কম খরচে ১০ দিনের গুজরাট ট্যুর প্ল্যান এবং সমস্ত তথ্য বাংলায়। 10 days Gujarat & Diu Tour Plan & all information.

 ভ্রমণ পিপাসু:- ভারতের আয়তনের দিক থেকে বড় যে রাজ্য গুলো আছে গুজরাট তাদের মধ্যে একটি। এর মধ্যে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক উত্তর প্রদেশ আছে, এই সমস্ত রাজ্য গুলোতে সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া যদি ঘুরতে যান, তাহলে আপনাদের ট্যুর কখনোই ঠিকমত সফল হয়না, আর এই সমস্ত রাজ্য গুলোকে আপনি এক দুবার গিয়ে ও সম্পূর্ন করতে পারবেন না। গুজরাট ও তেমনি।





'কুছ দিন তো গুজারো গুজরাট ম্যায়ে' - অমিতাভ বচ্চনের করা গুজরাট ট্যুরিসমের এই অ্যাড হয়তো সবাই টিভি পর্দায় দেখেছিলেন, গুজরাট সরকারের পক্ষ থেকে এই অ্যাড গুলো ২০১৩ সাল থেকে টিভি পর্দায় আসার পর থেকে গুজরাট ট্যুরিসম শিল্পে এক জোয়ার আসে, এই সমস্ত অ্যাড গুলোর মাধ্যমে গুজরাটের বিশেষ বিশেষ স্থান গুলি যেমন কচ্ছের রান, গির অরন্য, ছাড়াও আর কিছু স্থানকে তুলে ধরা হয়েছিলো যার ফলে অত্যাধিক হারে বারে, আরো নতুন নতুন স্পট এবং পর্যটকদের সুবিধার জন্য আরো নতুন নতুন পরিকাঠামো গড়ে ওঠে। যা ভারতের পর্যটনের মানচিত্রে গুজরাটকে এক আলাদা জায়গায় নিয়ে আসে।

গুজরাট ঘোরার পরিকল্পনা আপনি যদি করে থাকেন তার আগে গুজরাটের ভৌগোলিক বিষয় সমন্ধে জেনে নিলে অনেক সুবিধা হবে। ভৌগোলিক ভাবে গুজরাটকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় ১.কচ্ছের রান এলাকা । ২. কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ বা সৌরাষ্ট ৩. গুজরাট সমভূমি এলাকা, এই সমভূমি এলাকাকে আবার উত্তর, মধ্য দক্ষিণ তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রতিটি এলাকায় বিশাল বড় বড়, আপনি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে আপনার অনেকটা সময় পেরিয়ে যাবে। এই তিন অঞ্চলেই প্রচুর ঘোরার জায়গা আপনারা পেয়ে যাবেন, কোনটি সব কভার করা তো সম্ভব না একবারে, কিন্তু তাও এই তিন এলাকার বিশেষ বিশেষ উল্লেখযোগ্য কিছু জায়গা ঘোরার জন্য আপনাদের প্ল্যান দেবো, যাওয়া আসা বাদ দিয়েও ১০ দিন সময় দিলে আপনার মোটামোটি কমপ্লিট হবে, তাও অনেক কিছুই বাদ যাবে যার জন্য আপনাকে গুজরাট এক দু-বার আসতে হবে।

Rann of Kutch. 

কেমন করে গুজরাট পৌঁছোবেন :- গুজরাট পৌঁছোনোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হল ফ্লাইট, তাছাড়া ট্রেন ও আছে হাওড়া থেকে সরাসরি। কিন্তু রাস্তাটা অনেকটা এবং আপনাদের ট্যুর মোটামুটি ১০ দিনের এত দিনের ট্যুরের জন্য ফ্লাইটে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে ফেরার ব্যবস্থা আপনি ইচ্ছা করলে ট্রেনে করে নিতে পারেন। গুজরাটে তিন তিনটে এয়ারপোর্টে আপনারা নামতে পারেন, আহমেদাবাদ, ভাদোদরা বা বরোদা এবং সুরত। যেই এয়ারপোর্টে ভাড়া কম দেখবেন না টিকিট কেটে নেবেন কলকাতা থেকে কানেক্টিং ফ্লাইট হলেও কেটে নেবেন আমরা নেমেছিলাম ভাদোদরা বা বরোদাতে ভায়া হায়দারাবাদ হয়ে। যদিও সুরতে নামলে একটু দূর হয়ে যাবে, আহমেদাবাদ বা ভাদোদরা নামলেই আপনাদের পক্ষে ভাল হবে। আর আহমেদাবাদ থেকে ভাদোদরা আসা খুব সোজা গাড়ি না বুক করলেও বাসে ন্যাশনাল এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে খুব তাড়াতাড়িই  ভাদোদরা চলে আসতে পারেন। আপনাদের ট্যুর শুরু হচ্ছে ভাদোদরা থেকে ফ্লাইট টা এমন ভাবে বুক করবেন যাতে দুপুরের মধ্যে একদম পৌঁছে যেতে পারেন।

গুজরাট ভ্রমনের উপযুক্ত সময় :- গুজরাট, রাজস্থান এই জায়গা গুলো ভারতের সবচেয়ে গরমপ্রবন এলাকা গুলোর মধ্যে একটি। এখানে ঠান্ডা বলতে খুব কম সময়ই,। তাই গরমের দিনে আপনার এখানে ঘুরতে আসার কথা কল্পনাই করবেন না।তবে আপনারা নভেম্বরের শেষ থেকে মার্চের মাঝামাঝির মধ্যে আসতে পারেন, সবচেয়ে ভালো ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি। এই সময়ে রান উৎসব ও চলে পুরোদমে, তাই এই সময়ই উপযুক্ত গুজরাট ভ্রমণের ক্ষেত্রে।

খাওয়া ও হোটেল :- গুজরাটের খাওয়ার দাম একটু বেশি। সব জায়গায় প্রায় নিরামিষ খাওয়ার ছাড়া কিছুই পাবেন না, একমাত্র আহমেদাবাদ আর কিছু জায়গায় পেতে পারেন আমিষ। তবে গুজরাটে আসলে কচ্ছের লোকাল খাওয়ার, যাতে বাজরার রুটি টা মেন আর কাথিয়াবাড়ে আসলে কাথিয়াবাড়ি থালি অবশ্যই টেস্ট করবেন। গুজরাটের স্ট্রিটফুড, খুব ভালো এবং একটু সস্তা, এক বেলা স্ট্রিটফুড খেয়ে কাটিয়ে দিতে পারবেন টাকা ও কিছুটা বাজবে যেটা সাধারণ থালি সিস্টেমে হোটেলে খেলে অনেক টাকা পড়ে যাবে। গুজরাটের সাধারণ মানুষ বেশিরভাগ সময় দেখলাম এই স্ট্রিটফুড খেয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গাঠিয়া, বিভিন্ন ধরনের ভুজিয়া, ফাফরা জিলিপি, পাও ভাঁজি আর নাম না জানা প্রচুর খাওয়ার।

Kutch Thali

Fafra, Jalebi. 


হোটেলে ব্যাপারে যদি বলি বুকিং. কম থেকে হোটেল গুলো বুক করবেন অনেক অপশন পেয়ে যাবেন বিশেষ করে আহমেদাবাদে। আর কচ্ছতে অবশ্যই লোকাল হাট গুলো বুক করবেন। সোমনাথ ও দ্বারকা তে গিয়েও ও করতে পারেন, সোমনাথে চেষ্টা করবেন বুক করার সোমনাথ ট্রাস্টের দুটো গেস্ট রুম আছে সেগুলো বুক করার। কিছু হোটেল নাম্বার ও বুকিং লিঙ্ক আমি নিচে দিয়ে দেবো যাতে আপনাদের সুবিধা হয়। বাস বুক করবেন GSRTC সাইট থেকে ট্রেনের ব্যাপারে সবাই তো জানেই, এই আমার প্ল্যানের সাথে আপনাদের নাও মিলতে পারে সেটা আপনারা নিজের মত সাজিয়ে হোটেল ও গাড়ি বুক করে রাখবেন, গাড়ি বুক করার জন্যে কিছু ড্রাইভার নাম ও নাম্বার আমি নিচে দিয়ে দেবো,ধন্যবাদ ।

গুজরাট ট্যুর প্ল্যান:-

প্রথম দিন :- ফ্লাইটে যে ভাবেই হোক দুপুরের মধ্যে ভাদোদরা পৌঁছে আপনাদের বুক করা হোটেল পৌঁছে গিয়ে ফ্রেশ, খাওয়া দাওয়া হাল্কা রেস্ট নিয়ে বিকেলে বেরিয়ে পড়ুন শহরের মধ্যেই কিছু স্থান দেখতে যেহেতু আজ সময় একদমই নেই, তাই আসেপাশের এক দুটি জায়গাই দেখার সুযোগ হবে। প্রথমেই যাবো সবচেয়ে বিখ্যাত ও আকর্ষণীয় *লক্ষ্মী বিলাস প্যালেস* এতো বড় প্যালেস বা রাজবাড়ি খুব কম জায়গায় আছে তাই এই লক্ষী বিলাস প্যালেস একদমই মিস করা চলবে না, সেদিন কোনো গাড়ি ভাড়া না করলেও হবে, আপনি হোটেল থেকে অটো করে প্যালেস পর্যন্ত চলে আসুন সোজা টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকে পড়ুন, দু ধরণের টিকিট আছে আর মিউজিয়ামের জন্য আলাদা। এই লক্ষ্মী বিলাস প্যালেসটি তৈরি করা হয়েছিলো মারাঠা গায়কোয়াড় বংশের দ্বারা আমরা জানি বৃহত্তর মারাঠা সাম্রাজ্যের পতনের পর ৫টি ছোটো ছোটো মারাঠাদের বংশের সৃষ্টি হয়, পুণে, নাগপুর, ইন্দোর, গোয়ালিওর এবং বরোদা তে। বরোদার শাসনকর্তা ছিলেন গায়কোয়াড় ফ্যামিলি। আর এই প্যালেস তৈরি করার মহারাজা সোয়াজি রাও গায়কোয়াড় ১৮৯০ এ। প্রায় ৫০০ একর জায়গা জুড়ে এই প্যালেস তৈরি করা হয়েছিলো যা আকারে ব্রিটেনের বাকিংহাম প্যালেস থেকে প্রায় ৪ গুণ বড়। এর মধ্যে আপনারা দেখতে পাবেন ইউরোপিয়ান আদলে তখনকার দিনের তৈরি গল্ফ কোর্স, ফুলের বাগান। এই পরিবার এর এই প্রাসাদের অনেক ইতিহাস আছে, যেগুলো আপনারা মিউজিয়াম, এবং ভিতরে ঢোকার পর একটি করে অডিও ডিভাইস দেবে সেটা কানে লাগিয়ে আপনি এর ইতিহাস নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন। ১-১.৩০ ঘন্টা এখানে কাটিয়ে চলে আসুন পরের জায়গা সোয়াজি বাগ এবং কীর্তি মন্দির এ দুটো স্পট দেখতে অটো করে আসতে ১০ মিনিট লাগবে। এগুলা দেখতেই হয়তো সন্ধে হয়ে যাবে আর বিশেষ কিছু দেখা যাবে না, আর বিশেষ কিছু দেখার ও নেই এর সময়ে থাকলে হোটেল এসে রেস্ট করাই ভালো হবে।

Laxmi Vilas palace, Vadodara. 

দ্বিতীয় দিন :- দ্বিতীয় দিন আমরা যাবো গুজরাটের সাম্প্রতিক সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গা, যার নাম সংবাদ মাধ্যম থেকে সোশাল মিডিয়া সবার মুখে মুখে সেই স্ট্যাচু অফ ইউনিটি দেখতে ১৮২ মিটার উচু সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এই মূর্তি যা বিশ্বের উচ্চতম মূর্তির স্থান পেয়েছে। এই ১৮২ মিটার উচ্চতার পেছনে একটা তাৎপর্য আছে, গুজরাট বিধানসভার সদস্যসংখ্যাও ১৮২ হয়তো এই থেকেই এর উচ্চতা ১৮২ মিটার করা হয়েছে।

Statue of Unity 


ভাদোদরা থেকে এর দুরত্ব ৯০ কি.মি। এটি অবস্থিত গুজরাটের পঞ্চমহল জেলার কাবারিয়া এলাকায়। গাড়ি ভাড়া করে নিলে আপনি ২ ঘন্টাতেই এখানে পৌঁছে যাবেন ভাড়া এই ৩ হাজার টাকার মতো নেবে, আপনারা যদি ২,৩ জনের বা তার বেশি, ফ্যামিলি থাকে তাহলে গাড়ি ভাড়া করে নেওয়াই ভালো হবে, তাছাড়া এখানে বাস পরিষেবা ও ভালো অনলাইন অফলাইন বুক করার ব্যবস্থা আছে আমরা যেহেতু ২ জন ছিলাম তাই এক এসি বাসে গিয়েছিলাম ভাড়া ২০০ টাকা মত।

বাসের লিস্ট আহমেদাবাদ থেকে 


Entry টিকিটের মুল্য ১৩০ টাকা আর বাচ্চাদের জন্য ৯০ টাকা এরপর ভিতরে ঢুকে ওপরের গ্যালারি আরো অন্য অন্য দেখার জন্য দু ধরনের টিকিট আছে আমি নিচে তার লিস্ট দিয়ে দেবো আপনারা দেখে নিতে পারেন।

টিকিটের মূল্য ।


এখানে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি দেখা ছাড়াও আর যে সমস্ত স্পট গুলো আপনারা দেখে নিতে পারেন সেগুলো হলো সর্দার সরোবর বাঁধ, ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারস্ ক্যাকটাস গার্ডেন, ব্যাটারফ্লাই গার্ডেন, জুলজিক্যাল পার্ক, বোটিং মোটামোটি আপনাদের সারাটা দিন ভালো মত কেটে যাবে। এখানে খাওয়ার জন্য হোটেল ব্যবস্থা আছে তাই অসুবিধা হবে না। এই ভাবে দ্বিতীয় দিনের শেষে আবার আগের হোটেলে ফিরে আসুন।

তৃতীয় দিন :- তৃতীয় দিন আপনাকে খুব সকাল সকাল বের হতে হবে কারন আপনাদের দু দিনের বরোদা ঘোরা মোটামোটি কমপ্লিট, আমি আগেই বলেছি, সব একবারে কোনো দিনই সম্পূর্ন করা যাবে না কারন প্রচুর জায়গা আছে আর বিরাট এলাকা, তাই প্রধান প্রধান বিখ্যাত এলাকা গুলো আমরা আগে সম্পূর্ন করার চেষ্টা করবো। সকাল সকাল বের হতে হবে কারণ আপনাকে এবার যেতে হবে আহমেদাবাদ যেতে মোটামোটি ২ ঘন্টা সময় লাগবে। এই শহরে এবার আমরা 2 দিনের জন্য ঘাঁটি গাড়বো। প্রথম দিন দেখব শহর ও আসে পাশের কিছু জায়গা এবং দ্বিতীয় দিন যাবো উত্তর গুজরাটের পাটন। হোটেল একদম দু দিনের জন্য একেবার প্রি-বুক করে নেবেন। তাই যতো তাড়াতাড়ি আহমেদাবাদ পৌঁছতে পারবেন ততোই ভালো হবে। হোটেল ঢুকে স্নান, সকালের খাওয়া সেরে একটু রেস্ট নিয়েই আমরা বেরিয়ে পড়বো, আগেই বলে রাখি এই দু দিনের জন্য আপনারা যদি কোনো গাড়ি বুক করে রাখেন তাহলে ভালো হয়, সব জায়গা গুলোকে ভালোভাবে কভার করতে পারবেন যদিও আমরা বাস বা অটো করেই এই জায়গা গুলো ঘুরেছিলাম, বাস সার্ভিস এখানে খুব ভালো, আপনি অনলাইনে ই আগে থেকেই আপনার সীট বুক করে রাখতে পারবেন। সেইজন্য বিশেষ কিছু সমস্যা হয়নি কিন্তু অনেক কিছুই সময়ের অভাবে কভার করতে পারবেন না। এবার বেরিয়ে পড়ুন আপনাদের প্রথম স্পটের উদ্দেশ্যে আমরা যাবো আহমেদাবাদ শহরের কাছেই আদেলাজ গ্রামে যেটা গাঁধীনগর জেলায় পরে এখানে আছে প্রাচীন এক Stepwell বা বাংলায় যাকে বলে সিরিযুক্ত কুয়ো। ১৪৯৯ সালে এই Stepwell তৈরি করান বাঘেলা বংশের রানী রুদাদেবী রানা বীর সিং উদ্দেশ্যে। অসাধারন সব কারু কাজ আর এর অদ্ভুত ডিজাইন সত্যি অবাক করার মত। এরপর আমরা সোজা চলে আসবো আহমেদাবাদ শহরে, দুপুরের খাওয়া খেয়ে নিয়ে এবার আমরা যাবো মহাত্মা গান্ধীর তৈরি সবরমতী আশ্রমে এখানে আপনারা এক থেকে দেড় ঘণ্টা কাটাতে পারবেন অনেক কিছু দেখার ও পড়ার আছে, মহাত্মা গাঁধী এই সবরমতী আশ্রম থেকেই ডান্ডি অভিযান শুরু করেছিলেন। পাশেই আছে সবরমতী রিভারফ্রন্ট, সবরমতী নদীর দু পাস কে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে সুন্দর আলোর ব্যবস্থা করে মানুষের বসে সময় কাটানো এবং দুপাশে হাঁটাচলা করার সুন্দর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা আগে একদমই ছিল না। এখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা সন্ধ্যা টা কাটাবো এখানকার বিখ্যাত কাঁকারিয়া লেকে, আমরা যেদিন গিয়েছিলাম ওই দিন 31 শে ডিসেম্বর ছিল তাই রাতে আলোক সজ্জায় চারদিক ভালো ভাবে সাজানো হয়েছিল বিভিন্ন জায়গায় নাচ গানের প্রোগ্রাম হচ্ছিল খুব সুন্দর লাগছিলো তাই এই জায়গা টায় আপনাদের খুবই ভালো লাগবে। এই লেকটি আরো একটি কারণে বিখ্যাত সেটি হল ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের যে লোগোটি সেটা এই লেক দেখেই ডিজাইন করা হয়েছিলো, ওপর থেকে অনেক ছবি আছে যেগুলো দেখলেই আপনারা সেটা বুঝতে পারবেন। সন্ধ্যা টা এখানে কাটিয়ে তারপর আহমেদাবাদের মার্কেটে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন কেনাকাটা করতে, জামা কাপড় খুব সস্তা এখানে। এরপর ডিনার সেরে চলে আসুন হোটেলে এবং আপনাদের তৃতীয় দিন শেষ।

Sabarmati Asram

Kankaria lake. 


চতুর্থ দিন :-পরের দিন হোটেল থেকে চেক আউট করে বেরিয়ে পড়বো আমরা, কারণ রাতে নাইট বাসে আমরা যাবো গুজরাটের অন্য প্রান্তে,লাগেজ আপনারা হোটেলেও রেখে যেতে পারেন আর যদি জায়গা থাকে গাড়িতে গাড়িতে ও একবারে নিয়ে নিবেন আজকে আমরা এবার যাবো একটু দূরে একদম উত্তর গুজরাট পাটনে, গাড়ি তে গেলে মোটামোটি ২.৩০ ঘণ্টার রাস্তা। বাসে গেলে ৩.৩০ ঘন্টা তো লেগেই যাবে। এখানেই আছে UNESCO স্বীকৃতি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট রানী কি ভাব। এই জায়গা টি আগেও ছিল কিন্তু এতো টা সবার পরিচিত ছিল না কিন্তু কেনো বলেন তো এই জায়গাটা হঠাৎ করে এত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, অনেকেই হয়তো জানেন, তাও আমি বলে দিচ্ছি নতুন যে ১০০ টাকার নোট বেরিয়েছে তার পেছনে এই রানী কা ভাবের ছবি আছে। এবার আসুন জেনে নি রানী কা ভাবের ইতিহাস।পাটন উত্তর গুজরাটে অবস্থিত প্রাচীন গুজরাটের রাজধানী। রানী উদয়মতি এই ভাভ( Stepwell) তৈরি করেন প্রাচীন সরস্বতী নদীর ধারে. এক কথায় অনবদ্য কারুকাজ, অসম্ভব সুন্দর, ৯ তালা বিশিষ্ট এই ভাব ৭ তালা পর্যন্ত যাওয়ার permission আছে। অনেকটা সময় এখানে কাটাতে পারবেন আপনারা আর ফলপ করে বলতে পারি এখানে আসার পর নিরাশ হবেন না। নিচে নামার পর ওপর দিকে তাকিয়ে একবার হলেও চিন্তা করবেন প্রাচীন ভারতীয় শিল্পকর্ম কতটা উন্নত পর্যায়ের ছিল। সেই জন্যই এই জায়গাটিকে আপনাদের গুজরাট ভ্রমণের লিস্টে রেখেছি। মোটামোটি এটা দেখে ফিরে আসতেই আপনাদের সারাদিন লেগে যাবে সন্ধ্যের মধ্যেই চলে আসতে পারবেন আহমেদাবাদে। আসে পাশের কিছু জায়গা ঘুরতে পারেন নাহলে আহমেদাবাদ বাস স্ট্যান্ডে বসে রেস্ট নিতে পারেন, ভাল ব্যবস্থা। আমরা আজ যাবো ৪০০ কি.মি দূরে গুজরাটের সবচেয়ে বড় জেলা কচ্ছের সদর শহর ভূজে। কচ্ছের রান এবং রান উৎসব দেখাই আপনাদের প্রধান লক্ষ্য, সেই জন্য আপনাকে অবশ্যই ডিসেম্বর থেকে মার্চ এই তিন মাসের মধ্যেই আসতে হবে, কারণ এই তিন মাসেই এখানে Festival চলে তাছাড়া বছরের অন্য সময় এই রান সমুদ্রের জলে ডুবে থাকে, শীত পড়তেই জল কমতে থাকে এবং সাদা লবনের আস্তরন বিছিয়ে যায় এলাকা জুড়ে একেই কচ্ছের রান বলে। এমনিতেই গুজরাটে শীতকাল ছাড়া ঘুরতে আসা খুব কষ্টের যা গরম পড়ে আপনি ভালো মত ঘুরতেই পারবেন না।

Rani ki vab




এবার আসি নাইট বাস বা ট্রেনের কথায় রাত্রি ৮-১০ টা মধ্যে কিছু নাইট বাসে ছাড়ে ভুজের উদ্দেশ্যে, স্লিপার বাস দেখে অনলাইনে বুক করে রাখবেন, নাইট বাস নেওয়ার কারণ আপনি সকালেই একদম ভুজ পৌঁছে যাবেন এবং একটা দিন কম নষ্ট হবে। স্লিপার বাস থাকায় বিশেষ কিছু অসুবিধা হাওয়ায় কথা না। আমরা ট্রেন পায়নি তাই বাসে গিয়েছিলাম আপনারা ট্রেনে যেতে পারেন চেষ্টা করবেন রাতের ট্রেন গুলো বুক করার। রাতের ট্রেন আছে একটু আগে থেকে বুক করতে হবে ।সকালে ভুজ বাস স্ট্যান্ড বা স্টেশনে নেমেই দুদিনের জন্য গাড়ি বুক করে নেবেন, আমরা এক দিনের জন্য করেছিলাম ২৫০০ টাকা ভাড়া নিয়েছিলো বাস স্ট্যান্ডের সামনেই গাড়ি পেয়ে গিয়েছিলাম স্টেশনের সামনেও পেয়ে যাবেন। ভাড়া কথা বলে একদম ঠিক করে নেবেন এখন রেট একটু বেশি হবে। এবার আপনাদের যেতে হবে ৭৮ কি.মি দূরের ঢোরডো গ্রামে দের ঘন্টার সময়ে আপনি এখানে পৌঁছে যাবেন রাস্তায় লিটল রান এবং এক, দুটা স্পট পাবেন কিছু সিনেমা শুটিং ও হয়েছিল এইসব জায়গায়। এবার থাকার ব্যাপারে বলে দেই। আপনারা দুভাবে এখানে থাকতে পারেন এক রান উৎসবের একদম পাশে সরকারি টেন্ট সিটিতে থাকতে পারেন, একটু বেশি খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার এখানে থাকা, কিন্তু হবেই না কেনো, পুরো একটা মরুভূমি এলাকায় একটা পুরো শহরকে এখানে তৈরি করাহয় তিন মাসের জন্য সমস্ত সুযোগ সুবিধার থাকে এখানে একদম ফাইভ স্টার হোটেলের মত। আর একটু কম খরচে যদি থাকতে চান তাহলে হোমস্টে টাইপের কিছু হাট বা টেন্ট আপনারা বুক করে নিতে পারেন অনলাইনে ও পেয়ে যাবেন ডিসেম্বর এর মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি খুব ভিড় হয় তাই সরাসরি এখানে এসে না ও রুম পেতে পারেন তাই অনলাইন বুক করাই বেটার হবে কিন্তু এই হাট গুলো কছের রান এলাকা থেকে একটু দূরে কিন্তু এই হাট গুলো খুব সুন্দর হয় আমরাও একটা বুক করেছিলাম ব্রেকফাস্ট দিয়ে ১৮০০ টাকা ভাড়া নিয়েছিলো। পূর্ণিমার দিন কিন্তু এখানে সব কিছুর জন্য রেট ই বেড়ে যায়। কারণ আছে আমার কচ্ছের ওপরে করা আরো একটি ব্লগে কচ্ছের সমস্ত details পেয়ে যাবেন নিচে লিঙ্ক দিলাম।

পঞ্চম দিন :- পঞ্চম দিন আপনাদের ভাড়া করা গাড়িতে লোকাল কিছু সাইটসিং দেখবেন এবং বাকি টা সময় কচ্ছের রানে করবেন পুরো পরিকল্পনা দেখুন নিচের লিঙ্কে...

কম খরচে কচ্ছের ট্যুর প্ল্যান

ষষ্ঠ দিন :- ষষ্ঠ দিন আপনারা যাবেন কছের কিছু আসে পাশের জায়গা গুলো কভার করার জন্য তার মধ্যে আছে মুনদ্রা ও মান্ডভির মত কয়েকটা জায়গা, ট্যুর প্ল্যান নিচের লিঙ্কে...কছের রান ট্যুর প্ল্যান 2 রাত 3 দিন

Swaminarayan Mandir, bhuj. 


সপ্তম দিন :- ষষ্ঠ দিনের শেষে, সপ্তম দিনে আমরা যাবো কচ্ছ কে বিদায় জানিয়ে আমরা যাবো গুজরাটের আরেক প্রান্তে গুজরাটের কাথিওবাড় অঞ্চল বা সৌরাষ্টে, এই অঞ্চল টাও যথেষ্ট বড়, এবং অনেক ভালো ভালো জায়গায় আছে আপনাদের ঘোরার মত, এর মধ্যে, দ্বারকা, পোরবন্দর, সোমনাথ, জুনাগড়, গির, এবং দিউ এই সমস্ত জায়গা ভালো ভাবে ঘুরতে আপনার আরো তিন দিন সময় লেগে যাবে, চেষ্টা করবেন ২.৫ দিনের মধ্যে শেষ করে দেওয়ার যাতে আপনারা ৩ দিনের মধ্যে আহমেদাবাদ ফিরে যেতে পারেন এবং সেখান থেকে নিজের নিজের বাড়ি ফেরা। কাথিয়াবাড়ের শেষ প্রান্তের দু-শহর দ্বারকা বা পোরবন্দর থেকে আপনাদের যাত্রা শুরু করতে পারেন.. এখানে আসার জন্য আপনারা সরাসরি কোনো ট্রেন পাবেন না ভুজ থেকে ট্রেন গাঁধীধাম বা জামনগর পর্যন্ত এসে ট্রেন চেঞ্জ করে আসতে হবে, কিন্তু সরাসরি বাস পেয়ে যাবেন, নন এসি স্লিপার নাইট বাসে আমরা এসেছিলাম নাইট বাসে আসলে আপনাদের একটা দিন অন্তত নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যায়। দ্বারকা এবং পোরবন্দর পাশাপাশি দুটো জায়গা বেশি দূর না। পোরবন্দর গাঁধীজীর জন্মস্থান ছাড়া আর বিশেষ কিছু নেই তাই পোরবন্দর কেউ যদি বাদ দিতে চান দিতে পারেন অবশ্যই আর দ্বারকা একদিন ঘোরার জন্য যথেষ্ট। দ্বারকা নেমে হোটেলে কিছুটা সময় রেস্ট এবং ফ্রেশ হয়ে আপনাদের বেরিয়ে পড়তে হবে।দ্বারকার যে জায়গা গুলো আপনারা ঘুরে দেখবেন আসুন সেগুলো জেনে নেই এক দ্বারকাধিস মন্দির যেটা মূল আকর্ষন এখনকার আমরা সবাই জানি, এই মন্দির ভারতের চার প্রান্তের চার ধামের মধ্যে একটি। যা অষ্টম শতকে জাগৎগুরু শঙ্করাচার্যের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দ্বারকাধিস মন্দির বাদে আরো যে সমস্ত জায়গা আপনি ঘুরে আসতে পারেন সেগুলো হলো রুকমিনি দেবী মন্দির, বড়কেশ্বর মহাদেব মন্দির, নাগেশ্বর জ্যোতিলিঙ্গ, বেট দ্বারকা এই সমস্ত জায়গা, গোমতি ঘাট ।এর মধ্যে নাগেশ্বর জ্যোতিলিঙ্গ, এবং বেট দ্বারকা একটু দূরে অবস্থিত তাই আপনার যদি সারাদিনের জন্য গাড়ি বুক করে নেন একটা তাহলে জায়গা গুলো খুব সহজে ঘুরে আসতে পারবেন। বেট দ্বারকা যাওয়ার জন্য আপনাকে ওখা জেটি যেতে হবে সেখান থেকে বোট করে 5 কি.মি পথ অতিক্রম করে আপনি বেট দ্বারকা পৌঁছবেন এখানে ৫০০ বছরের পুরোনো ভগবান কৃষ্ণের মন্দির আছে যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্বামী বল্লভাচার্য। বেট দ্বারকা যাওয়ার পথেই রাস্তায় আপনারা পেয়ে যাবেন নাগেশ্বর জ্যোতিলিঙ্গ মন্দির যা শিবের দ্বাদশ জ্যোতিলিঙ্গের অন্যতম। এই দুটি জায়গা দেখে দ্বারকা ফিরে এসে আপনি রুকমিনি দেবী মন্দির এবং দ্বারকাধিস মন্দির দর্শন করে বিকেল টা গোমতি ঘাটে কাটাতে পারেন এখানে বোট করে ঘোরার ব্যবস্থা আছে। এই ভাবেই আপ্নার গুজরাট ভ্রমণের সপ্তম দিনের পরিসমাপ্তি ঘটবে।

Mahatma gandhi Birthplace. 

Night bus Bhuj to Dwarka/ Porbandar. 


অষ্টম দিন :- অষ্টম দিনের আমাদের সকাল শুরু হবে বাস জার্নি দিয়ে যাত্রা দিয়ে আমরা যাবো সোমনাথ। আর যারা বাস যাত্রা avoid করতে চান তাদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা আছে কিন্তু রাতে, রাত ৮.৩০ টার ট্রেন টা ধরলে আপনি খুব ভোরের দিকে সোমনাথ পৌঁছে যাবেন ট্রেন যদি ও একটু ঘুরে ঘুরে যায় কিন্তু বাসে আসলে সময় কম লাগে এখন যার যেটা ইচ্ছা। ধরে নিলাম আপনারা ট্রেনে আসছেন খুব সকালে সোমনাথ নেমে হোটেলে চেক ইন করে নেবেন, মন্দির কমিটির নিজস্ব দুটো বিশাল বিশাল গেস্ট রুম আছে যেটাতে আপনারা থাকতে পারেন এখানে খাওয়ার ব্যবস্থা ও খুব ভালো, অনলাইন অফলাইন দু ভাবেই বুক করার ব্যবস্থা আছে যদিও আমরা ওখানে গিয়েই রুম পেয়ে গিয়েছিলাম ৫০০ করে একটা নন এসি রুম নিয়েছিল, আর আসে পাশে তো প্রচুর হোটেল বুক করার কোনো দরকারই নেই। সকাল থেকেই সারাদিন মন্দিরে দর্শনের জন্য বড় লাইন থাকে সেইজন্য দর্শন সন্ধ্যাবেলা বা রাতের দিকে করতে পারেন, রাতের আলোকসজ্জাতে মন্দিরকে আরো সুন্দর লাগে। সেদিন সকালে আমরা বেরিয়ে পড়বো দিউ এর উদ্দেশ্যে, দিউ যেতে বাসে প্রায় ২ ঘন্টার মত সময় নেবে। আপনারা গাড়ি ভাড়া ও করে নিতে পারেন। দিউ একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। দিউতে কি কি দেখবেন - দিউ কে বলা হয় মিনি গোয়া। গোয়ার মত দিউ বা দমন ও দিউ তে পর্তুগীজদের শাসন ছিল, এখানেও গোয়ার মত কত গুলো বিচ আছে, পর্তুগীজদের তৈরি দুর্গ আছে। একদিনের জন্য দিউতে যে জায়গা গুলো দেখবো সেগুলো হলো নাগোয়া বিচ, পানিকোঠা যেখানে ক্যায়ামত সিনেমার শুটিং হয়েছিল, দিউ ফোর্ট, নাইডা কেভ, চুনাপাথরের গুহা,INS কুকরি, সেন্ট পল চার্চ প্রভৃতি। বাসে আসলে এখানে এসে একটা অটো বুক করে আমাদের মত ঘুরতে পারেন এই সব জায়গা গুলো, অটো ড্রাইভারের সাথে কথা বলে ভালো ভাবে দরদাম করে নেবেন। একদিনে ঘুরাঘুরি জন্য এই জায়গা গুলো অনেক। এবার বিকেলে মধ্যে ফিরে চলে আসুন সোমনাথ, হোটেলে ফিরে একটি রেস্ট নিয়ে মন্দিরের পুজোর জন্য লাইন দেবেন দ্বারকাধিস মন্দিরে মত, মোবাইল বা কোনো জিনিস নিয়েই ভিতরে ঢোকা যাবে না, সেই মতো দর্শন করে বেরিয়ে এসে আসে পাশে যেতে পারেন অনেক মন্দির আছে. তারপর হোটেল ব্যাক। রাতের খাওয়ার খাবেন মন্দির কমিটির গেস্ট হাউসের খাওয়ার জায়গায় এখানে আপনি দুবেলা কুপন কেটে খাওয়ার খেতে পারেন।

Diu Fort. 


Naida Cave, diu. 

নবম দিন ও দশম দিন :- সোমনাথ বিচ থেকে সানরাইজ এবং সানসেটের দৃশ্য কিন্তু খুবই মনমুগ্ধকর সেইজন্য সকালের দিকে সময়টা বিচের ধারে কাটাতে পারেন। এরপর সোমনাথ ও তার আসে পাশের আরো কিছু দর্শনীয় স্থান আছে, যেগুলো সোমনাথ ট্রাস্টের বাসে করে আপনাকে ঘুরিয়ে দেবে সকাল ৮ টায় বাস ছাড়ে, যদি এই ট্যুরটা না করতে চান তাহলে ট্রেন ধরে চলে আসুন শাসন-গিরে। ট্রেন ধরার জন্য আপনাকে ভেরাবল যেতে হবে, ভেরাবলই প্রধান শহর এখানকার খুব কম ট্রেনই সোমনাথ স্টেশনে আসে,এটা অবশ্যই মাথায় রাখবেন দূর বেশি না ৫-৭ কি.মি। এই রুট টা মিটার গেজ এবং ব্রডগেজ দু ধরনের লাইন পাবেন, লোকাল ট্রেন মিটার গেজে চলে বেশি ভিড় হয়না খুব স্বাচ্ছন্দ্যে যেতে পারবেন। ১.৩০ ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন শাসন গির। স্টেশন থেকে অটো করে আপনাকে আসতে হবে গির জাতীয় উদ্যানে।

Somnath Temple. 


Somnath atithi niwas. 

বুকিং পদ্ধতি :- গির জাতীয় উদ্যানের সমস্ত বুকিং পদ্ধতি এখন অনলাইনে আপনার ভাগ্য ভালো থাকলে আপনি এখানে এসে কিছু টিকিট পেতে পারেন। তাই অনলাইনে নিজেদের পছন্দ মত দিন সময় স্লট বুকিং করে নিয়ে যাওয়াই ভালো। নিচে বুকিং লিঙ্ক আমি দিয়ে দেবো। এখানে দুটো জায়গা আছে যেখানে আপনারা বুকিং করতে পারেন, এক প্রধান গির ন্যাশনাল পার্ক এরিয়া, দুই একটু পাশেই Gir Interpretation Zone বা দেবলিয়া পার্ক, যেহেতু এটা একটা Interpretation সেন্টার তাই এটা আকারে একটু ছোট কিন্তু সিংহ দেখার সম্ভাবনা ১০০%। এখানে দু ধরণের বুকিং করতে পারবেন এক বাসে যার টিকিট মুল্য ২০০ টাকা এবং জিপ সাফারি যার জন্য গাড়ি, ড্রাইভার গাইড সহ ২৫০০ টাকা। এবং প্রধান গির ন্যাশনাল পার্কে শুধু ৩ ঘণ্টার জিপ সাফারি আছে সময় খুব সকাল এবং বিকালে। অনলাইন টিকিট কপি বা ফোনে রাখা কপি দেখালে উনারা টিকিট ইস্যু করবেন তারপর বাস বা জিপ গাইড আপনাদের জন্য ইস্যু হবে। এই সাফারিতে খুব সকালে গেলে সিংহ দেখার সম্ভাবনা বেশী। দেবোলিয়া পার্কে করাই ভালো নাহলে আপনাকে একটা রাত থাকতে হবে আসে পাশের কোনো হোটেলে। মেন গির ফরেস্টে সাফারি না করলে ওই দিনই জুনাগড় এসে রাতের ট্রেন ধরে সকাল সকাল আহমেদাবাদ, আমরা তাই করেছিলাম, কিন্তু আপনাদের যদি খুব ইচ্ছা থাকে গভীর জঙ্গলে গিয়ে এই সাফারি করার তাহলে সেদিন রাতে ওখানে থেকে সকালে সাফারি করে তারপর আপনাদের আহমেদাবাদের ট্রেন ধরতে হবে ট্রেন না পেলে বাস তো আছেই।আহমেদাবাদ পৌঁছোনোর পর এবার আপনারা ১০ দিন গুজরাট ভ্রমনের সুখকর স্মৃতি নিয়ে ফিরে যাবেন নিজের নিজের বাড়ি।

Lion at Gir national park. 

Lion. my click at gir forest. 



গির অনলাইন বুকিংhttps://girlion.gujarat.gov.in/


হোটেল :- বর্তমান যুগে হোটেল অনলাইন বুক করার সবচেয়ে ভালো সাইটে booking.com ও Agoda আমিও বুক করলে এগুলো থেকেই করি, গুজরাট গিয়েছিলাম আমরা প্রায় 3 বছর আগে তাই তখন এইসব সাইটের এত চল ছিল না, বেশিরভাগ হোটেল ওখানে পৌঁছে করেছিলেন, তাই অনেক হোটেল নাম্বার ডিলিট হয়ে গেছে তাও কিছু কিছু ভালো থাকার জায়গার আমি আপনাদের সমানে তুলে ধরবো বাকি আপনারা অনলাইনে দেখে ও বুক করতে পারেন...

ভুজে আমাদের রিসর্ট ছিল - রানভূমি রিসর্ট ১৮০০ সাথে ব্রেকফাস্ট ও ডিনার। ফোন নম্বর - 09429936915

2. Rann Visamo Village Resort-099984 18532

3. Rann Kandhi Resort-094274 49041

4. White Rann Homestay-094092 21473

5.Kutch Classic Rider Camp-094997 33132

6.Kutir Craft Village Resort | Rann Of Kutch-098794 32076

7. সরকারী টেন্ট সিটি - রান উৎসব বুকিং

সোমনাথ থাকার সবচেয়ে বেস্ট অপশন সোমনাথ ট্রাস্টের গেস্ট হাউস এগুলো অনলাইন বুক করে যাবেন নাহলে ওখানে গিয়েও প্রচুর হোটেল পেয়ে যাবেন।

সোমনাথ ট্রাস্টের দু'টো অতিথি নিবাস এক - লীলাবতী গেস্ট হাউসে - 02876 233 033

দুই - মহেশ্বরী অতিথি নিবাস - 094282 14914

সাইট - সোমনাথ ট্রাস্ট অতিথি নিবাস

এই সমস্ত অতিথি নিবাসে dormitory থেকে শুরু করে AC রুম পর্যন্ত বিভিন্ন দামের হোটেল পাবেন, খাওয়া ও ব্যবস্থা আছে। 


দ্বারকার কিছু মন্দিরের কাছাকাছি হোটেল...

1. Hotel Bansi-094268 52382

2. Hotel Gomti-089805 25525

3.Vishwakarma Dharmshala-02892 234 735

4.Hotel - THE BHANU INN, DWARKA-098245 69959

5.HOTEL SANIDHYA-094277 73671

খরচা - আমরা যদিও গিয়েছিলাম ২০১৯ সালে তখন আর এখনকার মধ্যে অনেক হেরফের হবে। সোজা একটা হিসেব দিয়ে রাখি ২০০০০-২৫০০০ টাকার মধ্যে খরচা হতে পারে, এখন যতো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করবেন ভাড়া গাড়ি থেকে এবং আপনারা সংখ্যায় কতজন হবেন তার ওপরে নির্ভর করছে কম বেশি হওয়ার। ২০ হাজার পার হেড এটা আপনাদের লাগবেই এটাই বলতে পারি।

ধন্যবাদ। 





5 মন্তব্যসমূহ

  1. 20000 per head ki plane ar vhara including

    উত্তরমুছুন
  2. পশ্চিমবঙ্গ থেকে কিভাবে যাবো এবং কিসে করে যাবো

    উত্তরমুছুন
  3. পশ্চিমবঙ্গ থেকে কিসে করে যেতে হবে

    উত্তরমুছুন
  4. কোচবিহার থেকে কিসে করে যাবো

    উত্তরমুছুন

  5. কোচবিহার জেলা থেকে কিসে করে যেতে হবে

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন