হুগলি জেলার জনপ্রিয় ৫০টি দর্শনীয় স্থান 50 Best Tourist Places of Hooghly District.

 - :হুগলি জেলার ৫০টি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান :-

ভ্রমন পিপাসু :- পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনের মানচিত্রে খুবই আকর্ষনীয় একটা জেলা এই হুগলি। তাই এই পর্যটনের দিক থেকে আকর্ষনীয় এই জেলার সবগুলো আকর্ষনীয় ৫০ টি জায়গা আজকে আমি এই ব্লগে তুলে ধরবো। এত গুলো জায়গার সন্ধান এক ব্লগে আপনারা পাবেন না। এত বড় জেলা এই হুগলির আপনি যেকোনো ব্লকের ছোট বড় শহর বা গ্রামে গেলেই বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, পুরোনো নতুন মন্দির পেয়ে যাবেন। তাই এক বা দুবার এসে এই হুগলি জেলার দর্শনীয় স্থান গুলো কভার করা কোনো দিনই সম্ভব না। তাই আপনাদের ভ্রমনের সুবিধার্থে এত বড়ো জেলাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে হুগলি জেলার গুরুত্বপূর্ন সমস্ত জায়গাগুলো কেমন করে ঘুরে নিতে পারেন তার একটা ভ্রমণ প্ল্যান আপনাদের এই ব্লগে দেওয়ার চেষ্টা করবো।

তার আগে হুগলি জেলার ইতিহাস এবং ভৌগলিক পরিস্থিতি আমরা যদি কিছুটা জেনে রাখি তাহলে আমাদের সুবিধাই হবে। বর্ধমানের দক্ষিণাংশকে বিচ্ছিন্ন করে ১৭৯৫ সালে ইংরেজরা প্রশাসনিক কারণে হুগলি জেলা তৈরি করে ছিল। হাওড়া তখনও হুগলি জেলার অংশ ছিল। জেলা বলতে কতগুলি থানার সমষ্টি। মহকুমার ধারণা তখনও জন্ম নেয়নি। এই জেলার দক্ষিণাংশ নিয়ে হাওড়া স্বতন্ত্র জেলা হিসাবে দেখা দিয়েছিল ১৮৪৩ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি। ১৮৭২ সালের ১৭ জুন ঘাটাল ও চন্দ্রকোনা থানা মেদিনীপুরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। এবং বর্তমান যে হুগলি জেলা দেখতে পাই সেই রূপ ধারণ করে। চুঁচুড়া শহরে এই জেলার সদর দফতর অবস্থিত। হুগলি জেলা চারটি মহকুমায় বিভক্ত চুঁচুড়া সদর, চন্দননগর, শ্রীরামপুর ও আরামবাগ।

হুগলি জেলাকে ভ্রমণ মানচিত্রে ফেলে কয়েকটি ভাগে বা সার্কিটে যদি ভাগ করে যদি নিতে পারেন তাহলে খুবই সুবিধা আপনাদের হবে..

ব্যান্ডেল - চুঁচুড়া সার্কিট :- এক রাত থেকে আপনারা অথবা এক বা দু দিনের জন্য এই ব্যান্ডেল - চুঁচুড়া কে কেন্দ্র করে আসেপাশের অনেকগুলো জায়গাকে একসাথে দেখে নিতে পারেন...

১. ব্যান্ডেল চার্চ :- আমাদের রাজ্যের প্রাচীনতম চার্চ হল ব্যান্ডেলের এই চার্চ। যা ব্যান্ডেল চার্চ হিসেবেই সকলের কাছে পরিচিত এবং যার অবস্থান একদম ব্যান্ডেল শহরের মধ্যেই অবস্থিত। এই চার্চের প্রতিষ্ঠাকাল ১৫৯৫ খ্রিস্টাব্দ বলে মনে করা হয়। এই চার্চের সাথে কিন্তু অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে, যাইহোক সেদিকে আর না গিয়ে এখানে আসার ব্যাপারে বলে রাখি আপনি স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড বা শহরের যেকোনো জায়গা থেকে ১০ টাকার টোটো ভাড়ার বিনিময়ে সহজে এখানে চলে আসতে পারেন। বড়দিনের সময়ের কিন্তু ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পন্ন এই চার্চকে খুবই সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়।

Bandel Church 

২. আর্মেনিয়ান চার্চ, চুঁচুড়া :- ব্যান্ডেল চার্চ যদি বাংলার প্রাচীনতম চার্চ হয়ে থাকে তাহলে বাংলার দ্বিতীয় প্রাচীনতম চার্চ কিন্তু এই হুগলিতেই আছে সেটা হল চুঁচুড়ার আর্মেনিয়ান চার্চ। সালটা ছিলো 1695 চুঁচুড়ার শেষ ডাচ গভর্নর ড্যানিয়েল অ্যান্টনি ওভারবেক এই চার্চের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, তৎকালীন আর্মেনিটোলা বর্তমানে মোগলটুলি এলাকায়।

এই চার্চে 25 ডিসেম্বর বড়দিন পালন হয়না, পালন হয় 6 ই জানুয়ারি। কারণ 6 ই জানুয়ারি সেন্ট জন কর্তৃক ব্যাপ্টিসম বা শুদ্ধিকরণ লাভ করেন, প্রভু যীশু, সেইজন্য ওইদিনই প্রভু যীশুর জন্মদিন ধরে বড়োদিন পালন করে আর্মেনিয়ানরা। এই চার্চের পাশাপাশি আরো অন্য অন্য সব আর্মেনিয়ান চার্চেও এই দিনই প্রভু যীশুর জন্মদিন পালন করে আর্মেনিয়ানরা। সেইদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে আর্মেনিয়ানরা এই চার্চে এসে প্রার্থনা করলেও সেইদিন চুঁচুড়া বাসি তথা সাধারণ মানুষের প্রবেশের অনুমতি মেলে না। এই চার্চে সাধারণ মানুষের প্রবেশে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

৩. চুঁচুড়ার ইমামবাড়া :- চুঁচুড়া শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনস্থল হল এই ইমামবাড়া। যা চুঁচুড়া শহরের একদম হুগলি নদীর ধারে অবস্থিত। এটি মুলত শিয়া মুসলিম ইমামবাড়া ও মসজিদ। ১৮৪১ সালে মুহম্মদ মহসীন ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন এবং ১৮৬১ সালে শেষ করেছিলেন। ভবনটি দোতলা যার প্রবেশদ্বারের উপরে একটি দীর্ঘ ঘড়ির টাওয়ার আছে। 

Imambara, Chinchura. 

হুগলি ইমামবাড়া বিখ্যাত তার ঘড়ির জন্য। এটি মূল প্রবেশপথের দ্বারে নির্মিত দুটি টাওয়ারের মাঝখানে অবস্থিত। আপনি যদি হুগলি ঘাট স্টেশনে নামেন তাহলে পায়ে হেঁটেই চলে আসতে পারেন, ব্যান্ডেলে নামলে আপনাকে টোটো রিজার্ভ করে যেতে হবে।

৪. সুসানা আনা মারিয়ার সমাধি :- চুঁচুড়া - হুগলি ১৬৩৫-১৮২৪ এই সময়কালের মধ্যে ডাচ কলোনি ছিল। চুঁচুড়া হয়ে উঠেছিলো ডাচ বা নেদারল্যান্ডসের বনিকদের প্রধান কেন্দ্র। সুসানা আনা মারিয়া ছিলেন একজন ডাচ নারী অষ্টাদশ শতকে চুঁচুড়ার ডাচ এডমিনিস্টেসনের একজন বড় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা স্ত্রী ছিলেন এই সুসানা আনা মারিয়া। তার প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি দ্বিতীয় আরেকজনকে বিবাহ করেন। তিনি প্রচুর সম্পত্তির মালিক ছিলেন তার মৃত্যুর পর তার স্মৃতিতে ইন্দো-ডাচ স্থাপত্যের মিশ্রণে এই সমাধি সৌধটি নির্মাণ করা হয়। চুঁচুড়ার খাদিনা মোড়ের একদম কাছে চন্দননগর যাওয়ার রাস্তার ধারে এই সমাধি সৌধটি আছে। যেটি বর্তমানে ASI দেখাশোনার দায়িত্বে আছে।

Susana Ana Maria Tomb 

৫. ডাচ কবরস্থান :- চুঁচুড়া শহরে অবস্থিত ডাচ সিমেট্রি একটি বহু মূল্যবান ঐতিহাসিক স্থান গুরুত্বের দিক থেকে যদি বিচার করা যায়। সেই কারণে ASI থেকে এই জায়গাটিকে ঐতিহাসিক মনুমেন্ট হিসেবে সংরক্ষিত করা হয়েছে। এখান থেকে চাইলে একবার ঘুরে আসতে পারেন।

Dutch Cemetery. 

৬. শরৎচন্দ্রের জন্মস্থান :- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মস্থান হুগলি জেলার ব্যান্ডেলের কাছে দেবানন্দপুর গ্রামে। তাই একদিনে হুগলি চুঁচুড়া ভ্রমণের সাথে আপনি এই জায়গাটিও ঘুরে নিতে পারেন।

এখানে দেখার মত তার জন্মভিটে আছে যেটা বর্তমানে শরৎচন্দ্র স্মৃতি মন্দির নামে পরিচিত। এছাড়াও আসে পাশে আরো কিছু পুরনো মন্দির আছে যেগুলোও দেখে নিতে পারেন যেমন প্রাচীন দুর্গাদালান, রাধামাধব মন্দির, দোলমঞ্চ প্রভৃতি। ব্যান্ডেল জংশন থেকে মাত্র ২.৫ কি.মি দূরে এই জায়গা।

Birthplace of Sarat Chandra. 

৭. লাহিড়ি বাবার আশ্রম :- কলকাতা আসে পাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সুন্দর একটি মন্দিরে যদি আসতে চান তাহলে আপনাকে আসতে হবে ব্যান্ডেলের এই লাহিড়ি বাবার আশ্রমে। ব্যান্ডেলের দিল্লী রোডের একদম ধারে রাজহাটে এই মন্দিরটি অবস্থিত। এই মন্দিরের আরেক নাম আধারালয়।

বিখ্যাত যোগগুরু শ্যামচরন লাহিড়ি হলেন এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। এই আশ্রমে আসলে আপনাদের কিন্তু দারুণ লাগবে তার কারণ আশ্রমে খুবই সুন্দর ভাবে গোছানো এবং এবং যত্নসহকারে এর পরিচর্যা করা। ব্যান্ডেল স্টেশন এর দূরত্ব ৪ কি.মি মতো তাই এখানে আসা খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা না।

Lahiri Babar Ashram. 

বাঁশবেড়িয়া সার্কিট :- চুঁচুড়া - ব্যান্ডেল পুরো সার্কিট একদিনে ঘুরে নিয়ে আপনারা পরের দিন যেতে পারেন বাঁশবেড়িয়াতে। ব্যান্ডেলের ঠিক পরের স্টেশনটিই হলো বাঁশবেড়িয়া।

১. হংসেশ্বরী মন্দির :- বাঁশবেড়িয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনস্থল কিন্তু এই হংসেশ্বরী মন্দির। এই মন্দিরের গঠনশৈলী একদমই আলাদা বাকি আমদের দেশের মন্দিরের সাথে। মন্দিরে আছে মা হংসেশ্বরীর অপরূপ মূর্তি, মা হংসেশ্বরীর হলেন মা কালিরই একটি রূপ।

২. অনন্ত বাসুদেব মন্দির :- হংসেশ্বরী মন্দিরের পাশেই আছে টেরাকোটার কাজে সজ্জিত এক অসাধারন মন্দির অনন্ত বাসুদেব মন্দির । তার উল্টোদিকেই আছে জমিদারবাড়ি। শীতকালে এখানে যদি খুব সকাল সকাল আসেন তাহলে কিন্তু খেজুর গুড় তৈরি দেখতে পাবেন।

Hangsewari Temple. 

৩ . জাফর খা গাজির সমাধি :- এরপর বাঁশবেড়িয়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সোজা চলে আসুন ঠিক পরের স্টেশন ত্রিবেনী স্টেশনে। ত্রিবেনী স্টেশন থেকে টোটো ধরে সোজা চলে আসুন এই জাফর খা গাজির সমাধিতে। মনে করা হয় হুগলির ত্রিবেনীর জাফর খাঁ গাজীর সমাধিই বাংলা তথা অবিভক্ত বাংলার প্রথম মসজিদ।

Tomb of Jafar khan Gaji 

জাফর খাঁ গাজী ছিলেন দিল্লির সুলতানের সেনাপতি (সেই সময়ে আলাউদ্দিন খিলজি ছিলেন দিল্লির সুলতান) তিনি সেই সময়ে হুগলির সপ্তগ্রাম, ত্রিবেনী অঞ্চল থেকে হিন্দু রাজাকে পরাজিত করে মুসলিম শাসনের(1298-1313AD)সূত্রপাত করেন । 1298 তেই তিনি এখানে একটা মসজিদ নির্মাণ করেন, মনে করা হয় ওই স্থানেই একটা হিন্দু মন্দির ছিল যা ধ্বংস করেই এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়, যার ছাপ সুস্পষ্ট লক্ষ করা যায় এই মসজিদের দেওয়ালে।

পুরো ইতিহাস জানতে চাইলে এই ব্লগটি পড়ে নিতে পারেন -

৪. ত্রিবেনী সঙ্গম ঘাট :- এই ত্রিবেনী প্রাচীনকালে ভাগীরথী( গঙ্গা), যমুনা ও সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থল। এখনো এখানে মজে যাওয়া যমুনা ও সরস্বতী নদী দেখতে পাবেন। এই সঙ্গমেই আছে ত্রিবেনী ঘাট। এই জায়গাটিও যথেষ্ট সুন্দর। উল্টো দিকেই আছে কল্যাণী শহর। এই ঘাটে এ বছর থেকে শুরু হয়েছে বাংলার কুম্ভমেলা। যে মেলা প্রাচীনকালে এই ঘটে হয়ে আসতো জাফর খাঁ গাজীর আক্রমণের সময়ে তা বন্ধ হয়ে যায়।

৫. কুন্তীঘাট কাঠের ব্রিজ :- ত্রিবেনীর কাছেই আরো একটি সুন্দর জায়গা আছে আপনাদের যদি হাতে সময় থাকে তাহলে এই জায়গাটি থেকে বিকেল করে অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন। জায়গাটি হলো কুন্তীঘাটের কাঠের ব্রিজ।

Kuntighat Bridge. 

এটি একটি ঝুলন্ত ব্রিজ অনেক পুরনো প্রায় ব্রিটিশ আমলের হবে, এটি কুন্তী নদীর ওপরে তৈরী করা হয়েছিলো। এখানে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার কোন পারমিশন নেই তবে আপনি ১০ টাকার টিকিট কেটে পায়ে হেঁটে ব্রিজটি ঘুরে নিতে পারবেন। খুব সুন্দর ব্রিজটি আপনাদের কিন্তু বেশ ভালোই লাগবে। এখানে আসতে হলে আপনি ত্রিবেনীর ঠিক পরের স্টেশন কুন্তীঘাটে নামতে হবে তারপর পায়ে হেঁটেই এখানে চলে আসতে পারবেন।


বলাগড়-সোমড়াবাজার সার্কিট :- নেক্সট দিন আপনারা হুগলি জেলার আরো উত্তরে বলাগড়কে কেন্দ্র করে একদিনের জন্য আরো কিছু জায়গা ঘুরে নিতে পারেন, তবে এখানে আসলে অবশ্যই চেষ্টা করবেন শীতকালে এখানে আসার। চলুন দেখে নি আপনারা একদিনে কোন কোন জায়গাগুলো ঘুরে নিতে পারবেন....

১. সবুজদ্বীপ :- হুগলির আরো একটি সুন্দর জায়গার মধ্যে একটি হল এই সবুজদ্বীপ। সিনেমাতে যে সবুজদ্বীপ দেখে এসেছেন এই সবুজদ্বীপ সেই সবুজদ্বীপ না। এটি হুগলি ও বেহুলা নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত নদীর মধ্যবর্তী একটি চর। চরটি বর্তমানের গাছপালা দিয়ে ঘেরা সুন্দর একটি স্পটে পরিণত হয়েছে, তার পাশাপাশি এটি একটি পিকনিক স্পট যেহেতু তাই এর যে একটা সবুজের মাঝে শান্ত পরিবেশ ছিল সেটা আরো নেই।

এখানে পৌঁছতে হলে আপনাকে বলাগড় বা সোমড়াবাজার যেকোনো স্টেশনে নেমে পড়তে হবে। তারপর টোটো করে সোজা চলে আসুন ঘাটে, সোমড়াতে নামলে আপনারা রাস্তায় আরো অনেক কিছু দেখতে পাবেন। নৌকা ভাড়া আসা যাওয়া মিলিয়ে ২০০ টাকা। তাই একা আসলে একটু খরচা বেশী পড়বে। যেহেতু এটি পিকনিক স্পট হয়ে গেছে তাই অন্য সিজনে আসলে একটু ভিড়টা কম পাবেন। ভেতরে ঢোকার প্রবেশমুল্য ২৫ টাকা। ভেতরের পরিবেশটা আপনার যথেষ্ট ভালই লাগবে কিছু পুরোনো কটেজ ও দেখতে পাবেন।

২. রাধাকুন্জ/ মুস্তাফি জমিদারবাড়ি/ বিশ্বাসবাড়ি :- অনেক নামেই এই জমিদারবাড়িটিকে ডাকা হয়। আপনি যদি সোমড়াবাজারে নামেন তাহলে ঘাটে যাওয়ার পথে এই বাড়িটিকে দেখতে পাবেন।মুস্তাফি পরিবারের এই জমিদারবাড়ি।

৩. মা আনন্দময়ী কালি মন্দির :- হুগলি জেলার আরো একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পন্ন একটি মন্দির হল কিন্তু এই মন্দিরের কথা অনেকেই জানে না। রানী রাসমনী তার প্রিয় দক্ষিণেশ্বর মন্দির তৈরি করার ধারণা এই আনন্দময়ী মন্দির থেকেই পেয়েছিলেন। তিনি কলকাতা থেকে নদীপথে বারানসী যাওয়ার পথে এই মন্দিরটিকে দেখেছিলেন। ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে জমিদার বীরেশ্বর মুস্তাফি এই মন্দিরের নির্মাণ করেন।

Anandamoye Temple. 

৪. আরো কিছু মন্দির :- এই সোমড়াবাজারের আসে পাশে আরো কিছু মন্দির আপনারা দেখে নিতে পারেন একটা টোটো ভাড়া করে নিলেই। যেমন - সিদ্ধেশ্বরী কালি মন্দির, নিস্তারিনী কালি মন্দির, হরসুন্দরী মন্দির এছাড়াও আরো কিছু মন্দির আছে।

৫. গুপ্তিপাড়া :- সোমরাবাজার ঘুরে যদি হাতে সময় থাকে, সময় হয়তো পাবেন না, নাহলে পরের দিন চলে আসুন বলাগড় ব্লকের অন্তর্গত ৫০০ বছরের পুরনো বাংলার ইতিহাসের সাক্ষী এই গুপ্তিপাড়া থেকে। এই গুপ্তিপাড়াতেই বাংলার প্রথম বারোয়ারী দুর্গাপূজার সূচনা হয়েছিলো। এর পাশাপাশি এখানে দেখার মত কয়েকটি সুন্দর সুন্দর প্রাচীন মন্দির। এছাড়াও এই গুপ্তিপাড়া যে জন্য গোটা রাজ্যে বিখ্যাত সেটা হলো গুপো সন্দেশ।

Guptipara. 

গুপ্তিপাড়াতেই ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে প্রচলন হয়েছিলো বাংলার প্রথম বারোয়ারী দুর্গাপূজার যেটা বর্তমানে গুপ্তিপাড়ার বিন্দ্ধবাসিনী মন্দির। এছাড়াও এখানে আসলে আপনারা পেয়ে যাবেন গুপ্ত বৃন্দাবন অনেক গুলো বৈষ্ণব মন্দিরের সমষ্টি। যেমন - বৃন্দাবনচন্দ্র মন্দির, শ্রী চৈতন্যদেব মন্দির, শ্রী রামচন্দ্র মন্দির, শ্রী কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির। একত্রে সবগুলোকে গুপ্তিপাড়া মঠও বলা হয়ে থাকে। আর গুপ্তিপাড়া আসলে এখানকার বিখ্যাত গুপো সন্দেশ খেতে কিন্তু একদমই ভুলবেন না। বলাগড় থেকে দুটি স্টেশন পরেই এই গুপ্তিপাড়া স্টেশনে নেমেই একটা টোটো নিয়ে এই জায়গা গুলো দেখে ফেলুন।


শ্রীরামপুর :- ঘুরে আসুন পশ্চিমবঙ্গের মিনি ডেনমার্ক হিসেবে খ্যাত শ্রীরামপুর থেকে। সারাদিনে ঘোরার জন্য শ্রীরামপুর একদমই বেস্ট, পুরো একটা দিন আপনার প্রায় লেগেই যাবে এই শ্রীরামপুর ঘোরার ক্ষেত্রে, কারণ এখানে আছে অনেক কিছুই দেখার। এই পয়েন্টে সেই সব জায়গা গুলোও আমরা দেখে নেবো।

১৭৫৫ সালে বাংলার তৎকালীন নবাব আলীর্বদীর খান, কলকাতা থেকে প্রায় ২১ কি.মি দূরে হুগলি নদীর তীরে শ্রীপুর গ্রামে ড্যানিস এশিয়াটিক সোসাইটিকে প্রায় ৩ বিঘা জমি দিয়েছিলেন বাণিজ্য কেন্দ্র নির্মাণের জন্য। ডেনমার্কের তখনকার রাজা পঞ্চম ফ্রেডরিকস্ এর নামে তখন এর নাম রাখা হয়েছিলো ফ্রেডরিকস্ নগর। চলুন তাহলে এবার একে একে শ্রীরামপুরের কিছু উল্লেখযোগ্য দর্শনার্থী স্থান নিয়ে আলোচনা করা যাক।

১. শ্রীপুরের রামসীতা মন্দির এবং শ্রীরামপুর নামের উৎপত্তি।

২. মাহেশের রথ :- ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম রথের মেলা হল এই মাহেশের রথের মেলা। ১৩৯৬ সাল থেকে মাহেশের জগন্নাথ দেবের আরাধনা শুরু হয় এবং ধুমধাম করে এই মেলা আয়োজন হয়ে আসছে, যা আজ ৬২৬ বছরে পদার্পণ করেছে।

৩. শ্রীরামপুর কলেজ :- ভারতবর্ষের তৃতীয় প্রাচীনতম এবং বাংলার দ্বিতীয় প্রাচীনতম কলেজ এই শ্রীরামপুর কলেজ, যা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো ১৮১৮ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার ঠিক একবছর পর। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শ্রীরামপুর মিশনারীর তিনজন ব্যক্তি - উইলিয়াম কেরী।

৪. ডেনমার্ক ট্র্যাভার্ণ : - শ্রীরামপুরের নিশানঘাটের একদম পাশেই যেটা শ্রীরামপুরের প্রধান এলাকায় ১৭৮৬ সালে এখানেই ডেনমার্ক ট্র্যাভার্ণ তৈরি করা হয়েছিলো। এটা ছিল এক ধরণের রিসর্ট।

Denmark Trevern. 

৫. ড্যানিস গভর্নমেন্ট হাউস :- এই ভবনটি নির্মিত হয়েছিলো ১৭৭১ খ্রিস্টাব্দে। এটি ছিল শ্রীরামপুরের ড্যানিস প্রশাসনের প্রধানের বাসভবন ও অফিস।

Danis Governor House. 

৬. সেন্ট ওলাভ'স চার্চ :- শ্রীরামপুরের সবচেয়ে পুরোনো এই সেন্ট ওলাভ'স চার্চ, যা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো ১৮০৯ সালে।

St Olav Church. 

৭. শ্রীরামপুর রাজবাড়ি :- শ্রীরামপুরের আরো একটি জনপ্রিয় পর্যটনস্থল হলো এই শ্রীরামপুর রাজবাড়ি বা শ্রীরামপুর গোস্বামী বাড়ি। 'ভূতের ভবিষ্যৎ' সিনেমার শুটিং হওয়ার পর থেকে এই বাড়িটি পর্যটনস্থল হিসেবে আরো বেশী গুরুত্ব পেয়েছে।

Sreerampur Rajbari. 

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি, কোন্নগড় :- গঙ্গার ধার বরাবর যেকটি সুন্দর জায়গা আছে তার মধ্যে সবচেয়ে আদর্শ কোন্নগড়ের এই অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজোরিত বাগানবাড়ি। বর্তমানে এই বাড়িটিকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পৌরসভার উদ্যোগে। তারফলে ভেতরটা আরো সুন্দর হয়েছে, চারিদিকে গাছপালা দিয়ে ঘেরা সুন্দর একটা নিরিবিলি পরিবেশ তার সাথে পাখির কলতান, চারিদিকে অবনী ঠাকুরকে সমর্পণ করে সুন্দর সুন্দর হস্তশিল্প হতে আকাঁ সত্যি একটা অপূর্ব মায়াবী পরিবেশে আছেন বলে আপনার মনে হবে।

Konnagarh 

আপনি চাইলে শ্রীরামপুর শহরটা ঘুরে নিয়ে ওইদিন সময় থাকলে কোন্নগড়ের এই বাগান বাড়ি থেকেও ঘুরে যেতে পারেন। কোন্নগড়ে এসে আপনারা অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি দেখা ছাড়াও আরো কিছু দর্শনীয় স্থান দেখে ফেলতে পারেন যেমন, কোন্নগড় বারোমন্দির, শ্রী রাজ রাজেশ্বরী সেবামঠ প্রভৃতি।

চন্দননগর :- চন্দননগরের নাম কানে আসলেই দুটি কথা সর্বপ্রথম ভেসে আসে একটি হল চন্দননগরের আলোকসজ্জা এবং দ্বিতীয়টি জগদ্ধাত্রী পূজা। এটা বাদেও ঐতিহাসিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ন সম্পন্ন এই চন্দননগর ছিল ফরাসি উপনিবেশ। সেই কারণে এই শহরকে ফরাসডাঙ্গা হিসেবেও ডাকা হতো। একদিনে ঘুরে আসার জন্য চন্দননগর কিন্তু বেস্ট, এখানে অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর ট্যুরিস্ট প্লেস আছে, যেগুলো আপনারা সারাদিনে কভার করে নিতে পারবেন। যেহেতু এই চন্দননগর ১৯৫১ সাল পর্যন্ত ফরাসিদের উপনিবেশ ছিল তাই পুরো চন্দননগর এবং ট্যুরিস্ট প্লেস গুলোতে ফ্রান্সের ছোঁয়া পাবেন।

Chandannagar. 

চলুন তাহলে এক এক করে দেখে নি চন্দননগরে আসলে আপনারা কোন কোন জায়গা ঘুরে নিতে পারেন...

১. চন্দননগরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্ট্যান্ড ঘাট/ জোড়া ঘাট।

২. ফরাসী জেনারেল ডুপ্লের হাউস।

৩. চন্দননগর মিউজিয়াম।

৪. সেক্রেড হার্ট চার্চ।

৫. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজোরিত পাতালবাড়ি, যদিও ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়না।

৬. নন্দদুলাল মন্দির, এই মন্দিরের আসে পাশে আরো কয়েকটি মন্দির আপনারা দেখে ফেলতে পারবেন। 

তবে চন্দননগর আসার সবচেয়ে আদর্শ সময় হলো জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়। তখন আসলে চন্দননগরের চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা দেখে আপনি সত্যি অবিভূত হয়ে যেতে বাধ্য। আর একটা জিনিস চন্দননগরে আসলে চন্দননগরের মানকুন্ডুতে অবস্থিত বিখ্যাত সূর্যকুমার মোদকের দোকান থেকে নলেন গুড়ের জলভরা সন্দেশ খেতে ভুলবেন না। তার জন্য কিন্তু আপনাকে শীতে এখানে আসতে হবে।

জনাই -বাক্সা সার্কিট :- কলকাতার কাছে পিঠে বাইরোড বা ট্রেনে একদিনে ঘুরে আসার পক্ষে আরও একটি আদর্শ জায়গা হলো হুগলির জনাই। যা হুগলির চন্ডীতলা-2 ব্লকের অন্তর্গত। জনাই এর নাম শুনলেই যেকথাটি আমাদের সামনে সবার আগে আসে সেটা হলো এখানকার বিখ্যাত মিষ্টান্ন মনোহরা।কিন্তু এই ছোট্ট এলাকাটিতে আছে দেখার মত প্রচুর কিছু, তাই জনাই আসলে আপনাদের সারাটা দিন বেশ ভালোই কাটবে। জনাই বিখ্যাত বিভিন্ন বনেদি ও জমিদারবাড়ির দুর্গাপূজা, বিভিন্ন বনেদি পরিবারের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন মন্দির, দুর্গাদালান, জমিদারবাড়ি। চলুন তাহলে এক এক করে দেখেনি জনাইতে দেখার মত কি কি আছে....

Janai, Baxa 

১. কালিবাবুর বাড়ি/ জনাই রাজবাড়ি :- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ান মহারাজ কালিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এই জমিদারি ও জমিদারবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা। সেই কারণে এই বাড়িকে কালিবাবুর বাড়ি হিসেবেও ডাকা হয়। বহু বাংলা সিনেমার শুটিং হয়েছে এই বাড়িতে। এছাড়াও এখানে পেয়ে যাবেন ৭টি পিলার বিশিষ্ট ঠাকুরদালান এবং জোড়া শিব মন্দির।

২. বাক্সার চৌধুরী বাড়ি :- জনাই সংলগ্ন ছোটো একটি গ্রাম বাক্সা। এই বাক্সা বিখ্যাত চৌধুরী জমিদারবাড়ির জন্য। এই বাড়িতে দুর্গাপূজা ও দোলযাত্রা খুব বড় করে পালিত হয়।

৩. উমা বাড়ি বা বাজার বাড়ি :- জনাই এর আরো একটি প্রসিদ্ধ বাড়ি হল উমা বাড়ি, স্থানীয়রা একে বাজার বাড়ি বলেও ডাকে। দুর্গাপূজা এখানে ও ধুম ধাম সহকারে পালিত হয়।

৪. মিত্র বাড়ি :- জনাই - বাক্সা এলাকার আরও একটি বনেদি বাড়ি বলতে পারেন মিত্র বাড়ি। প্রতিষ্ঠাতা শ্রী রঘুনাথ মিত্র। মিত্র বাড়ির প্রতিষ্ঠিত একটি দুর্গা দালান ও রঘুনাথপুর জিউ মন্দির এখানকার দুটি দর্শনীয় স্থান।

এছাড়াও আরো কিছু দর্শনীয় স্থানপনারা এখানে আসলে পেয়ে যাবেন যেমন - ব্যানার্জি বাড়ি, ঠাকুর দালান, গোলাবাড়ির দুর্গামন্দির, আদি মুখার্জি বাড়ি,বাজার বাড়ি, জলা বাড়ি, কর্তা বাড়ি, সিংহ বাড়ি বাক্সার দ্বাদশ শিব মন্দির, এবং রাধাগোবিন্দ মন্দির। আর সবশেষে বলে রাখি জনাই আসলে এখানকার বিখ্যাত মনোহরা খেতে কিন্তু একদমই ভুলবেন না, জনাই আসলে এরকম অনেক ছোটো বড় মিষ্টির দোকান পেয়ে যাবেন। তবে এখানে আসার সবচেয়ে বেস্ট টাইম হচ্ছে দুর্গা পূজার সময়ে, কারণ এই সময়ে বিভিন্ন বনেদি বাড়ির দুর্গাপূজাতে গোটা জনাই সেজে ওঠে।হাওড়া - বর্ধমান কর্ড লাইনের ওপরে অবস্থিত জনাই রোড স্টেশন, স্টেশনে নেমে একটা টোটো রিজার্ভ করে ঘুরে নিন পুরো জনাই ও বাক্সা।

মগরা - পাণ্ডুয়া সার্কিট :- কলকাতা থেকে বাঁ হুগলি - ব্যান্ডেল থেকে একদিনের ট্যুরের জন্য ঘুরে আসতে পারেন হুগলি জেলার মগরা বা পান্ডুয়া থেকে। চলুন তাহলে জেনে নি কি কি দেখার জায়গা আছে আর কি ভাবে জায়গা গুলো আপনারা একদিনেই ঘুরে নিতে পারবেন।

হাওড়া, শিয়ালদহ বা হুগলি থেকে যেকোনো বর্ধমান মেন লাইন ধরে সোজা চলে আসুন মগরা স্টেশনে।

১. জটেশ্বর শিব মন্দির :- মগরা স্টেশনে নেমেই মহানাদের ট্রেকার বা টোটো ধরে নেমে পড়ুন এই জটেশ্বর মন্দিরে।

২. ব্রহ্মময়ী কালি মন্দির :- জটেশ্বর মন্দির দেখে তারপর চলে আসুন ব্রহ্মময়ী কালি মন্দিরে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরের একদার রানী রাসমনিও এসেছিলেন।

৩. জামগ্রাম জমিদারবাড়ি :- এরপর আবার ফিরে আসুন মগরা স্টেশনে এরপর উল্টোদিকে চলে আসুন এখান থেকেই আপনি জামগ্রাম যাওয়ার অটো পেয়ে যাবেন ভাড়া ২০ টাকা। ফেরার সময়ে সেই অটোওয়ালাকে বলে রাখলে সেই আপনাকে ড্রপ করে দেবে আবার মগরা স্টেশনে। কয়েক বিঘা জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই জমিদারবাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলে আপনি হারিয়ে যেতে পারেন, এতোটা বড়, কিন্তু বেস ভালো অবস্থায় আছে, এখানে ভেতরে দুর্গাপূজাও হয় দুর্গামন্দিরে।

৪. জামগ্রাম ঘোষ জমিদারবাড়ি :- জামগ্রাম জমিদারবাড়ির কিছু দূরেই আছে ঘোষ জমিদারবাড়ি এখানে ভেতরে সুন্দর একটা ঠাকুরদালান আছে।

৫. পাণ্ডুয়া মিনার ও মসজিদ :- এরপর যতো সম্ভব তাড়াতাড়ি স্টেশনে ফিরে ট্রেন লোকাল ধরে চলে আসুন পাণ্ডুয়া স্টেশনে, একটা টোটো নিয়ে চলে আসুন মেলার মাঠে এখানেই অবস্থিত দুটি দর্শনীয় স্থান পাণ্ডুয়া মিনার ও পার্শ্ববর্তী ২২ দরবাজা মসজিদ যেটি বর্তমানে ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

৬. ইটাচূনা রাজবাড়ি :- মগরা থেকে পাণ্ডুয়া যাওয়ার পথে মাঝে পড়বে একটি স্টেশন যার নাম খন্ন্যান, এই স্টেশনেই উত্তম কুমাররের বিখ্যাত সিনেমা নায়কের শুটিং হয়েছিল। যাইহোক এই খন্ন্যানে নেমেই আপনাকে যেতে হবে ইটাচূনা রাজবাড়ি। এই রাজবাড়িকে বর্গী রাজবাড়ি বলে। বর্গী আক্রমনের সময়ে অনেক বর্গী বা মারাঠা থেকে গিয়েছিলো তাদের মধ্যেই একটি পরিবার কুন্ডা পরিবার বর্তমানে কুণ্ডুতে পরিবর্তন হয়ে গেছে। 

তবে এখানে আসার জন্য আপনাকে আরো একটা দিন দিতে হবে কারণ এই রাজবাড়ি এখন হেরিটেজ হোটেলে পরিনত হয়েছে আপনাকে বুকিং ছাড়া ভিতরে প্রবেশ করতে দেবে না। ভেতরটা যথেষ্ট সুন্দর, দারুণ ভাবে ঘর গুলো সাজানো, কিন্তু একটু কষ্টলি।

তারকেশ্বর- দশঘরা :- জনাই এর পর হুগলি জেলার আরো একটি বর্ধিষ্ণু জনপদ হল দশঘরা। যা হুগলি জেলার ধনিয়াখালি ব্লকের অন্তর্গত। শোনা যায় পাল আমলে কোনো এক রাজা দশটি গ্রাম নিয়ে এই জনপদ গড়ে তোলায় এমন নাম হয়েছে। এই দশঘরার বিশ্বাস বাড়িতে শুটিং হয়েছিলো দেব অভিনীত ফুটবলের জনক নগেন্দ্র প্রসাদ সর্বাধিকারীর জীবন নিয়ে তৈরি সিনেমা গোলন্দাজের। দুটি বনেদী পরিবারে জমিদারবাড়ি তাদের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন মন্দির নিয়ে এই দশঘরা সত্যি একটা হেরিটেজ গ্রাম। আসুন জেনে নি এখানে কি কি দেখার জায়গা আছে।

Dasghara, Hooghly. 

১. বিশ্বাস বাড়ি :- দশঘরার সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবার হল এই বিশ্বাস পরিবার এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস ম্যানসন এই দশঘরার প্রধান আকর্ষন। জগমোহন দেব বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত এই জমিদারবাড়ি ভিক্টোরিয়ান আর্কিটেকচারে তৈরি করা হয়েছে, সামনেই আছে গোপিসাগর নামে একটি জলাশয়। জলাশয়ের উল্টো দিক থেকে বিশ্বাস বাড়ির সামনের অংশের এক সুন্দর ভিউ আসে। এই বিশ্বাস জমিদারবাড়ির কাছারীবাড়ি, ঠাকুরদালান, টেরাকোটার গোপিনাথ মন্দির, দোলমঞ্চ, রাসমঞ্চ, নাটমন্দির এগুলোকেও দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রাখতে পারেন।

২. রায়বাড়ি :- বিশ্বাস পরিবার বাদেও এই দশঘরাতে আরো একটি উচ্চবিত্ত পরিবারের বসবাস ছিল সেটা হলো রায় পরিবার। বিপিন কৃষ্ণ রায় আমলেই ভিক্টোরিয়ান স্টাইলে বাড়ির সম্মুখ ভাগে অবস্থিত সিংহদুয়ার এবং রায় ম্যানসনটি তৈরি করেন। এছাড়াও এই বাড়ির নিজস্ব ক্লক টাওয়ার গেট, রাসমঞ্চ, ঠাকুরদালান এগুলো এখানকার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

এগুলো বাদেও বসুবাড়ির দুর্গা মন্ডপ Bradley Brit সাহেবের বাংলো এবং তার সম্মুখভাগে অবস্থিত কৃষ্ণরায় ঝিল আপনারা দেখে নিতে পারেন। এই দশঘরাতে আসার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ট্রেন। আপনি হাওড়া থেকে ট্রেনে তারকেশ্বরে নেমে তারকেশ্বর থেকে বাস পেয়ে যাবেন এই দশঘরা আসার জন্য দূরত্ব তারকেশ্বরে থেকে মাত্র ১১ কি.মি।

তারকেশ্বর :- কলকাতা শহর থেকে প্রায় ৫৮ কি.মি দূরে অবস্থিত হুগলির তারকেশ্বর ধাম। দেবাধিদেব মহাদেবের এক পবিত্র তীর্থক্ষেত্র। এখানে আসার জন্য সরাসরি ট্রেনও আছে, হাওড়া থেকে আরামবাগের ট্রেন ধরে খুব সহজেই চলে আসতে পারবেন এখানে। 

Tarkeshwar. 

তারকেশ্বর শিবের মন্দির এই শহরের প্রধান পর্যটক আকর্ষণ। মন্দিরটি বাংলা আটচালা শৈলীর মন্দির। মন্দিরের সামনে একটি নাটমন্দির অবস্থিত। অদূরেই কালী ও লক্ষ্মী-নারায়ণের দুটি মন্দির রয়েছে। মন্দিরের উত্তরে অবস্থিত পুকুরটির নাম দুধপুকুর। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, এই পুকুরে স্নান করলে মনস্কামনা পূর্ণ হয়।

সারাবছরই তারকেশ্বর মন্দিরে পূণ্যার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। প্রতি সোমবার ও শ্রাবণ মাসে শ্রাবনী মেলাতে প্রচুর জনসমাগম হয়। এছাড়া ফাল্গুন মাসে শিবরাত্রি ও চৈত্র-সংক্রান্তিতে গাজন উৎসবেও বহু মানুষ আসেন। সমগ্র শ্রাবণ মাস জুড়ে প্রতি সোমবার শিবের বিশেষ পূজা হয়ে থাকে।

তারকেশ্বর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে একটি বৌদ্ধ মন্দির। এই স্থানটির নাম দেউলপাড়া। এটি হুগলি জেলার একমাত্র বৌদ্ধ মন্দির।

রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান :- ভারতের নবজাগরনের রূপকার রাজা রামমোহন রায়ের জন্ম কিন্তু এই হুগলি জেলায়। হুগলি জেলার খানাকুলের রাধানগর গ্রাম। এত গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা থেকে অবশ্যই আপনাদের একবার ঘুরে যাওয়া উচিৎ।

Radhanagar, Khanakul. 

এখানে দেখার মতো দু তিনটি জায়গা আছে।

১. রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান বা আতুঁরঘর বলতে পারেন। জায়গাটিকে বর্তমানে সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। উল্টো দিকেই আছে লন্ডনের ব্রিস্টলের আদলে নির্মিত সমাধি মন্দির।

২. বসতবাড়ি ও বাসস্থান :- জন্মস্থান থেকে কিছু দূরেই আছে রামমোহন রায়ের বসতবাড়ি। আপনাকে টোটো নিয়ে এখানে আসতে হবে। এই জায়গাটিকে বর্তমানে একটি পার্কে রূপান্তরিত করে দেওয়া হয়েছে, টিকিট কেটে ভেতরে ঢোকার পর রামমোহন রায়ের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাবেন যা এখন হেরিটেজ বিল্ডিং হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। এখানে ১৮১১ সালে রামমোহন রায়ের বৌদিকে সতীদাহ করা হয়, জায়গাটি একটি এখন একটি বেদী করে দেওয়া হয়েছে। এখান থেকেই রামমোহন রায় পন নেন সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ ছাদন করার জন্য। এছাড়াও রামমোহন রায়ের নামাঙ্কিত একটি স্কুল ও লাইব্রেরি আছে।

এখানে পৌঁছতে হলে সবচেয়ে ভাল হবে ট্রেনে আরামবাগ বা তারকেশ্বর পর্যন্ত এসে তারপর বাসে এই রাধানগর গ্রামে পৌঁছনো। তারকেশ্বরের সাথে সাথে এই রাধানগর গ্রাম ও একদিনে ঘুরে নিতে পারবেন। রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান দেখা ছাড়াও এই গ্রাম দুটি সুন্দর মন্দির এক - রাধাবল্লভ রাধাকান্ত মন্দির এবং গোপিনাথ মন্দির ও একসাথে দেখে ফেলতে পারেন। বাসে আসলে আপনাকে নামতে হবে কৃষ্ণনগর বাস স্টপেজে।


বৈচিগ্রাম :- প্রাচীনকাল থেকেই হুগলি জেলার এই ছোট্ট গ্রাম এক সমৃদ্ধ জনপদ ছিলো। এখানে দেখার মত প্রচুর মন্দির পেয়ে যাবেন গোটা গ্রাম জুড়ে। আর গ্রামের চারদিকে প্রচুর ছোট বড় শিবমন্দির দেখতে পাবেন, তার প্রধান কারন হল বর্গী/ মারাঠা আক্রমনের হাত থেকে বাঁচার জন্য। যেহেতু বর্গীরা শিবের উপাসক ছিলেন তাই তাই গ্রামে শিব মন্দির থাকলে তারা সেই গ্রামে আক্রমণ করতেন না। একদিনের ডে ট্যুরের জন্য কিন্তু এই বৈচীগ্রাম ভ্রমণ দারুণ একটা ট্রিপ হবে।

১ বারুল ভবতারিনী মন্দির :- একটু দূর থেকেই শুরু করি। বৈচি থেকে প্রায় ১০ কি.মি দূরে অবস্থিত বারুল গ্রাম এই গ্রামেই অবস্থিত একদম দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে নির্মিত মা ভবতারিনী মন্দির। যার টানেই প্রচুর পর্যটক এই গ্রামে এসে থাকে। আপনি আপনি বৈচি স্টেশনে নেমে অটো বা টোটো করে সোজা চলে আসতে পারেন অথবা কর্ড লাইনের গুরাপ স্টেশনে ও নামতে পারেন।

২. রাখাল রাজার মন্দির, জগৎ গৌরী মন্দির :- বৈচিগ্রামের সবচেয়ে পরিচিত মন্দির হল এই রাখাল রাজার মন্দিরটিও পাশেই অবস্থিত।

৩. মুখার্জি বাড়ি :- বৈচিগ্রামের এক উল্লেখযোগ্য নাম হলো বিহারীলাল মুখার্জি তার প্রতিষ্ঠিত বাড়িটি বর্তমানে স্কুল, হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। পাশেই তার ভাই রামলাল মুখার্জির প্রতিষ্ঠিত একটি জমিদারবাড়ি আছে।

৩. রাধাবল্লভ জিউ মন্দির :- বৈচিগ্রামের সম্ভ্রান্ত গোস্বামী পরিবারের প্রতিষ্ঠিত আরো একটি সুন্দর মন্দির হল এই রাধাবল্লভ জিউ মন্দির, প্রতিষ্ঠাকাল ১৬৪০ খ্রিস্টাব্দ।

৪. দাঁ বাড়ির মন্দির।

৫. গোপেশ্বর শিব মন্দির।

৬. রেখদেউল শিবমন্দির।

৭. লোকনাথ জিউ মন্দির ।

কামারপুকুর :- হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমার গোঘাট - 2 ব্লকের অন্তর্গত এই গ্রাম কামারপুকুর। এই কামারপুকুর নিয়ে বেশী কিছু হয়তো বলার দরকার পড়বে না, আমরা প্রায় সকলেই জানি এই গ্রামে রামকৃষ্ণ পরমহংসের পৈত্রিক বাড়ি ও জন্মস্থান অবস্থিত। রামকৃষ্ণ পরমহংসের স্ত্রী সারদা দেবীর জন্মস্থান জয়রামবাটী গ্রামও (বাঁকুড়া জেলার অন্তর্গত) কামারপুকুর গ্রামের কাছে অবস্থিত। যেহেতু এটি বাঁকুড়া জেলায় তাই এটা নিয়ে বাঁকুড়া জেলার ব্লগে আলোচনা করবো। দুটি গ্রামেই বেশীরভাগ দর্শনার্থী একসাথে ঘুরে আসে।

কামারপুকুরে দেখার মত আছে রামকৃষ্ণ স্মৃতি মন্দির, রামকৃষ্ণ মঠ আরো কিছু মন্দির আছে। ট্রেন আসতে চাইলে হাওড়া থেকে গোঘাট লোকাল ধরে গোঘাট স্টেশন অথবা আরামবাগ স্টেশনে বাইরোড এই কামারপুকুর আসতে হবে।


আঁটপুর সার্কিট :- একদিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন হুগলি জেলার আরো একটি সমৃদ্ধ জনপদ আঁটপুর থেকে, যা অবস্থিত হুগলি জেলার জাঙ্গিপাড়া ব্লকে। এটাই হলো সেই জায়গা যেখানে স্বামী বিবেকানন্দ সংসার ধর্ম ছেড়ে সন্ন্যাসী হওয়ার শপথ নিয়েছিলেন। আসুন জেনে নি একদিনের জন্য আঁটপুরে বেড়াতে এসে আপনারা কোন কোন জায়গা গুলো সারাদিনে দেখে নেবেন...

Antpur. 

১. আঁটপুর রামকৃষ্ণ মঠ :- বাংলার আধ্যাত্মিকতার এক পুন্যভূমি বলা চলে এই আঁটপুরকে। এখানেই রামকৃষ্ণ দেবের ১২ জন শিষ্য একসাথে শপথ নিয়েছিলেন। যার মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দ ও আছে।তাই এখানে একটি রামকৃষ্ণ মঠ গড়ে তোলা হয়েছে। ভেতরে বিভিন্ন মন্দির আছে কিন্তু ছবিতোলা নিষিদ্ধ।

২. স্বামী প্রেমানন্দের জন্মস্থান :- রামকৃষ্ণ দেবের অন্যতম প্রধান শিষ্য স্বামী প্রেমানন্দের জন্মস্থান এই গ্রামেই। এখানে তার পৈত্রিক বাড়ি ও আছে যেটা এখানকার একটি দ্রষ্টব্য স্থানের মধ্যে অন্যতম।

৩. আঁটপুর মন্দির বা রাধা গোবিন্দ জিউ মন্দির :- ১৮৮৬ সালে বর্ধমান মহারাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই গড়ে তোলা হয়। এই মন্দিরের আসে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আরো অনেক গুলো মন্দির এগুলো সবই আঁটপুরের ঘোষ ও মিত্র পরিবারে দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। যার মধ্যে আছে ৫ টি শিব মন্দির, রাসমঞ্চ, দোলমঞ্চ প্রভৃতি।

৪. দ্বারহাট্ট :- আঁটপুরের পাশেই অবস্থিত আরো একটি গ্রাম দ্বারহাট্ট যেটি হরিপাল ব্লকের অন্তর্গত। আঁটপুরের পাশাপাশি এই গ্রাম থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। এখানে দেখার মত আছে টেরাকোটার রাজরাজেশ্বরী মন্দির এবং আরো কিছু আটচালা বিশিষ্ট মন্দির। যেগুলো প্রতিষ্ঠা করেছেন সিংহ রায় বংশের পান্নালাল সিংহরায়।

৫. ব্রহ্মদত্ত ধাম :- আঁটপুর ঘুরতে এসে বনমালিপুরে অবস্থিত এই ব্রহ্মদত্ত ধাম থেকেও ঘুরে যেতে পারেন। নির্মাণ কার্য শুরু হয় ২০১৪ সালে, কাজ এখনো চলছে এর নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ মন্দিরে পরিণত হবে।

৬. ঘোষবাড়ি ও মিত্র জমিদার বাড়ি ও তাদের দুর্গা মন্ডপ ।

আঁটপুর পৌঁছতে হলে আপনি যদি ট্রেনে আসতে চান তাহলে নিকটবর্তী স্টেশন হলো হরিপাল। আপনি হাওড়া থেকে আরামবাগ বা তারকেশ্বরের ট্রেন ধরে নেমে পড়ুন হরিপালে। ব্রহ্মদত্তধাম আগে দেখতে চাইলে আপনাকে নামতে হবে বারুইপাড়া স্টেশনে।


গরলগাছা জমিদারবাড়ি :- কলকাতা শহরের খুব কাছেই আছে হুগলি জেলার আরো একটি সুন্দর জমিদারবাড়ি যেটা থেকেও আপনারা দিনে দিনেই চাইলে ঘুরে আসতে পারেন। জায়গাটি হল গরলগাছা জমিদারবাড়ি, লোকাল মানুষেরা যাকে বাবুদের বাড়ি বলেও চেনে। শ্বেতশুভ্র বাড়ির বাইরের অংশ এবং ভিতরে গেলেই দেখতে পাবেন চির পরিচিত লাল বর্ণের, এরকম হওয়ার কারণ হলো তেলেগু অভিনেত্রী কাজল আগরওয়ালের একটি সিনেমার শুটিং, যেটা এই বাড়িতেই হয়েছিলো।

Garalgacha Jamidarbari. 

সিনেমা ছাড়াও বহু বাংলা সিরিয়ালেও শুটিং হয়ে গেছে এই বাড়িতে। বর্তমানে এই বাড়িটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। জমিদারবাড়ির সামনেই আছে, জোড়া শিবমন্দির, রথ মন্দির, পুকুর ও মাঠ, একটু দূরেই আছে গরলগাছা হাইস্কুল। এই জমিদার বাড়িটির বর্তমান মালিক ত্রিদিবেশ মুখোপাধ্যায়।

এখানে যদি ট্রেনে আসতে চান তাহলে নিকটবর্তী স্টেশন হলো ডানকুনি। হাওড়া থেকে লোকাল ধরে ডানকুনিতে নেমে টোটো ভাড়া করে আসতে হবে। আর বাইরোড বা নিজস্ব গাড়ি নিয়ে আসলে দিল্লী রোড ধরে ডানকুনি হয়ে চন্ডীতলার কিছু আগেই এই গরলগাছা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন