদীর গর্ভে তলিয়ে গেলে তখন এই শিল্পীরা মুর্শিদাবাদ থেকে বীরভূমের বিষ্ণুপুর চলে আসেন, তখন বিষ্ণুপুর ছিল মল্ল রাজাদের রাজধানী। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই তাঁত শিল্পী আরো সমৃদ্ধি লাভ করে। ব্রিটিশ আমলে এই শিল্পের প্রসার অনেকটা কমে যায়। বিখ্যাত কয়েকজন বালুচুরী শিল্পী যাদের হাতে এই শিল্প আরো গুণগত দিক আরো উৎকৃষ্ট হয় তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন - শুভ ঠাকুর, অক্ষয় কুমার দাস, প্রমুখ।
স্বাধীনতার পরবর্তীতে সরকারি উদ্যোগে এবং নিখিল ভারত খাদি দফতরের উদ্যোগে এই শিল্পের উন্নতিতে আরো বড় ভূমিকা পালন করে। নতুন নতুন আধুনিক টেকনিকের উদ্ভাবন হয়, আধুনিক যন্ত্রের আবিষ্কার এই শিল্পের উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১১ ভারত সরকার এই বালুচুরী শাড়িকে GI ট্যাগ ও দিয়েছে। এই শাড়ির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ই হচ্ছে পাল্লু আর উন্নত টেকনিক জালা। একটি ভালো মানের বালুচুরী শাড়ি তৈরি করতে প্রায় ২০ দিনের মতো সময় লেগে যায় কিন্তু বর্তমান আধুনিক টেকনলজির ব্যাবহারে তা এখন ৭-১০ দিনেই হয়ে যাচ্ছে।
৬. বাঁকুড়ার ডোকরা শিল্প:- ডোকরা শিল্প বাঁকুড়া সহ পুরো পশ্চিম বাংলার গর্ব । ডোকরার নাম শুনলেই সর্বপ্রথম ভেসে ওঠে বাঁকুড়া শহরের কাছেই অবস্থিত বিকনা গ্রাম, যেই গ্রামের খ্যাতি ডোকরা গ্রাম হিসেবে, এই গ্রামের প্রায় ১০০টি ওপরে পরিবার এই হস্তশিল্পের সাথে যুক্ত। বাঁকুড়া শহর থেকে মাত্র ৫ কি.মি দূরে এই গ্রাম আপনি টোটো করে অথবা বাসে ও এখানে চলে আসতে পারবেন ।ডোকরা শিল্প কেন্দ্র হিসেবে বাঁকুড়া জেলার বিকনা গ্রাম বিখ্যাত হলেও আরো একটি জায়গা এই কাজের জন্য সুপ্রসিদ্ধ সেটি হলো বর্ধমান জেলার গুসকরা। গ্রাম গ্রামাঞ্চল থেকে, দেশ দেশান্তর সর্বত্র এই ডোকরা শিল্পের চাহিদা তুঙ্গে।
ডোকরা শিল্প পদ্ধতি একটি জটিল ও সময় সাপেক্ষ, সূক্ষ্য শিল্প কর্ম। প্রথমে শিল্পীরা পুকুর থেকে লাল বা সাদা মাটি সংগ্রহ করে ও মাটির মণ্ড তৈরি করে; এর পর মাটি দিয়ে হাতে করে একটি অবয়ব তৈরি করে। অবয়বটির উপর মোম, তেল এর প্রলেপ দেওয়া হয় । শেষে নরম মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়। এর পর এটিকে পোড়ানো হয়। ফলে মোম গলে একটি ছিদ্র দিয়ে বাইড়ে বেরিয়ে আসে ।এর পর ওই ছিদ্র দিয়ে গলানো পিতল ঢালা হয় এবং শক্ত হলে মূর্তিটি সংগ্রহ করা হয়। মূর্তিটি এর পর শিরিষ কাগজ দ্বারা ঘষে উজ্জ্বল করা হয়।
এই শিল্পের ইতিহাস প্রায় ৪০০০ বছরের পুরোনো মনে করা হয় ছত্রিশগড়ের বস্তার এলাকা থেকে শিল্পীরা এসে ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বসতি স্থাপন করে। সিন্ধু সভ্যতার মহেন্জোদারোতে যে প্রাপ্ত Dancing Girl এর যে মূর্তিটি পাওয়া যায় যেটা ডোকরা শিল্পের সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন। বাঁকুড়ার বিকনা এবং বর্ধমানের গুসকরা ছাড়াও মেদিনীপুর পুরুলিয়ার কিছু জায়গায় এই শিল্প আপনারা দেখতে পাবেন।
৭. জয়পুর ফরেস্ট :- শহুরে জীবন থেকে দূরে একটি ছোট সপ্তাহান্তে কোথায় বেড়াতে যাওয়ার জায়গা খুঁজছেন তাহলে বাঁকুড়া জেলার জয়পুর ফরেস্ট একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহর থেকে ১২ কি.মি দূরে অবস্থিত এই জয়পুরের জঙ্গল। কলকাতা থেকে জয়পুর জঙ্গলের দূরত্ব প্রায় ১২৯ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে যদি বিষ্ণুপুরের দিকে যান তাহলে এই ফরেস্টটি আগে পড়বে, গাড়ি করে যাওয়ার সময়ে চোখে পড়বে দুপাশে সবুজ বনের মাঝে পিচ বাঁধানো রাস্তা। দু’পা সারি ঘন জঙ্গল, যাতে আছে, শাল, সেগুন, মহুয়া বিভিন্ন গাছের সারি। কখনও কখনও হাতি বা হরিণের দল পাড় হয় এই রাস্তা দিয়ে। এই জঙ্গলের মধ্যে বাস হাতি, চিতল হরিণ, বুনো শেয়াল, বুনো শুয়োর, ময়ূর আর বহু নাম না জানা বহু পাখির। আবার জঙ্গলের মধ্যে থাকার জন রিসর্ট ও পেয়ে যাবেন, যার মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য নাম হলো বনলতা রিসর্ট।
তাই বাঁকুড়া এই জঙ্গলে এক থেকে দিন স্বছন্দে থাকতে পারেন, সব মিলিয়ে এটাই বলা যায় সপ্তাহের শেষে একদিনের বা বড়জোর দুদিনের জন সমুদ্রের দূরে মন ভালো করা একটা জায়গা। জয়পুর জঙ্গলের এই রাস্তা ধরে সোজা চলে গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন বিষ্ণুপুর আর আপনি যদি এই জঙ্গলে না থেকে বিষ্ণুপুরে গিয়ে থাকতে চান তাহলে থাকতে পারেন, ওখানে অনেক হোটেলের অপশন আছে। বাসে করে বা ট্রেনে আসলে বিষ্ণুপুরের নেমে গাড়ি ভাড়া করে বা বাসে এই ফরেস্টে চলে আসতে পারেন, নিজস্ব গাড়ি নিয়ে আসলে আরামবাগ, কোতলপুর হয়ে এখানে আসা যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন