রামকেলি ধাম। বৈষ্ণবদের গুপ্ত বৃন্দাবন। গৌড়, মালদা। Ramkeli Dham, Gour Malda.

ভ্রমণ পিপাসু :- রামকেলিধাম। গৌড় । বৈষ্ণবদের গুপ্ত বৃন্দাবন। রূপগোস্বামী, সনাতনগোস্বামী।

রামকেলি/ Ramkeli


 রামকেলির ইতিহাস 500 বছরের বেশি পুরোনো । ইতিহাসে জানা গেছে চৈতন্য মহাপ্রভু নীলচল  যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার সময়ে 1515 খ্রিস্টাব্দে 15ই জুন জৈষ্ঠ সংক্রান্তির দিন তৎকালীন বাংলার রাজধানী এই গৌড়ের রামকেলিতে পদার্পন করেছিলেন, এবং একটি তমাল গাছের নিচে ওপরে যে মন্দিরের ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন সেখানেই 3 দিন জাবত ধ্যান করেছিলেন, এখানেই শ্রী চৈতন্যদেবের পদ যুগলের চিহ্ন আছে। চৈতন্যদেবের আগমনের খবর তখন যায় বাংলার নবাব  আলাউদ্দিন হুসেন শাহ( বাংলার আকবর) এর কাছে। গৌড় ছিলো তখন গোটা বাংলা-বিহার-ওড়িশারার রাজধানী। চৈতন্যদেবের আগমনের খবরেই তার রাজসভার দুজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দবিরখাস ও সাকির মল্লিক কে চৈতন্যদেবের কাছে পাঠান। এই দবির খাস ও সাকির  মল্লিকই পরবর্তীকালে চৈতন্যদেবের কাছ থেকে বৈষ্ণবধর্মে দীক্ষা লাভ করে রূপ গোস্বামী এবং সনাতন গোস্বামী নামে পরিচিতি লাভ করেন । 

মূল মন্দিরের ভিতরে। রামকেলি/ Ramkeli 


চৈতন্যদেবের কথামত  রূপ এবং সনাতন গোস্বামী রামকেলিকে  বৃন্দাবন মতো গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।বৃন্দাবনের মতো এখানেও শ্যাম কুণ্ড, রাধা কুণ্ডের মত অষ্টসখী নির্মাণ করা হয় পুরো রামকেলী জুড়ে। চৈতন্যদেবের আগমনকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এদের উদ্যোগেই পরের বছর থেকেই এই দিনটি থেকে এক মেলার আয়োজন শুরু করেন যেটা এখনো চলে আসছে 2014 সালে এই মেলা 500 বছর অতিক্রম করলো। 7 দিন ব্যাপী চলা এই মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর লোকজনের সমাগম হয়। চৈতন্যদেবের পদচিহ্ন এখনো এখানে রাখা আছে।

মূল মন্দির। main temple Ramkeli. 
পথনির্দেশ:- মালদা শহর থেকে প্রায় 15,16 কি.মি দূরে অবস্থিত এই রামকেলি। মালদা টোটো, ছোটো গাড়ি পেয়ে যাবেন এখানে আসার জন্য। যারা নিজেরা আসবেন তাদের জন্য মালদার সুস্থানী মোড় থেকে বাঁ দিকে বর্ডার রোড বা গৌড় রোড ধরে মোটামোটি প্রায় 10 কি.মি এই রামকেলী ধাম। 2 বছর করোনার জন্য মেলা ভালো ভাবে হয়নি তাই এ বছর জৈষ্ঠ সংক্রান্তির সময়ে এবছর অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন 508 বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন সুপ্রাচীন এই মেলা থেকে। 


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন