North 24 Pargana 40 Best Tourist spot/Places/ উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সেরা ৪০ টি জায়গা।

 উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার দর্শনীয় স্থান 

ভ্রমণ পিপাসু:- ভ্রমণ পিপাসুর জেলা সিরিজে আজকে আলোচনা করবো আমাদের রাজ্যের অন্যতম বৃহত্তম জেলা, এবং জনসংখ্যার দিক থেকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা নিয়ে। এই জেলার জনসংখ্যা এক কোটির ওপরে। আজকের ব্লগে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সেরা ৪০ দর্শনীয় স্থানকে তুলে ধরবো। এত বড় এই জেলার প্রায় সবকটি স্পটকেই তুলে ধরার চেষ্টা করবো। তবে তা সত্ত্বেও কিছু যদি বাদ পড়ে যায়, অবশ্যই সেটা আপনারা কমেন্ট করে জানাবেন আমি সেটা অ্যাড করে দেবো।

১৯৮৩ সালে ডা. অশোক মিত্র কমিটি এই জেলাকে বিভাজনের সুপারিশ করেন। ১ মার্চ ১৯৮৬ সালে চব্বিশ পরগনা জেলাটিকে দ্বিখণ্ডিত করে ওই জেলার উত্তরাংশ নিয়ে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা স্থাপন করা হয়। জেলা সদর করা হয় বারাসতকে। যদি ইতিহাস ঘাটা যায়, তাহলে দেখা যাবে এই জেলার ইতিহাস কিন্তু বহু পুরোনো। এই জেলার দেগঙ্গা থানার অন্তর্গত বেড়াচাঁপা গ্রামে খনন করে প্রাচীন শহর চন্দ্রকেতুগড়ের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, এখানে প্রাপ্ত ধ্বংসাবশেষ ও প্রত্নতত্ত্ব সামগ্রী কুষান আমল থেকে গুপ্ত আমল থেকে বিভিন্ন সময়ের। মোঘল আমলে এই এলাকা বারোভুঁইয়াদের মধ্যে অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের অধিকারে ছিল, বারোভুঁইয়াদের পতন ঘটলে এই অঞ্চল সরাসরি মোগল শাসনাধীনে আসে। পলাশীর যুদ্ধের পর মীরজাফর বাংলার নবাব হলে তিনি আমিরপুর, আকবরপুর, আজিমাবাদের মত চব্বিশটি পরগনার জমিদারি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যৌতুক হিসেবে প্রদান করে, তখন থেকেই জায়গাটির নাম চব্বিশ পরগনা নামে পরিচিত হয়ে আসছে। ব্রিটিশ শাসনামলে এই চব্বিশ পরগনা জেলা, প্রশাসনিক কারণে অনেকবার ভাগ করা হয়েছে। স্বাধীনতার পূর্বে যশোর জেলার বনগাঁ মহকুমা এই জেলার সাথে যুক্ত করা হয়, এবং এই জেলার সুন্দরবনের অনেকটা অংশ বাংলাদেশের খুলনা ও বাঘেরহাটের সাথে যুক্ত করা হয়, এবং তার ফলেই আমরা l দুই চব্বিশ পরগনা বর্তমান রূপ তৈরি হয়।

আসুন আমরা এবার উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা সেরা ৪০ টি স্পটকে এক এক করে দেখেনি, এবং আপনারা যদি এই জেলার স্পট গুলোতে ঘুরতে আসার প্ল্যান করে থাকেন তাহলে কেমন করে কি ভাবে জায়গা গুলো যাবেন এবং ঘুরবেন সে সম্পর্কে একটা ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবো, এই উত্তর চব্বিশ পরগনা বাদেও আমাদের রাজ্যের বাকি জেলা গুলো নিয়েও এরকম ব্লগ আছে, সেটা চাইলেও আপনারা দেখে নিতে পারেন...

১. দক্ষিণেশ্বর মন্দির :- কলকাতা মেট্রোপলিটন এরিয়া তথা উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ স্থান ও মন্দির বলা যায় এই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরকে। সারা দেশ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও ভক্তদের ঢল নামে গঙ্গাতীরে অবস্থিত এই মন্দিরে। নদীর উল্টো দিকেই আছে আরো একটি পরিচিত ধর্মীয় ও পর্যটনস্থল, আমাদের সকলের পরিচিত বেলুড় মঠ। যা অবস্থিত হাওড়া জেলায়, আমার হাওড়া জেলা নিয়ে একটি প্রথম ব্লগ আছে সেটা অবশ্যই দেখে নিতে পারেন।


দক্ষিণেশ্বর মন্দির তৈরি ও তার ইতিহাস সমন্ধে কম বেশি আমরা প্রায় সকলেই জানি, তাও আমি খুব সংক্ষেপে একটু জানিয়ে দিচ্ছি। কথিত আছে, ১৮৪৭ সালে রানী রাসমণি অন্নপূর্ণা পূজোর জন্যে কাশীতে তীর্থযাত্রার আয়োজন কালে দেবী মা কালীর স্বপ্নাদেশ পান। এরপর ১৮৪৭ সালে গঙ্গার তীরে সমস্ত জমি বিক্রি করে রাণীমা মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন এবং ১৮৫৫ সালে হুগলি নদীর তীরে এই দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে প্রায় আট বছরে ৯ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছিল। বঙ্গীয় স্থাপত্য-শৈলীর নবরত্ন স্থাপত্য ধারা অনুযায়ী তিন তলা দক্ষিণমুখী এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয় মা ভবতারিনীর এই মন্দির। প্রথমদিকে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের দাদা রামকুমার চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। পরবর্তীতে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এই মন্দিরে কালী সাধনা শুরু করেন। 

মন্দিরটি উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার কামারহাটিতে অবস্থিত। মন্দিরটি থেকেই জায়গাটির নাম হয়ে গেছে দক্ষিণেশ্বর। দক্ষিণেশ্বরে আসা খুবই সহজ আপনি কলকাতার দিক থেকে আসতে চাইলে ট্রেন, বাস মেট্রো যেকোনো একটিকেই বেছে নিতে পারেন, মেট্রো চালু হয়ে যাওয়ায় এখন আরো সুবিধা হয়ে গেছে। তাছাড়া এখন দক্ষিণেশ্বর করিডোর বা স্কাইওয়াক চালু হয়ে যাওয়ায় আপনি মেট্রো বা বাস থেকে নেমে সোজা এই স্কাইওয়াকের মাধ্যমেই কোনো ঝোর ঝামেলা ছাড়াই মন্দির পৌঁছে যেতে পারবেন।


২. চন্দ্রকেতুগড় :- উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার দেগঙ্গা ব্লকের অন্তর্গত বেড়াচাঁপা গ্রামে অবস্থিত বাংলার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থল এই চন্দ্রকেতুগড়। বেড়াচাঁপার দুটি পাঁচস্তর বিশিষ্ট প্রত্নস্থল খনন কার্যের ফলে আবিষ্কৃত হয়েছে। যার মধ্যে বেড়াচাঁপার উত্তর দিকে খনামিহিরের ঢিপি একদম দক্ষিণ দিকে হাড়োয়া রোডের ওপর কিছু দূরেই চন্দ্রকেতুগড় দুর্গ। যে পাঁচটি স্তর এখানে পাওয়া গেছে তাতে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ থেকে কুষান, মৌর্য গুপ্ত এবং গুপ্ত পরবর্তী যুগের নিদর্শন ও ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে এই এলাকাটি কতটা প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক দিক থেকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এত প্রাচীন নিদর্শন বাংলায় খুবই কম জায়গায় পাওয়া গিয়েছে। এই দুটি জায়গায় পাওয়া প্রত্নতত্ত্ব সামগ্রী গুলো নিয়ে বেড়াচাঁপাতেই চন্দ্রকেতুগড় সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হয়েছে। কিছু কিছু নিদর্শন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ সংগ্রহালয়ে সযত্নে রাখা আছে।


কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ সংগ্রহালয়ে কুঞ্জবিহারী গোস্বামী ও তাঁর সহযোগীদের উদ্যোগে প্রায় ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০ বছর খননকার্য চলে, বেড়াচাঁপা ও আসে পাশের ৫, ৬ টি জায়গায়। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য খনা-মিহিরের ঢিবি। "খনা-মিহিরের ঢিবি" অংশের সঙ্গে প্রাচীন ভারতীয় রাজা বিক্রমাদিত্যের সভারত্ন বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহমিহির এবং তার পুত্রবধূ খনার নাম যুক্ত; লোকপ্রবাদ যে, এখানেই খনা ও বরাহমিহিরের বাসস্থান ছিল। এছাড়া পার্শ্ববর্তী এছাড়া, এখানে দেবালয় গ্রামে ধ্বংসাবশেষে রাজা চন্দ্রকেতু এবং তার সাথে পীর গোড়াচাঁদের যুদ্ধের একাধিক কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের মতে, চন্দ্রকেতুগড়ই ছিল সম্ভবত ‘পেরিপ্লাস’ এবং টলেমি সূত্রে উল্লিখিত বিখ্যাত প্রাচীন সমুদ্র-বন্দর 'গঙ্গারিডাই'-এর রাজধানী বা 'গাঙ্গে' বন্দর।

এখানে যদি আসতে চান তাহলে সবচেয়ে ভালো হবে লোকাল ট্রেনে। শিয়ালদহ থেকে হাসনাবাদ লোকাল ধরে হারোয়া রোড স্টেশন তারপর টোটো রিজার্ভ করে এই জায়গা গুলো সাথে মিউজিয়াম টি দেখে নিতে পারেন। আর বাই রোড আসলে কলকাতা থেকে বসিরহাট রোড ধরে দেগঙ্গা পেরিয়েই বেড়াচাঁপা।


৩. কচুয়া ধাম :- লোকনাথ বাবার জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত পূর্নতীর্থ কচুয়া ধাম। যা এই উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলাতেই অবস্থিত। এই জেলার বসিরহাট ব্লকের কচুয়া গ্রামে লোকনাথ বাবার জন্ম হয়েছিলো। তবে লোকনাথ বাবার জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক আছে কারো কারো মতে চাকলা গ্রামে বাবার জন্ম। নিত্যগোপাল সাহা এক ব্যক্তি এ বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন ও তার মামলা করা আদালতের রায় অনুযায়ী লোকনাথ বাবার জন্মস্থান কচুয়া বলে চিহ্নিত হয়। ১৯৭৮ সালে তৈরি লোকনাথ মিশনের দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট (এখন মাটিয়া থানা) কচুয়াই লোকনাথের প্রকৃত জন্মস্থান। আবার ১৯৮০ সালে গঠিত লোকনাথ সেবাশ্রম সঙ্ঘের পাল্টা দাবি, দেগঙ্গা থানার চাকলাই সেই পুণ্যস্থান, যেখানে ১৯৮১ সালে লোকনাথ মন্দির তৈরি হয়।


দুই জায়গার লোকেরাই তাদের এলাকা বাবার জন্মস্থান হিসেবে প্রচার করে, সেটা প্রচার করার জন্য তারা সেটা মন্দিরের গায়ে লিখেও রেখেছে। তবে গবেষণার মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়, যে কচুয়া ধামই বাবার জন্মস্থান। দু জায়গাতেই বাবার মন্দির আছে, আপনি চাইলে একদিনেই দুটি মন্দির দেখে নিতে পারেন, অনেক দর্শনার্থীরা সেটাই করে থাকে, ১৩ কি.মি দূরত্ব দুটি জায়গার মধ্যে, মোটামোটি ৪০ মিনিটের মত সময় লাগবে একটি জায়গা থেকে অন্য জায়গাটিতে যেতে।

কচুয়াতে আপনি সারা বছরই আসতে পারেন, সারা বছরই এখানে পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে, তবে জ্যৈষ্ঠ মাস এবং ভাদ্র মাসে লোকনাথ বাবার জন্ম ও মৃত্যু দিনে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়, তখন মেলা ও চলে বেস কিছুদিন ধরে। এখানে লোকনাথ বাবার মন্দির আরো কিছু মন্দির আছে দেখার মত এছাড়াও এখানে লোক নাথ বাবার বাল্যবন্ধু বেনীমাধব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িটিও দেখে নিতে পারেন। 

এখানে আসতে চাইলে আপনি শিয়ালদহ থেকে হাসনাবাদ লোকাল ধরে নামবেন কাঁকড়া - মির্জানগর স্টেশনে তারপর অটো ধরে নেমে পড়ুন কচুয়াতে ভাড়া ১০ টাকা। বাই রোড আসতে চাইলে টাকি বা বসিরহাট রোড ধরে স্বরূপনগর এবং তারপর অটো ধরে চলে আসুন মন্দিরে।


৪. চাকলা ধাম :- লোকনাথ বাবার জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক যে দুটি জায়গা নিয়ে, একটি হল কচুয়া ধাম, দ্বিতীয়টি হল এই চাকলা ধাম। যা এই জেলার বসিরহাট মহকুমার দেগঙ্গা ব্লকের অন্তর্গত। কচুয়া ও চাকলা দুটি জায়গার মধ্যে দূরত্ব প্রায় ১৫ কি.মি, আপনি চাইলে এক দিনেই এই দুটি জায়গা ঘুরে নিতে পারেন।

১৯৮০ সালে গঠিত হয় লোকনাথ সেবাশ্রম সংঘ, তাদের উদ্যোগেই ১৯৮১ সালে এই চাকলা লোকনাথ মন্দিরটি তৈরী হয়। তাদের দাবি অনুযায়ী এই চাকলা ধামই লোকনাথ বাবার জন্মস্থান। এরপর নিত্যগোপাল সাহা নামে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে মামলা করে, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে রায় অনুযায়ী কচুয়া ধামই লোকনাথ বাবার জন্মস্থান হিসেবে স্বীকৃত হয়। চাকলাতে আসলে লোকনাথ বাবার অসাধারণ কারুকার্যময় মন্দির আপনি দেখতে পাবেন, যা আপনাকে মুগ্ধ করে দেবে, এখানে প্রতিদিনই ভক্তদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যায়। এখানে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি আপনি কূপন কেটে প্রসাদ ও গ্রহন করতে পারবেন।

আপনি এখানে সরাসরি আসতে চাইলে বনগাঁ লোকাল ধরে নামতে হবে গুমা স্টেশনে অথবা হাসনাবাদ লোকাল ধরে নেমে পড়ুন হাড়োয়া রোড স্টেশনে সেখান থেকে অটো ধরে বেড়াচাঁপা মোড় হয়ে সোজা চলে আসুন চাকলা লোকনাথ মন্দিরে। সড়কপথে আসতে হলে বারাসত - হাবরা রোড ধরে গুমা মোড় থেকে ডান দিকে বদর হাট হয়ে এই চাকলা মন্দির। আর আপনি যদি কচুয়া হয়ে এখানে আসতে চান তাহলে কচুয়া থেকে অটো করে বেড়াচাঁপা মোড় তারপর আবার আরো একটি অটো করে এই চাকলা মন্দিরে।


৫. ধান্যকুড়িয়া, দ্যা ল্যান্ড ওফ জমিনদারস্ :- বসিরহাট শহরের খুবই কাছে মাটিয়া থানার অন্তর্গত টাকি রোডের ধারে ছোট্ট কিন্তু বর্ধিষ্ণু একটি গ্রাম এই ধান্যকুড়িয়া। ধান্যকুড়িয়া কে আরেক নামেও ডাকা হয় ভিলেজ অফ্ ক্যাসেল। এই বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে তিনটে বড় মাপের জমিদারবাড়ি ছাড়াও আছে তাদের প্রতিশ্রুতি মন্দির, স্কুল এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য টাকি রোডের ধারে গায়েন গার্ডেন। 


এই ধান্যকুড়িয়াতে আসলে তিনটি জমিদারবাড়ি আপনারা পেয়ে যাবেন দেখার জন্য যা ছোট্ট একটি গ্রামে খুবই উল্লেখযোগ্য ব্যাপার। জমিদারবাড়ি গুলো হলো 

১. গায়েনবাড়ি বা গায়েন ম্যানসন। প্রতিষ্ঠাতা মহেন্দ্র নাথ গায়েন।                        

 ২. বল্লভ বাড়ি প্রতিষ্ঠাতা শ্যাম বল্লভ।                   

 ৩. সাউবাড়ি বা সাউ ম্যানসন। প্রতিষ্ঠাতা পতিত চন্দ্র সাউ

এরা প্রত্যেকেই ছিলেন বড় মাপের পাট ব্যবসায়ী, পাট ব্যবসার টাকা থেকে তারা এইসব ভবন গুলো তৈরি করান ইউরোপিয়ান স্টাইলে। এখানে এখনো দুর্গা পূজা খুবই ধুম ধামের সাথে পালন করা হয়, তাই এখানে আসতে চাইলে অবশ্যই দুর্গা পূজার সময়ে আসবেন খুবই ভালো লাগবে, অন্য সময় আসলে জমিদার বাড়ি গুলোর ভিতরে প্রবেশ করতে অনেক অনুমতির দরকার হতে পারে, আপনি না ও অনুমতি পেতে পারেন ভিতরে ঢোকার। গায়েন গার্ডেনের বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ এখানে একটি হোম ও চলতো এখন এটিকে হেরিটেজ কমিশন থেকে সংস্কার করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, এর ভিতরে আপনি প্রবেশ করতে না পারলেও এই গায়েন গার্ডেনের ইউরোপীয় আদলে তৈরি গেটটি দেখে আপনি সত্যি অবাক হয়ে যাবেন। 


এখানে আসা খুবই সহজ আপনি টাকি বা বসিরহাট যাওয়ার পথেই এই জায়গাটি দেখে নিতে পারেন বারাসত- বসিরহাট রোড বা টাকি রোড একদম পাশেই এই গ্রাম ধান্যকুড়িয়া। ট্রেনে আসতে চাইলে নিকটবর্তী স্টেশন হলো কাঁকড়া - মির্জানগর বা মালতিপুর স্টেশন। আমাকে শিয়ালদা স্টেশন থেকে হাসনাবাদ লোকাল ধরে এই স্টেশন গুলোতে নামতে হবে।


৬. টাকি ট্যুর :- কলকাতা থেকে কাছে পিঠে এক বা দুদিনের ঘোরার জন্য টাকি কিন্তু বর্তমানে সবচেয়ে আদর্শ। বাংলাদেশ বর্ডারের একদম কাছে ইছামতী নদীর তীরে অবস্থিত টাকি কিন্তু এখন কলকাতা থেকে ট্যুরের আসার জন্য একটি বেস্ট উইকেন্ড ডেসটিনেসনে পরিণত হয়েছে।


উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার অন্তর্গত টাকি একটি খুবই সাজানো গোছানো, ছোট্টো একটি শহর। এই ব্লগে আপনি টাকি ভ্রমণের প্রায় ১৫ টি স্থান আপনাদের সামনে খুবই সংক্ষেপে তুলে ধরবো। আপনি টাকি ভ্রমন নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন, সমস্ত তথ্য দেওয়া আছে......

১. টাকি রাজবাড়ি ঘাট।

২. ইছামতী নদীতে নৌকা বিহার।

৩. টাকি রাজবাড়ি ( পূবের বাড়ি)

৪. টাকি তিন নদীর মোহনা।

৫. রাজবাড়ি দুর্গাদালান ।

৬. টাকি পিকনিক স্পট।

৭. মিনি সুন্দরবন ( গোলপাতার ফরেস্ট)

৮. রায়চৌধুরী জমিদার বাড়ি।

৯. গয়নার বাক্স সিনেমার শুটিং স্পট।

১০. বিসর্জন সিনেমার শুটিং স্পট।

১১. জোড়া শিব মন্দির।

১২. প্রাচীন ব্রিটিশ আমলের জলের ট্যাঙ্ক।

১৩. কুলেশ্বরী কালিবাড়ি।

১৪. ইছামতি রিভারসাইড।

১৫. ইকোপার্ক।


আপনারা টাকি দু ভাবেই ঘুরতে পারেন, এক একদিনেই সারাদিন ঘুরে আবার বিকেলের ট্রেনে ফিরে যেতে পারেন, এটাও ও কিন্তু খুবই জনপ্রিয় আর আপনি টাকিতে এক বা দু দিন থেকে পুরো টাকিটা এক্সপ্লোর করতে পারেন। শিয়ালদহ থেকে হাসনাবাদ লোকাল ধরে আপনি টাকি রোড স্টেশনে নেমে একটা টোটো রিজার্ভ করে জায়গা গুলো দেখে নিতে পারেন, বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন ওপরে দেওয়া লিঙ্কে...



৭. নৈহাটির বড় মা :- কালীপুজোয় উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ নৈহাটির বড়মা কালী । জেলার পাশাপাশি দেশ, এমনকি বিদেশ থেকেও ভক্তরা এই মন্দিরে আসেন মনস্কামনা পূরণের জন্য। আমাদের রাজ্যের যতো গুলো জাগ্রত ও বিখ্যাত কালি পূজা গুলো আছে তার অন্যতম এই নৈহাটি শহরের শতবর্ষের দরগোরায় পৌঁছে যাওয়া এই বড় মা কালি পূজা। নৈহাটির সবচেয়ে প্রাচীন কালী পুজো এটি । আজ তাই সেই কালীকে সকলে চেনেন বড়মা বলেই। নৈহাটির বড় মার নাম শুনেনি এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই মুস্কিল।


কালি পূজার সময়ে অত্যধিক ভিড় হয় এই পুজোয়, প্রতি বছর ২১ হাতের মূর্তি গড়ে মা পূজা করা হয়। কালি পুজো ছাড়াও সারা বছরই এখানে ভক্তরা এসে থাকে। বড় মা পূজার সবচেয়ে প্রধান আকর্ষন হলো মা এর বিসর্জন, যেটা দেখতে কয়েক হাজার মানুষ এখানে ভিড় করে। ভক্তরা যাতে সারা বছরই মায়ের দর্শন পেতে পারে সেইজন্য কমিটি থেকে মায়ের ব্রোঞ্জের প্রতিমা গড়া হচ্ছে। নৈহাটি স্টেশনের একদম কাছে অবস্থিত এই মন্দিরটি আপনি স্টেশনে নেমে পায়ে হেঁটেই চলে আসতে পারেন এই মন্দিরে।

৮. বড়িগ্রাম বা বড়িপাড়া :- নৈহাটি শহরের একদম কাছে দারুণ একটি ভ্রমণ স্থানের সন্ধান দেবো, যেখানে আসলে আপনাদের মন ভোরে যেতে বাধ্য, সোশ্যাল মিডিয়াল কল্যাণে অনেকেই হয়তো জায়গার সম্পর্কে জেনে গেছেন, গ্রামটির নাম আম্রপালি কিন্তু এখন এই গ্রামটির পরিচিতি বড়ি গ্রাম হিসেবে, যা পূর্ব ভারতের বৃহত্তম বড়িগ্রাম।

আমরা ছোট বেলা থেকেই দেখতাম বাড়ির মা দিদা ঠাকুমারা বড়ি তৈরি করছে, তবে সে বাড়িতে বড়ি তৈরি করার রীতি এখন প্রায় উঠেই গেছে, তার জায়গা দখল নিয়েছে বাজার থেকে কিনে আনা বড়ি, সেই বড়ি গুলো কোথায় তৈরি হয় জানেন? সেরকম একটি জায়গা নিয়ে এই পয়েন্ট। এই গ্রামের প্রায় ৩৫০ টি পরিবার বড়ি তৈরি করার সাথে যুক্ত। তাই বড়ি তৈরির পুরো প্রসেস আপনাকে দেখতে হলে এখানে আসতেই হবে, তবে সেটা আসতে হবে খুবই সকাল সকাল একদম ভোরে নাহলে ডাল ভাঙানো টা দেখা থেকে বঞ্চিত থেকে যাবেন।


এখানে আসলে দেখতে পাবেন মটর, বিউলি, খেসারি, কালাই ডালের রকমারি বড়ি পুরো গ্রাম জুড়ে তৈরি হচ্ছে এবং শুকনো হচ্ছে, যারা ফটোগ্রাফি করতে ভালো বাসেন তাদের ও এই জায়গাটি ভালো লাগবে। এবার আসি এখানে আসবেন কেমন করে, নৈহাটি স্টেশনে নেমেই ১ নাম্বার প্ল্যাটফর্ম দিয়ে বেরিয়ে যেকোনো টোটোওয়ালাকে বলবেন। বড়িপাড়া বা বড়িগ্রাম যাবেন ২০ টাকার বিনিময়ে আপনাকে নামিয়ে দেবে। আর হ্যাঁ শীতকালে আসলে এখানে ভালো।


৯. ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মস্থান :- নৈহাটি শহরের আরো একটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান হল সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মস্থান। যা নৈহাটি শহরের কাঁঠাল পাড়ায় অবস্থিত। নৈহাটি স্টেশন থেকে যার দূরত্ব মাত্র ৫০০ মিটার আপনি হেঁটে বা একটা টোটো ভাড়া করে খুবই সহজে এখানে চলে আসতে পারবেন।

নৈহাটির এই কাঁঠালপাড়ায় ২৬ শে জুন এক উচ্চবিত্ত সম্ভান্ত ব্রাহ্মন পরিবারে ঋষি বঙ্কিম চন্দ্রের জন্ম হয়। তার ছোটোবেলা থেকে শুরু করে তার লেখা অনেক সাহিত্য কর্ম রচিত হয়েছিলো এই বাড়িটির আনাচে কানাচে। বর্তমানে এই বাড়িটি বঙ্কিম গবেষণাকেন্দ্র ও মিউজিয়াম ও লাইব্রেরিতে রূপান্তরিত করা হয়েছে, এখানে এখন বঙ্কিম চন্দ্রের লেখা সমস্ত উপন্যাস ও গল্পকে গোটা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তার লেখা গুলোকে অনুবাদ করা শুরু হয়েছে। নৈহাটি একদিনের জন্য যদি ঘুরতে আসেন তাহলে এই তিনটি জায়গা থেকে একবারে ঘুরে যেতে পারেন।


১০. ব্যারাকপুর :- উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার শিল্পন্নত ব্যারাকপুর মহকুমা। ব্যারাকপুর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর আমল থেকেই সেনাবাহিনীর ব্যারাক ছিল, সেই থেকেই এই ব্যারাকপুর নামটি এসেছে, ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ বা মহাবিদ্রোহের সূত্রপাত কিন্তু এই ব্যারাকপুরের সেনানিবাস থেকেই হয়েছিলো। তাছাড়া ব্যারাকপুর আরো একটি কারণে আমাদের কাছে খুবই পরিচিত, সেটা হলো বিরিয়ানি, এই ব্যারাকপুর কে বিরিয়ানির শহরও বলা যেতে পারে, এই শহরে দাদা-বৌদি বা ডি-বাপির বিরিয়ানি ছাড়াও অসংখ্য বিরিয়ানির দোকান পেয়ে যাবেন। ব্যারাকপুর শহর বা তার আশেপাশে কিন্তু দেখার মত প্রচুর জায়গা আছে সেগুলো দেখে নিতে আপনার প্রায় এক থেকে দুদিন লেগেই যাবে। আসুন সেই জায়গা গুলো এক এক করে আমরা দেখে নি.......


১. অন্নপূর্ণা মন্দির :- ব্যারাকপুর ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্পট হল এই অন্নপূর্ণা মন্দির। দক্ষিনেশ্বর মন্দির বানানোর ২০ বছর পর ১৮৭৫ সালের ১২ই এপ্রিল এই মন্দির টি নির্মিত হয়.. রানী রাসমণি দেবীর কনিষ্ঠা কন্যা শ্রীমতি জগদম্বা দেবী এই মন্দিরটি স্থাপন করেন, ওনার স্বামী শ্রী মথুরমোহন বিশ্বাসের ইচ্ছা পূরণ করতে। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এই মন্দিরের উদ্বোধনের সময়ে এসেছিলেন। 


  হুবহু দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে তৈরি মন্দির তবে আকৃতি খানিকটা ছোটো, এবং শিব মন্দির ১২ টি জায়গায় ৬ টি আছে। পাশে নাট মন্দির ও আছে। এই মন্দিরের ঠিক পেছনেই আছে রানী রাসমনি ঘাট। ব্যারাকপুর এবং টিটাগড় দুটি স্টেশন থেকেই টোটো করে এখানে আসা যাবে। খুবই সুন্দর একটা মন্দির। 

২. মঙ্গল পাণ্ডে পার্ক :- ব্যারাকপুরের মঙ্গল পান্ডে পার্ক হল একটি সুন্দর পার্ক যা ব্রিটিশ অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারী প্রথম জাতীয়তাবাদী মঙ্গল পান্ডের সম্মানে নির্মিত হয়েছিল। মঙ্গল পাণ্ডে এই জায়গাটি থেকেই সিপাহী বিদ্রোহের সূত্রপাত করে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়েছিলেন। 

এই পার্কের অপর নাম “শহীদ মঙ্গল পান্ডে মহা উদ্যান”। এখানে সুন্দর সাজানো বাগান, মঙ্গল পাণ্ডেকে সম্মান জানিয়ে একটি মূর্তি এবং পাশেই আছে মঙ্গল পাণ্ডে ঘাট। খুবই সুন্দর একটা পরিবেশ নদীর ধারে বসে এখানে অনেকটা সময় কাটাতে পারবেন। 

৩. বার্থোলোমিউ ক্যাথেড্রাল :- বার্থোলোমিউ ক্যাথেড্রাল, যাকে গ্যারিসন চার্চও বলা হয়, ১৮৪৭ সালে নির্মিত হয়েছিল। এই ক্যাথেড্রালটি নির্মাণে গথিক স্থাপত্য ব্যবহার করা হয়

এই চার্চটি ব্রিটেনের অনেক গির্জার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কারণ এটি ব্রিটিশ স্থপতিরা যখন ব্যারাকপুরে বসবাস করছিলেন তখন এটি নির্মাণ করেছিলেন। মঙ্গল পাণ্ডে পার্ক থেকে বেড়িয়েই কিছু দূরেই এই চার্চটি অবস্থিত।

৪ . গাঁধী ঘাট :- অন্নপূর্ণা মন্দির থেকে কিছুটা দূরেই এই গাঁধী ঘাটটি অবস্থিত। মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুর পর তার চিতাভষ্ম ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিসর্জন দেওয়া হয়েছিলো, সেই জায়গা গুলোর মধ্যে একটি হল এই গাঁধীঘাট। জায়গাটি নামও সেই সময় থেকে হয়ে যায় গাঁধী ঘাট, জওহরলাল নেহেরু স্বয়ং তখন এখানে এসেছিলেন। তার পাশাপাশি এই ঘাটে গান্ধীজীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি সুদৃশ্য স্মৃতি স্তম্ভ ও নির্মাণ করা হয়েছে। 


৫. জওহর কুঞ্জ :- ব্যারাকপুরের গাঁধী ঘাটের ঠিক পাশেই অবস্থিত এই জওহর কুঞ্জ, যা প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর উদ্দেশ্যে নামাঙ্কিত। ব্যারাকপুর শহরের মধ্যে সপরিবার নিয়ে একদিনের জন্য ছুটি কাটানো এবং পিকনিক করার জন্য আদর্শ জায়গা এই জওহর কুঞ্জ। সুন্দর, সুদৃশ্য, সাজানো বাগান, পাশেই বয়ে চলেছে হুগলি নদী, সত্যি এক মনোরম পরিবেশ, এখানে বাচ্চাদের জন্য ও আলাদা করে পার্ক আছে, তাই বাচ্চাদের নিয়ে কোনো অসুবিধা হবে না। 


৬. লর্ড ক্যানিং স্ট্যাচু ও লেডি ক্যানিং এর সমাধি :- ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল এবং প্রথম ভাইসরয় লর্ড ক্যানিং এর স্ত্রী সমাধি আছে এই ব্যারাকপুরেই, পাশেই আছে লর্ড ক্যানিং এর এক পূর্ণাবয়ব মূর্তি। লেডি ক্যানিং বা 

লেডি-ক্যানি আমাদের কাছে বেশি পরিচিত এক মিষ্টান্নের জন্য, লেডি-ক্যানি নামে এই মিষ্টান্নটি তার স্ত্রী লেডি ক্যানিং এর নামেই রাখা হয়েছিলো। এই এরিয়া গুলো, যেহেতু পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের ভিতরে তাই এই জায়গাটিতে আপনি পুলিশ বা আর্মি থেকে পারমিশন না নিয়ে ঢুকতে পারবেন না।

৭. গাঁধী মিউজিয়াম :- ব্যারাকপুর ধোবি ঘাটের খুবই কাছে গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়ামটি অবস্থিত। এখানে মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কিত বিভিন্ন ছবি, ঘটনা এবং ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা, দুষ্প্রাপ্য ছবি এখানে এলে দেখতে পাবেন। ছবি তোলার কোনো অনুমতি দরকার নেই, কিন্তু ভিডিও করতে গেলে অনুমতি লাগবে, প্রবেশ মুল্য ১০ টাকা, বুধবার বাদে প্রতিদিন খোলা থাকে।

৮. রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবন :- ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম কলকাতাতে হলেও তার জীবনের অনেকটা বছর বিশেষ করে শেষ কয়েকটা বছর তিনি ব্যারাকপুরের মনিরামপুরে কাটিয়েছিলেন। তিনি নিরিবিলি, নির্জন পরিবেশে থাকতে ভালোবাসতেন সেইজন্যই কলকাতার খুবই কাছে গঙ্গার ধারে ব্যারাকপুরের মনিরামপুরকে পছন্দ করেন, এখানেই তিনি তার ভবন নির্মাণ করেন। গাঁধীজী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বড় বড় ব্যক্তি স্বাধীনতা সংগ্রামী তার বাড়িতে এসেছিলেন। তার মৃত্যুর তার এই বাড়িতেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়। এবং এরপর তার ভবনের কিছুটা অংশ নিয়ে ব্যারাকপুরের রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজ গড়ে ওঠে। বর্তমানে এই বিল্ডিং টিকে হেরিটেজ কমিশন থেকে হেরিটেজ বিল্ডিং হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে।


৯. ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট :- এই ক্যান্টনমেন্ট এবং ব্যারাকপুর শহর দুটি একে অপরের পরিপূরক। এই ক্যান্টনমেন্ট ছিল বলেই এই শহরটি গড়ে উঠছিল। এই ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট দেশের প্রাচীনতম ক্যান্টনমেন্ট। এই ব্যারাকপুর শহরের অনেকটা এবং বহু দর্শনীয় স্থান এই ক্যান্টনমেন্টের মধ্যেই অবস্থিত। ব্রিটিশ শাসন চলা কালীন ভারতের প্রাচীনতম এবং প্রধান সেনা নিবাস ছিল ব্যারাকপুর। ক্যান্টনমেন্টটি সবুজ গাছ এবং লতা দ্বারা বেষ্টিত। আগে এখানে ব্রিটিশদের আর্মি ক্যান্টনমেন্ট ছিল বর্তমানের ইন্ডিয়ান আর্মির। খুবই সুন্দর ভাবে maintain করা এই পুরো এলাকাটি আপনাদের আসলে যথেষ্ট ভালই লাগবে।



১১. বনগাঁ :- বনগাঁ উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সীমান্ত মহকুমা শহর, তার সাথে সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র। স্বাধীনতার পূর্বে এই পুরো বনগাঁ মহকুমা যশোর জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল, দেশভাগের সময়ে বনগাঁ মহকুমাকে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সাথে যুক্ত করে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বনগাঁর পেট্রাপোল বর্ডার থেকে যশোরের দূরত্ব মাত্র ৫০ কি.মি আপনি বাইরোড বা ট্রেনে দুভাবেই এই বর্ডার হয়ে যশোর বা বাংলাদেশ যেতে পারেন উল্টো দিকেই আছে বাংলাদেশের বেনাপোল। আজকে এই পয়েন্টে আমরা বনগাঁ শহর ও আসে পাশের কিছু দর্শনীয় স্থান নিয়ে আলোচনা করবো আপনারা যদি একদিনের ট্যুরে কোনো দিন এই বনগাঁ এসে থাকেন তাহলে আপনাদের যথেষ্টই কাজে লাগবে। সবচেয়ে ভালো হবে বনগাঁতে এসে একটা টোটো রিজার্ভ করে নিয়ে সারাদিনের জন্য জায়গা গুলো ঘুরে নিন। মোটামোটি ৬ থেকে ৭ টা সুন্দর জায়গা আপনারা আসে পাশে পেয়ে যাবেন ।

১. সাত ভাই কালি মন্দির :- কথিত আছে বনগাঁ শহরের এই জাগ্রত সাতভাই কালি মন্দিরে নাকি মানত করলে মনবাসনা পূর্ন হয়। জানা যায় কয়েকশো বছর আগে সাত ভাই যারা আদতে ডাকাত ছিল তারা এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ও পরে তারা এই মন্দিরে পুজো অবশ্যই দিতেন। এটি পুরনো বনগাঁর রামনগর রোডের ওপর ইছামতী নদীর একদম ধারে অবস্থিত।


২. বিভূতিভূষণ স্মৃতি ঘাট :- ইছামতী ঝুলন্ত সেতুর ঠিক পাশেই আছে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতি ঘাট। এই ঘাটে সুন্দর একটি সাজানো বাগান আছে, শীতকালে আসলে অনেক ধরণের ফুলের সমারোহ দেখতে পাবেন এবং তার সাথে সাথে আছে বাগানবাড়িও আছে।

৩. বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি :- এরপর দেখে নিবেন সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোপানগরে স্থিত তার পৈত্রিক বাড়ি। এই বাড়িতেই তার জন্ম হয়েছিলো। চারদিকে অসংখ্য গাছ গাছলা দিয়ে ঘেরা ঘেরা ছোট্ট একতলা বাড়িটি পথের পাঁচালির শ্রষ্টা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। এই বাড়িতে বসেই কিন্তু তিনি "পথের পাঁচালির" , "ইছামতি" মত বিখ্যাত উপন্যাস গুলো লিখেছিলেন। এখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে বেরিয়ে পড়ুন পরের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।

৪. রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি :- এবার দেখে নিন বনগাঁর ছয়ঘরিয়াতে অবস্থিত বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ সিন্ধু সভ্যতার (মহেন্জোদারো) আবিষ্কর্তা রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। বাড়ির ভিতরে রয়েছে পুরনো দুটি শিব মন্দির ও একটি দুর্গা মন্দির। বাড়ির কিছুটা অংশ ভালো অবস্থায় থাকলেও বাইরের কিছুটা অংশের অবস্থা খুবই খারাপ। এই রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ইছামতী নদীর ওপরে একটি ব্রিজের নামকরন হয়েছে। তার এই বাসভবনটি দেখার পাশাপাশি পাশেই ছয়ঘরিয়াতে একটি জোড়া শিব মন্দির আছে সেটাও দেখতে ভুলবেন না।


৫. বনগাঁ ভারত - বাংলাদেশ বর্ডার/ পেট্রাপোল বর্ডার:- ছয়ঘরিয়া গ্রামেই আছে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর পেট্রাপোল বর্ডার। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যতো আমদানি রফতানি হয় তার বেশিরভাগটাই এই বন্দর দিয়েই হয়, তার পাশাপাশি যতো মানুষ বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া তে আসে বা বাংলাদেশে যায় তার ও অনেকটা অংশ এই বর্ডার দিয়েই, পেট্রাপোলে একটি রেল স্টেশন ও আছে এই লাইন দিয়েই কলকাতা থেকে খুলনা পর্যন্ত বন্ধন এক্সপ্রেস যাতায়াত করে। এই বর্ডারের আরো একটা আকর্ষন হল এখানে ওয়াঘা বর্ডার মত বর্ডার রিট্রিট হয়ে থাকে প্রতিদিন বিকেল ৩ টাতে, তাই এটা দেখতে কিন্তু কোনো মতেই ভুলবেন না।


৬.বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য :- বনগাঁ শহর থেকে প্রায় ২৫ কি.মি দূরে ইছামতী নদীর তীরে অবস্থিত পারমাদান ফরেস্ট যার বর্তমান নাম বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য।

এখানে প্রচুর চিত্রা হরিণ দেখা যায়। অভয়ারণ্য তৈরির শুরুতে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে প্রথমে চারটি চিত্রা হরিণ আনা হয়। ১৯৬৫ সালে সেখানে ৩টি নবজাতকসহ মোট ১৫টি চিত্রা হরিণ ছিল। ১৯৮৬ সালে সেখানে ২০১টি চিত্রা হরিণ ছিল। অভয়ারণ্য ছাড়াও এই অঞ্চলে আরো বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্যের পাশ দিয়ে বহমান নয়নাভিরাম ইছামতী নদী। ইছামতীর অন্য পারে অর্থাৎ অভয়ারণ্যের বিপরীতে রয়েছে উপজাতি-অধ্যুষিত ছোট্ট গ্রাম মঙ্গলগঞ্জ। নদীর ধারে অবস্থিত মঙ্গলগঞ্জ গ্রামে বিশেষত শীতকালে বিভিন্ন এলাকার ভ্রমণপ্রিয় মানুষ ভিড় জমান । মঙ্গলগঞ্জের পার্ক একটি অসাধারণ পিকনিক স্পট। এছাড়াও এই মঙ্গলগঞ্জে নিলচাষীদের উপর ব্রিটিশদের অবর্ণনীয় অত্যাচারের চিহ্ন ধারণ করে টিকে রয়েছে ধ্বংসপ্রায় নীলকুঠি।


কলকাতা থেকে সড়কপথে প্রায় ১১০ কিলোমিটার, নয় নয় করে সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ। ট্রেনে যেতে চাইলে নামতে হবে বনগাঁ অথবা রানাঘাট স্টেশনে। স্টেশন থেকে বাস কিংবা ভাড়া করা গাড়িতে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া পারমাদন ফরেস্টে। 

১২. বরানগর :- উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার কলকাতা লাগোয়া শহর বরানগর। এই বরানগর দেখার মত বেশ কয়েকটি জায়গা, জায়গা গুলো অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী বহন করে আছে। আমি জায়গা গুলো এক এক আপনাদের সামনে সংক্ষেপে তুলে ধরছি -

১. শ্রী শ্রী কাঁঠাধারি মঠ :- এই মঠটি ১৬ শতকের প্রথমার্ধে হুগলি নদীর একদম ধারে নির্মিত করা হয়েছিলো। শোনা যায় চৈতন্যদেব যখন পুরী যাওয়ার উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করেছিলেন তখন যাওয়ার পথে এই মঠে এসেছিলেন। এছাড়াও স্বাধীনতার আন্দোলনের সময়ে বহু বিপ্লবী কার্যকলাপের সাক্ষী ছিল এই মঠ।

২. সতীদাহ ঘাট :- শতীদাহ প্রথার সাথে এই ঘাটের গভীর সম্পর্ক ছিল সেই থেকেই নামটি এসেছে। পূর্বে এখানে বর্বরিত শতীদাহ প্রথা এখানে সংগঠতিত হতো। একবার রাজা রামমোহন রায় নদী পথে এই ঘাটের পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে তিনি এগুলো দেখতে পান, এরপর তার উদ্যোগে মেয়েটি মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায় এরপর থেকেই ঘাটটির নাম হয়ে যায় সতীদাহ ঘাট, এখানে রাজা রামমোহন রায়ের একটি মূর্তি ও বসানো আছে।




৩. কুটিঘাট :- ঐতিহাসিক গুরুত্বের দিক থেকে জায়গা হলো এই কুটিঘাট। কুটিঘাট কথাটি এসেছে কুঠি থেকে, পূর্বে এই এলাকা ডাচদের অধিকারে থাকায় তারা ব্যবসার জন্য ঘাটে কতগুলো কুঠি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা এই জায়গাটি দখল করে নিলে তারা কুঠি গুলোতে তাদের সরকারি দপ্তর স্থাপন করে, এখনো এখানে আসলে সেই কুঠি গুলো দেখতে পাবেন।


৪. বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন :- বরানগরের আরো একটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান হল বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন। এটাই রামকৃষ্ণ মিশনের প্রথম মঠ ও প্রধান কার্যালয় ছিল। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত ১৮৮৬ থেকে প্রায় সাত বছর এই মঠ রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান কার্যালয় ও দফতর ছিল। স্বামী বিবেকানন্দ থেকে শুরু করে আরো অন্যান্য সন্ন্যাসীগণ এই মঠেই বাস করে গেছেন।




৫. বরানগর রাজবাড়ি :- বরানগরের আরো একটি ঐতিহ্যশালী স্থান হল বরানগর রাজবাড়ি। জমিদার পুলিন বিহারী রায়। রতন বাবু রোডে এই বিশাল জমিদারবাড়িটি নির্মাণ করেন জমিদার পুলিন বিহারী রায়। এই বাড়িটি আজও বরানগরের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এর পাশাপাশি এখানে আছে রাজবাড়ির ই বিভিন্ন মন্দির।


৬, এছাড়াও বরানগরে আছে দেখার মত মহামিলন মঠ কিছু কালি মন্দির ও ঘাট।

১৩. মূলাজোর কালিবাড়ি :- উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ভাটপাড়া পৌরসভার অন্তর্গত শ্যামনগর, এই শ্যামনগরের এক উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান হল মূলাজোর কালিবাড়ি যা একদম হুগলি নদীর ধার বরাবর নির্মাণ করা হয়েছিলো। এই জায়গাটির এবং কালিবাড়িটির বহু পুরনো ইতিহাস আছে।

কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তার সভাসদ ভারতচন্দ্র রায়কে শ্যামনগরের এই মূলাজোর জায়গাটিকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন তার সাথে সাথে তাকে "রায়গুণাকর" উপাধিও দিয়েছিলেন, তার স্মৃতিতেই এখানে ভারত চন্দ্র লাইব্রেরি তৈরি করা হয়েছে।


এছাড়াও এই মূলাজোরের আরো একটা ইতিহাস আছে, রবীন্দ্রনাথের পরিবারের এক সদস্যের দ্বারা এই মূলাজোর কালিবাড়ি, প্রতিষ্ঠা হয় আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে, কারণ ঠাকুর/ কুশারী বংশের সাথে এই জায়গাটির কোনো একটা যোগসূত্র ছিল। মন্দিরের ঠিক পাশেই আছে রবীন্দ্র ভবন অডিটোরিয়াম ও কালিবাড়ি রবীন্দ্র পার্ক।

১৪. গোবরডাঙ্গা:- 

১. প্রসন্নময়ী কালি মন্দির :- উত্তর চব্বিশ পরগনার গোবরডাঙ্গাতে যদি আসেন তাহলে প্রথম যে জায়গাটিতে আপনাদের অবশ্যই যাওয়া উচিৎ সেটা হলো কয়েকশো বছরের পুরনো মা প্রসন্নময়ী কালি মন্দির। ১৮২২ সালে জমিদার কালিপ্রসন্ন মুখ্যোপাধ্যায় এই কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠা করেন। এই দক্ষিণ মুখী কালি মন্দিরের ভেতরে কষ্টি পাথরের মা কালির একটি মূর্তি আছে, আর দুপাশে আছে দ্বাদশ শিব মন্দির। গোবরডাঙ্গা স্টেশনে নেমেই টোটো ও ভ্যান স্ট্যান্ড পেয়ে যাবেন, স্টেশন থেকে এই মন্দিরের যেতে প্রায় ১০ মিনিটের মত সময় লাগে।

২. গোবরডাঙ্গা রাজবাড়ি :- গোবরডাঙ্গা প্রসন্নময়ী কালিবাড়ির পাশেই রয়েছে গোবরডাঙ্গা রাজবাড়ি বা মুখার্জি রাজবাড়ি। মুখোপাধ্যায় পরিবারের আদি বাসভূমি ছিল বর্তমানে বাংলাদেশের যশোরে, তারপর তারা কোনো কারণে এই গোবরডাঙ্গাতে এসে বসবাস শুরু করে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদেরকে কিছু জমি দান করে সেই থেকেই পথ চলা শুরু হয় এই গোবরডাঙ্গা রাজবাড়ি বা জমিদারবাড়ির।

৩. বাওর :- গোবরডাঙ্গার বিখ্যাত তার বাওরের জন্য। বাওর কথার অর্থ জলাশয়। যার মধ্যে একটি হল কঙ্কনা বাওর এবং বেরী বাওর।বেরী বাওরের নিমাই ঘাট থেকে আপনি এখানে নৌকা বিহার ও করতে পারেন। পাঁচপোতা বাজার থেকে এর দুরত্ব মাত্র ৫ মিনিট। এছাড়াও এই গোবরডাঙ্গাতে দেখার মত আরো কিছু পেয়ে যাবেন, সারাদিনের জন্য ভালো একটা ট্যুর হবে আপনাদের।



Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন